Thursday, August 1, 2013

যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী ১৫.০৪.২০১৩ সকাল ১১.১৫ ।




  
যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম

 ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী ১৫.০৪.২০১৩ সকাল ১১.১৫ ।

“আমার দোসর যে জন ওগো তারে কে জানে
একতারা তার দেয় কি সাড়া আমার গানে কে জানে…”
এই আর্তির মধ্যেই ব্যক্তি জীবনের পথ চলা! স্বপ্ন সাধ সাধনায়, ভাব ভাবনা ভালোবাসাকে বিশেষ একজনের সাথে মিলিয়ে নিতে! কারণ কালের মন্দিরায় জীবনের বোল ফোটাতে পরস্পরের সঙ্গ লাগে! তখন সেই সঙ্গতে মন বলে “সব পথ এসে মিলে গেল শেষে তোমারই দুখানি নয়নে-” এই যে পরস্পরের মধ্যে জীবনের পথ খুঁজে পাওয়া, পরস্পরের মধ্যে বেঁচে ওঠা, পরস্পরের মধ্যে সত্য হওয়া; এখানেই প্রেমের সার্থকতা! এখানেই মানুষ চলেছে তার দোসরের খোঁজে, “কবে আমি বাহির হলেম তোমারই গান গেয়ে”! আসলে দোসর খুঁজে পাওয়ার সাধনায় দোসর হয়ে উঠতে পারার শক্তিটাই গুরুত্বপূর্ণ! সেখানেই মুক্তি !!



সুদীপ্ত বি.টেক্.(কম্প্যুটার ইঞ্জীনিয়ারিং ) এর পর ইনফোসিস্ , বেঙ্গালুরুতে 
সফট্ওয়ের ইঞ্জীনিয়ার এর চাকরিতে জএন করে এখানে বলে রাখা ভালো
 সুদীপ্ত , আই.আই.টি , মুম্বাই থেকে ফার্স্ট ক্লাস্ ৯০% মার্ক্স পেয়ে  পাস
 করার পর চাকরিতে জএন করতে বাধ্য হয় । অন্য জায়গায় ভালো চাকরি পেয়েছিল কিন্তু জএন করে নি। ওর বাবা হার্ট এটাকে হঠাত্ মারা জান এবং ছোট ভাইএর পডার দায়িত্ত সাম্লানোর জন্য ও বাধ্য হয় চাকরি করতে  । বাডীতে মা এবং ছোট ভাই ছাডা আর কেউ নেই । অনেক ইচ্ছে ছিল এম.টেক্. এর পর ডক্টরেট্ করবে বলে, কারন ওর টিচিং জব্ পছন্দ ।  সে ইচ্ছেটা ওকে সর্বদা পডাশোনার দিকে টানতো আড্ডা দিতে মোটেই ভালোবাসেনা সুদীপ্ত । ওর প্রজেক্ট্ এর প্রোজেক্ট্ মেনেজার (পি.এম্.)ওকে খুব স্নেহ করেন । ওর বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার সঙ্গে ও কাজ ও খুব নিখুঁৎ ভাবে করে । সুদীপ্তা ওই একি প্রোজেক্ট্ এ , ওর সঙ্গে জয়েন করে একি দিনে। মাইসুরে তিন মাসের ট্রেনিং সেরে দুজনে বেঙ্গালুরুতে জএন করেতাই সুদীপ্তার সঙ্গে আলাপ প্রায় তিন  মাসের ওপোর । সুদীপ্ত র চেহারার আকর্ষনের সঙ্গে ওর প্রখর বুদ্ধি সহজেই নারীর মন আকর্ষন করে ।  এটাই স্বাভাবিক । সুদীপ্তা এন.আই.টী., রাউরকেল্লা থেকে কম্পুটার ইঞ্জীনিয়ারিং এ বি.টেক্.ফার্স্ট ক্লাস্  কাজেই ও খুব ফেলনা নয়। দেখতে খুব সুন্দর । বাবা মা দুজনেই আই.এ.এস্ ওফিসার তাই টাকার ও অভাব নেই ।  তবে আই.আই.টি. পাস আউট্ দের ইনফোসিসে বেশি টাকা মাইনে দেয় । বেঙ্গালোরের ইনফোসিস্ এর নিয়ম অনুযাই মেয়েরা সন্ধ্যে ছটার পর ওফিসে  থাকা মানা ছিল। এসব আমি ২০০৫ সালের কথা বোলছি
সুদীপ্ত এক রকমের যন্ত্রমানবে পরিনত হয়ে গিয়েছিল । ওফিস আর কাজ ছাডা কিছু যানতোনাবেলা ১.৩০ টার সময় সুদীপ্তা ক্যান্টিনে লাঞ্চ খেত সুদীপ্তর সঙ্গে ওখানে গল্প করার ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই কারন ও বিশেষ পাত্তা দিত না  ওসব ব্যাপারে । সর্বদা ঘোরে থাকতো  কি করে অন সাইটে যাবে । তারই  চিন্তায় থাকতো একদিনের কথা, সুদীপ্তা ওর জন্মদিন সেলিব্রেট্ করার জন্য সব বন্ধু বান্ধব্দের ডেকেছিল সুদীপ্ত ও ছিল ।  ফরমালিটি র জন্য পার্টি তে গিয়ে সুদীপ্ত গিফট্ দিয়ে চলে যায়। এটা সুদীপ্তার মনে লাগে । এম্নিতেই সফট্ ওয়ের ইঞ্জীনিয়ার রা পার্টী , আড্ডা শুক্রবার রাতে এবং শনিবারদিন সাধারনতঃ করেথাকে । ওদের মতে সেটারডে নাইট মাস্ট্ বি ডিলাইট্ । সুদীপ্তা মনে দুখঃ পেলেও প্রকাশ করেনি কারন ও সুদীপ্ত কে মনে মনে ভালবাস্তো কিন্তু কখনো প্রকাশ করেনি।
এই অপ্রকাশিত প্রেম এবং বলতে গেলে এক তর্ফা প্রেম যেন অশহ্য লাগে সুদীপ্তার । একদিন সুদীপ্তকে বলে বসে, “তুমি আমাকে এভয়েড্ করছো কেন ? আমি লাঞ্চের সময় ডাকলে তুমি এসে খেয়ে বিল মিটিয়ে চোলে যাও ।  কোন কথা কি তোমার মুখে আসেনা ? আমি তোমার প্রজেক্টে কাজ করছি ! তোমার সঙ্গে একসঙ্গে ট্রেনিং নিলাম ।  অন্য কলিগ্ রা ত এরকম নয় ! তুমি এরকম ডিফারেন্ট্ এটিচ্যুড দেখাও কেন?” এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে সুদিপ্ত র  দিকে তাকালো     উত্তরের অপেক্ষায় ।    
সুদীপ্ত বলে, “আমাকে ভুল বুঝোনা । আমার মাথায় অনেক চিন্তা । আমার মা বিধবা, ভাইএর পডা আমার ওপোর নির্ভর করছে । এই পরিপ্রেক্ষিতে আমার ওপোর সংসারের সব দায়িত্ত , ও তুমি বুঝবেনা !”  তুমি মুখে সোনার চামচ নিয়ে জন্মেছ তাই তুমি কি করে যানবে নিম্নমধ্যবিত্তের জ্বালা জন্ত্রনা ?তোমার বাবা মা আই এ এস্ অফিসার !
 সুদীপ্তা , “এটা কিরকম কথা হল ?”
সুদীপ্ত ,“দেখ আমি এখন সয়নে স্বপনে একটাই কথা ভাবি;  কি করে অন সাইটে যাবো ?”
সুদীপ্তা, “সেত আমিও ভাবি , তুমি একা নও । আমার কি ইচ্ছে করেনা প্রোযেক্টের কাজে ইউ.এস.এ যাই! আমরা হয়তো এক সঙ্গেই যেতে পারি । পি.এম্. একা তোমাকে নয় আমাকেও রেকমেন্ড্ কোরেছেন সে খেয়াল রাখো মিস্টার সুদীপ্ত রায় !”
আমি জানি ।  কংগ্রাচুলেসন্ মিস্ সুদীপ্তা বোস্হেঁসে ফেলে দুজনে ।
 আমি কিন্তু বাবা মাকে তোমার কথা বলেছি ।
 মানে !!
মানে আবার কি ? আমি তোমাকে পছন্দ করি এর বেশি কিছু নয় । 
কিন্তু তুমি তো আমার মতা মত নাও নি !
এই তো নিলাম , আজকে , এখন ! আমি তোমাকে প্রপোস্ করছি। যেটা কিনা ছেলেরা করে সেটা আমি করছি বেহায়ার মত । ইয়েস্ আই এডমায়ার ইউ । কেঁদে ফেললো সুদীপ্তা । তুমি ভালো ছেলে বলে তোমার খুব গর্ব না ? কিন্তু আমি তোমাকে ভালো বাসি .. আই ! আই লাভ্ ইউ !! ফর হেভেন সেক্ ডোন্ট্ লিভ মি । তুমি আমাকে অনেক অপমান করেছো !  আর না !!
সুডীপ্তা র মাথায় হাত দিয়ে বোঝানোর চেস্টা করে সুদীপ্ত । কুল ডাউন বেবি কুল ডাউন । এতো কনফিডেন্স্ ভালোনা । আমার মা কে না জিজ্ঞাসা করে আমি এ বিষয় কিছুই বলতে পারবোনা । আমার এখন কেরিয়ার আছে । কিছুই হতে পারলাম না । বাবার অনেক আশা ছিল আমি ডক্টোরেট্ করি । বাবা গত হয়েছেন মোটে এক বছর তার ধকল এখনো মা সাম্লে উঠতে পারেন নি ।  তুমি জান আমার ভাই এখন সবে ঢুকলো বি.টেক্. এ । ও ,  আই.আই.টি.,  খডগপুরে এডমিসন পেল । আরো ভালো রেসাল্ট্ করতে পারতো ।  আমি ওকে ভালো গাইড্ করতে পারিনি । যানিনা কি করবে ভবিষ্যতে! ওর পডাশুনোর জন্য আমাকে ফিনান্স্ করতে হবে । আমার ওপোর সারা সংসারের সব দায়িত্ত । আমার এখন প্রেম করা সাজে না ।আমাকে বুঝতে চেস্টা কর ।  
  আমি সব জেনেই তোমাকে ভালোবেসেছি ।  এখন তো বলছিনা! আর কি বললে, “বেবি!” আমি “বেবি !!”  তুমি নিজেকে কি মনে কর ? এ্যাঁ !! দেখাচ্ছি তোমার মজা । এই বলে চট্ করে জডিয়ে ধরে চকাস করে চুমু খায় ঠোঁটে ।  আমি তোমার কাছ থেকে এই টুকু কি আশা করি না ,“আই লাভ্ ইউ টু সুদীপ্তা” শুনতে !!  ছেলেদের চোখ দেখলেই মেয়েরা বুঝতে পারে মোসাই । তুমি জতোই আমাকে শুরু থেকে এভোয়েড্ কর আমি জানি তুমি আমাকেই মনে মনে পছন্দ কর । আই এম্ মাচ কনফিডেন্ট এবাউট দ্যাট্। তাই আজ তার প্রাইজ্ দিলাম। কিরম লাগলো ? বলবে না ?
এতো কনফিডেন্স্ ভালোনা । তবে হ্যাঁ,  যদি কোন দিন বিয়ে করি তবে আই প্রমিস্ , আই সুদীপ্ত রায়  do herby testify, and give public notice of the covenant of marriage which we have entered into with each other in the presence of God and witnesses: based solely on the authority of God as found in His Holy word, The Bible  ইন দি নেম অফ গড্ এক্সেপ্ট্ মিস্ সুদীপ্তা বোস এস মাই ওয়াইফ্এই বোলে সুদীপ্ত , সুদীপ্তা কে জোডিয়ে ধোরে গোভির ভাবে চুমু খায় । সকলের হাত তালিতে ওদের ঘোর ভাঙ্গে ।
সুদীপ্তা লজ্জায় মাথা নিচু করে । অদিতী,সুকন্যা,প্রিয়ঙ্কা, গুলশন,আবীর,ভেঙ্কাটেশ্ সকলে খুশিতে গান গাইতে আরম্ভ করে। ৫ পএন্ট্ স্পিকার লাগিয়ে ডিজিটাল হোম থিএটারে গান বাজিয়ে নাচ শুরু হয় ওদের মধ্যেখানে রেখে । এর পর সুদীপ্ত সুদীপ্তা দুজনেই নাচতে শুরু করে গানের তালে তালে। আদিত্য- সুকন্যা সালসা ডেন্স্ আরম্ভ করে দর্শকদের দৃষ্টী আকর্ষন করে। পরে প্রিয়ঙ্কা-গুলশন ব্রাজিলিয়ান সাম্ভা ডেন্স্ দেখায়। সকলে সারাক্ষন এঞ্জয় করে ।
সেদিন পার্টি হয় রাত ৯.০০ টা তে শেষ হয় ১২ টাতে। আজ সুদীপ্ত-সুদীপ্তা দুজনে হোষ্ট আর প্রজেক্ট এর সব কোলিগ্ রা খোশ্ মেজাজে মুর্গা মসাল্লাম্,কোপ্তা,বাটার তন্দুর,প্রন্ পকোডা,বাটার স্কচ্ আইস্ ক্রিম্ পরে কিছু হট্ ড্রিঙ্ক নিয়ে একটু বেসামাল হয়। ওটা আই.টী. প্রফেসন্ এ চলে। কিছু বলার নেই।  মেনে নিতেই হয় ।
সুদীপ্ত কে আজ যেন খুব চারমিং লাগছিল ঠিক সুদীপ্তাকে ও তাই । ওরা নিজেদের মধ্যে কিছু বলছিল যার দিকে কারুর নজর ছিলোনা । সকলে মসগুল নিজেদের পার্টনার কে নিয়ে।
সুদীপ্ত বলে আমি এটা ঠিক করলাম না আমার মা জানলে দুখঃ পাবেন। ঝোঁকের মাথায় তোমাকে কিস্ কোরতে গিয়ে সব গন্ডগোল হয়ে গেল । আমি কি জবাব দোব মাকে,ভাইকে? ওরা আমাকে খুব ভর্সা করে । এটা মোটেই ঠিক হলনা অনুশোচনায় ভেঙ্গে পডে সুদীপ্ত ।
তুমি একা নও সুদীপ্ত ও আমারো ভাই । তুমি কি করে ভুলে গেলে আমি কিছু না বুঝে আমার ডিসিসন নিয়েছি বলে ? আমি সব জানি ম্যান্ । কিছু ভেবোনাআমি বাবা মাকে ডিটেল সব কথা বলেছি। বাবা আমাকে অনেক স্বাধিনতা দিয়েছেন । মা বাবা নিজেরাই মুসৌরিতে আই.এ.এস্ ট্রেনিং ইন্সটিট্যুটে গলা জডা জডি করে প্রেম করেন । তার পর বিয়ে সেরে ফেলেন বাবা মাকে না জানিয়েপরে অবশ্য দু পক্ষ রাজি হয়ে বিয়ের আয়োজন করেন। তুমি যানো , আমার মা বাবা জাত ফাত মানেন না ,এমনকি ধর্ম ফর্ম মানেন না। ওঁরা এক্টাই জাত যানেন ,ওরা আই এ এস্ ! ওটাই ওঁদের গীতা,বাইবেল,গুরুগ্রন্থ আর কোরান !!  দুজনে দু জায়গায় সাব কালেক্টার ছিলেন । দেখা করার জন্য শনিবার রাতে পালাতেন হেড কোয়ার্টার ছেডে । অবশ্য ওনাদের কালেক্টার যান্তেন সে কথা। বাবা আমাকে সব বলেছেন। খুব মজার দিন সব ওনাদের কেটেছে । ঠিক আছে তুমি তোমার মাকে জিজ্ঞাসা কর। আমার কোন আপত্তি নেই। আমি কনফিডেন্ট্ উনি মত দেবেন। আমিত কিছু ভুল করিনি । পারলে না হয় পা জোডিয়ে বলবো, “মা, মাগো আপনার কচি ছেলেটাকে নুন লঙ্কা মাখিয়ে খাবো” বলে হেন্সে ফেলে ।
কি বলছো জা তা ! তোমার কি মাথা খারাপ হল?  মা কে আমি চিনি । মা রাজি হবেন না । আমার ভাই কি ভাববে বলত ? এতো তাডা কিসের ? একটু সবুর কর । আমি তো পালাচ্ছিনা !
পালাতে কে দিচ্ছে মসাই । তবে আমার তাডা আছে । আমার পেছনে শকুনের চোখ আছে । তুমি বুঝবেনা সে কথা । বলার ও প্রয়োজন মনে করি না ।
সে আবার কি কথাযদি বলতে না চাও বোলোনা । আই ডোন্ট মাইন্ড্ ।
তুমি আমাদের পি .এম্.কে দেখেছো ।  উনি কিরকম ছুঁক ছুঁক করেন  আমাকে দেখে! যেন গিলে খাবে !! বিচ্ছিরি !!! ইরেসিসস্টিবিল ।
ওটা তোমার ভুল ধারনা । নাও হতে পারে ।
ঊনি তোমাকে তাডা হুডো করে ইউ.এস .এ যাওয়ার রেকমেন্ড করেছেন আমার থেকে তোমাকে দুরে সরানোর জন্য তুমি জান কিছু ! মাথায় ঢুক্লো কিছু !!
মোটেই নয় । ওটা তোমার ভুল ধারনা । আমি প্রজেক্ট্ এর জন্য বেশি সময় দি । সকলে যানে  পি.এম. , এস. পি.এম. এবং অন্য সকলে । সেই কারনে আমাকে পাঠাচ্ছে । এতে আশ্চর্‍্য্য হওয়ার কি আছে ?
আমি অস্বিকার করছিনা তবে আমার কথাটা সত্যি কিনা,  প্রিয়ঙ্কা বলবে তোমাকে । ওই আমাকে বলে সে সব কথা ।
দেখ এ সব বাজে মেয়েলি কথাতে আমি মোটেই  ইন্তারেস্টেড নই । বকবাস্ । জাস্ট্ গসিপ্ ।
ও কে । কাল ভিসার জন্য রেডি হও । আমাদের দুজনকে নিউ জার্শি তে পাঠাচ্ছে ইনফি । ইন ফেক্ট্ আমি বাপিকে আস্তে বলেছি সঙ্গে মা থাকছেন । তোমাকে ওরা দেখতে আসছেন কাল। মানা কোরোনা কিন্তু
মন্ত্র মুগ্ধের মতন সুদীপ্ত বলে ফেললো আচ্ছা।
প্রমিস্
প্রমিস্
দেটস্ লাইক এ গুড বয় । মাই ডার্লিং বলে  হাগ্ করে সুদীপ্তর গলা জোডিয়ে কিস্ করে সুদীপ্তা
সুদীপ্ত চোখ বন্দ কোরে নারীর সান্নিধ্য উপভোগ করছিল । স্বয়ং ভগবান ও বোধহয় এর থেকে নিস্তার পান নি। সুদীপ্ত তো ছেলে মানুষ । কিন্তু আবার মাথাতে চাডা দেয় মা এবং ভাইয়ের প্রতি দায়িত্ববোধ,নিজের কেরিয়ার,ইত্যাদি ভেবে সুদীপ্তার কাছথেকে ছাডাপেতে চায়। ক্ষনিকের আবেগে নিজেকে এরকম ভাবে বিলিয়ে দিতে পারেনা। বিবেক দংশনে নিজেকে সাম্লানোর চেস্টা করে।
পরক্ষনে বলে আজ আমাকে জেতে হবে , বাই ...
কিছু বোঝার আগেই সুদীপ্ত হাঁটা দেয় ইনফোসিটির হেরিটেজ্ বিল্ডিং এ ।  ওখানে ইনফীর  চেয়ারম্যান নারায়ানাস্বামী, নন্দন নীল্কার্নী ,পাই  ইত্যাদী টপ্ বস্ রা বসেন । তবে এঁদেরকাছ থেকে  একটা বড জিনিস সেখার আছে এঁনারা কেউ নিজেদের বস্ বলে  বলেন না বরং কলিগ্ বলেন। সুদীপ্ত ওখান হয়ে  বিল্ডিং নাম্বার ৪২ তে নিজের অফিসে চলে জায়।
সুদীপ্তা একটা সুইমিং পুলের ধারে বোসে জলে নানা রঙের  মাছ দেখছিলো । নানা রঙের মাছ মঙ্কে শান্ত করে । বেঙ্গালুরুর ইনফোসিটির ভেতোরটা এতো সুন্দোর পরিবেশ আর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন মনে হয়না ওটা ভারৎবর্ষের মধ্যে অবস্থিত বলে মনে হয় যেন আমেরিকাতে আছি। একটা কাগজের টুক্র কোথাউ কেউ খুঁজে পাবেনা। কেম্পাসের ভেতর গাডী চালানো নিষেধ । সাইকেলে জেতে হয় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। ধুম্রপান নিষেধ । “স্মোকিং স্টৃক্লি প্রহিবিটেড্” বলে চারিদিকে লেখা । মাঝে মধ্যে ছোট ছোট গার্ডেন,লন্ , সুন্দর ডেকোরাটিভ ওর্কিড্স । একটা পরিচ্ছন্ন ইকোফ্রেন্ডলি মন মুগ্ধকর পরিবেশ । না দেখলে বোঝা জায়না ।
সুদীপ্ত সুদীপ্তার ভিসা ইন্টারভীউ চেন্নাই তে ৭ দিন পর । চেন্নাইতে ভিসা ইন্টারভীউ তে নানান প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়। তার স্বঠিক জবাব দিতে হয় ওদের  ।দুজনের ইন্টারভ্যু আলাদা আলাদা ভাবে হয় ।  সে সব সেরে ওরা দুজনেই কৃতকার্জ্য হয় । পাস্পোর্ট ভিসা স্টাম্পিং সেরে কোম্পানীর থেকে ওখানে থাকা,ফ্লাইটের টিকিট, সঙ্গে ২০,০০০ ডলার। লুফথান্সা ফ্লাইটের টিকিট আগাম কোম্পানি থেকে ওদের দুজন কেই দেওয়া হল। ওরা সঙ্গে  গরম জামা কাপোড, অন্যান্ন  শীত বস্ত্র এবং আনুসঙ্গিক যা যা নেওয়ার সব কিনে নেয় । এর মধ্যে সুদীপ্তার মা বাবা এসে ঘুরে গিয়েছেন । অনিচ্ছাসত্বেও সুদীপ্ত ওদের সঙ্গে দেখা করে । ফরমালি দেখা করতে বাধ্য হয়।
যাওয়ার আগে ওরা দুজনে তীরুপতি তীরুমালা ভেঙ্কেটেস্বরম্ মন্দীর দর্শনে যায় । বেঙ্গালুরু থেকে রাত ৯ টার সময় আন্ধ্র প্রদেশ টুরিষ্ট এর লাক্সারী ভল্ভো এ.সী. বাস ছাডে পৌঁছোয় রাত ৩ টের সময় তীরুপতি তে । ওখানেই গেস্ট্ হাউসের ব্যাবস্থা থাকে গরম জল এ স্নানের জন্য । স্নান সেরে ফ্রেশ হয়ে  তীরুমালা পাহাডের ওপোর যাত্রা । তীরুপতি থেকে তীরুমালা ২২ কিলোমিটার অন্য বাসে যেতে হয়। ভোর বেলার দর্শন ভী.আই.পীদের জন্য খুব কম সময় লাগে এবং লাইন ও ছোট থাকে।  বেশ থান্ডা লাগে ওই সময় তীরুমালা পাহাডের ওপোরটা। প্রায় এক ঘন্টা লাগে লাইনে আস্তে আস্তে আঙ্কা বাঙ্কা পথে মন্দীরের ভেতোর প্রবেশ করতে । তারপর বালাজীর দর্শন অপূর্ব । চাপ চাপ সোনা । কস্টি পাথরের মুর্ত্তি । সোনার মুকুট , সোনার হার
 ইত্যাদি।  ৩০সেকেন্ডের মধ্যে দর্শন সারতে হয় নাহলে গোবিন্দা গোবিন্দা  বলে ঠ্যালা মারবে পেছোন থেকে টেম্পল পুলিশ্ । এরপর তীরুপতির  বিখ্যাত আসোল ঘীএর লাড্ডু জনা পিছু দুটো মন্দীর প্রশাসন দেয়। কেউ ইচ্ছে করলে আরো লাড্ডু কিনতে পারেন কাউন্টার থেকে । এরপর পদ্মাবতীর দর্শন । পদ্মাবতী স্বয়ং মা লক্ষী ঠাকুর । অপুর্ব লাগে ওখানে দর্শনের সময় । তীরুপতি বালাজীর  সারা মন্দীর সোনা তে মোডা। মন্দীরের চুডা, গাত্র , থাম ইত্যাদি  ।
              দক্ষীন ভারতের  মন্দীরের ভাস্কর্য্য সুন্দর ।  চুডাতে তিনটে সোনার কলশ থাকে এবং ওপরটা ফ্লাট্ একটা ট্রেপিজিয়ামের মত ।
দর্শন সেরে  সুদীপ্তা ফিরে আসে বেঙ্গালুরুতে
 সুদীপ্ত যায় মা আর ছোট ভাইকে দেখতে মামার বাডী ।
বাবার দেহান্তে র পর মাকে মামার বাডীতে থাকতে হয় । মা, যা টাকা পেয়েছিলেন তার ফিক্সড্ ডিপোসিটের সুধেতেই মা চলেন । সুদীপ্ত ভাইয়ের সমস্ত পডার খরচ দেয় হস্টেলে থাকার জন্যযাওয়ার আগে মামা মামির আশীর্বাদ তা ছাডা দক্ষিনেশ্বরে মা কালীর দর্শন আর বেলুডে রামকৃষ্ণ পরমহংস,স্বামিজীর দর্শন সেরে শারদাশ্রমে মায়ের সঙ্গে যায় মায়ের আশির্বাদের জন্য । সব দুদিনের মধ্যে সেরে মায়ের আশির্বাদ নিয়ে ফিরে আসে বেঙ্গালুরু ।                                 ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলনা সুদীপ্তর সেটা বড আফশোষ থেকে গেল। ভাই ফোনে উইশ্ করল। বাডীথেকে যাওয়ার সময় মায়ের চোখ ছল ছল করেমাকে সুদীপ্তার কথা বলে , কিন্তু মা কিছুই বলেন না। সেটাই সুদীপ্তর মনে ধাক্কা লাগে । বোঝে মা খুশি হন নি এতে । সুদীপ্ত ভারাক্রান্ত মনে শুধু বাবাকে মনে করে । আজ বাবা থাকলে হয়ত খুশি হতেন তার ছেলে আমেরিকা যাচ্ছে কম্পানীর প্রজেক্ট এর কাজে । তিন বছরের জন্য ভিসা পায় সুদীপ্ত সুদীপ্তা। সুদীপ্তা এর আগে মা বাবার সঙ্গে পাটেয়া গিয়েছে । ওর কিছুটা অভিজ্ঞতা আছে কিন্তু সুদীপ্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ওর জন্য সব নতুন । মনটাও ভালো নেই দেশ ছেডে যেতে ।
ফিরে কাজে জয়েন করে প্রজেক্টের সব বুঝে নেয় পি.এম্. এর কাছ থেকে । ওখানে গিয়ে কারা রিসিভ করবে কোথায় থাকবে ইত্যাদী .... সুদীপ্তার এক্সাইট্ মেন্টের সিমা নেই । ফোনে বাবা মাকে তীরুপতি বালাজীর দর্শনের গল্প , ভিসা ইন্টারভ্যু এর গল্প...ইত্যাদী...ইত্যাদী ।
যাওয়ার আগের দিন পার্টিতে ওরা দুজনে বন্ধুদের থেকে বিদায় নিল । এয়ারপোর্টে সব বন্ধুরা সি অফ্ করলো । চেক্ ইন সেরে , লাগেজ্ কনভেয়ারে পাঠিয়ে দুজনে বন্ধুদের থেকে বিদায় নিল । আর ওদের দেখা গেলনা ।এর পর সিক্যুরিটী চেক আপ্  সেরে ফাইনালি রান ও্যেতে বাস এয়ারক্রাফট্ অব্ধি নিয়ে যায় । মোবাইল স্বিচ্ অফ্ করে দুজনের নির্ধারিত সিটে চলে যায়। এয়ার হস্টেস্ গতানুগতিক ভাবে পেসেঞ্জারদের সুচনা দেয় ।
বেঙ্গালুরু থেকে বম্বে হয়ে দুবাইতে ঘন্টা খানেক থেকে পাডি দেয় ফ্রাঙ্কফুট্। ভারতিয় সময় রাত ১২ টায় এয়ারক্রাফট্ ছাডে ফ্রাঙ্কফুট্ ।  তারপর আটলান্টিক্ মহাসাগর সারা রাত । সকালে  নেউয়র্ক এর , জন্ এফ কে কেনেডি এয়ারপোর্ট এ  পৌঁছয় এয়ারপোর্ট টারমিনালে অপেখ্যারত দুই বন্ধুকে আলিঙ্গন করেওএল্কাম টু আমেরিকা দুজনে জানায়। থ্যাঙ্ক ইউ প্রতিউত্তরে বলে। সুদিপ্তর এতোদিনে আশা চরিতার্থ হল। দুজনে নিউ জার্সিতে একটা বি এম্ ডব্লু কারে যায় । গেস্ট্ হাউসে পাসা পাসি রুমে দুজনে যেন কাছে থেকেও দূরে! মাইনাস ২৫  টেম্পেরেচার । কাল থেকে নতুন কাজে জএন করছে দুজনে । এক প্রজেক্ট থাকাতে কাছেই থাকবে।
শনিবার রবিবার ওদের ছুটি । নিউজার্সি থেকে নেউ ইয়র্ক কাছেই । তাই বেডাতে বেরয় ।                                 সুদীপ্তর পিস্তুতো ভাই এবং বউদি এখানে মস্ত ডাক্তার । ওঁরা ১৯৬২ থেকে আমেরিকা তে  মানহাটেন স্টৃটে অনেক দিন আছেন । বাডীর নাম মায়ের নামে “শান্তী নিলয়”ওঁদের দেখা করে চলে আসে । সঙ্গে সুদীপ্তা ছিল তাই লজ্যায় বেশিক্ষন থাকেনি ।
হটাৎ নোট্ প্যাডে মেল্ এলার্টঃ- ছোটভাইয়ের ই মেল্ , “SEND IF U CAN, 50K INR BY 15th ”Sushanta .
সুদীপ্ত অপ্রস্তুত মনে করে ফিরতে চাইল । আজকেই ফান্ড্ ট্রান্সফার করতে হবে এচ ডি এফ সি ব্যাঙ্ক থেকে সুশান্তর আকউন্টেসুদীপ্ত কম্পানী থেকে $20,000 আসার সময় পেয়েছিল । ওর কাছে  এখন $17680 আছে ।                    তার থেকে $1000 ডলার অনায়াশে পাঠাতে পারে । ডলারের ভ্যা্লু পডে গিয়েছে এখন  $1= Rs 49.50P আছে ।  যদি আজকের দাম থাকে তাহলে টা৪৯,৫০০হয়েযাবে আর সেটা তিন দিনের মধ্যে পেয়েযাবে নিশ্চই ওর এডমিসন এর জন্য প্রয়োজন । ফান্ড ট্রান্সফার করেই মেল করবে ভাইকে । মনে মনে ভাবলো।
সুদিপ্তা বাবা মার সঙ্গে কথা বলেই যাচ্ছে । ও টের পায় নি সুশান্তর মেল্ এর ব্যাপারে ।

 সুদিপ্ত খুবই বিব্রত ছিল ওর ভাইকে টাকা পাঠানোর জন্য ।ওর দাদা বৌদির সঙ্গে সুদীপ্তাকে কথা বলতে দেখে দাদার সঙ্গে কম্পুটার এর কাছে গেল। ওর ছোট ভাইয়ের খডগপুরের এচ.ডি.এফ.সি ব্যাঙ্কের একাউন্টে ওর দাদার বাডীর কম্পুটার থেকেই $1050 ফান্ড ট্রান্সফার করে পাঠিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হল।
ওর দাদা খুশি হয়ে বললেন, ছোট ভাইকে টাকা পাঠালি ? বাহ্ এটা মনে রাখবি ।এটা বিশেষ দরকার।
ওর কাছে এখন $16,630 অবশিষ্ঠ থাকলো তাতে বাডী ভাডা , খাওয়ার খরচ , গাডীর পেট্রল কত গেলন লাগবে তার আন্দাজ নেই। তবুও মোটা মুটি সব হয়ে যাবে মনেহচ্ছে । সুদীপ্তার কি চিন্তা ! টাকা লাগে দেবে গৌরিসেন ।
সুদীপ্তা হঠাৎ বলে উঠলো, “বাডি যাবে না ?”
হ্যাঁ চল ।
বলে ভাইকে মেল করে দিল “$1050 transferred to ur acct .Pl check after 3 days and confirm me” Dada
দুজনে ফিরে এলো ।
রাত ৯ টার সময় ইন্ডিয়া থেকে ফোন এলো সুদীপ্তার । নিশ্চই ওর বাবা মা কল করছেন !
সুদীপ্তার চোখে মুখে খুসির চেহারা সুদীপ্তর চোখ এঢ়ালোনা । ও অন্যখানে চোলে গেল।
সুদীপ্তা, “এই ! তোমাকে মা ডাকছেন।
কেন ?
জানিনা । শোন ।
আচ্ছা যাচ্ছি ।
মোবাইল টা নিয়ে কল রিসিভ করে, “হ্যালো!বলাতে ওপার থেকে উত্তর এল কেমন আছো?”
ভালো...

No comments:

Post a Comment