Wednesday, January 3, 2024


##সীতাহার তৃতীয় পর্ব##
,©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️
**খুকুদির বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি**
সীতাহার না পরে মা অন্য হার পরে সেদিন বিয়ে বাড়িতে গেলেন কিন্তু মায়ের মনটা সমানে খচ খচ করেই চলেছে! কোথায় গেল হারটা? হারটাকি বাড়িথেকে চুরি গেল! না অন্য কোথাউ ভুলে রেখে দিয়েছেন! মা বলেন ওঁর শাশুড়ির দেওয়া হার। সেই স্মৃতিটা কি মুছে যাবে! বাবাও খুব দুঃখ পেয়েছেন কিন্তু প্রকাশ করছেন না। খুব মন খারাপ হয়েগেলো মায়ের।
এইসময় আমি বলি ও মা আমাদের বাড়িতে তোমার ঘরের এ. সি খারাপ হয়েছিলো। এ.সি সারাতে যে মেকানিক এসেছিলো মনে আছে কবে এসেছিলো সে?
- মা পরক্ষনে বলেন ঠিক বলেছিসতো। আমার মনেই ছিলোনা। দাঁড়া তোর বাবাকে বলি।
বাবা সেই সময় আমাদের মাসতুতো দাদা তন্ময় মুখার্জীর সঙ্গে কি এক বিষয় খুব মনোযোগ সহকারে কথা বলছিলেন। তন্ময়দা নর্থ কলকাতার শ্যামপুকুর থানার ও. সি. মাসির বাড়ি সাউথ সিঁথি তে। বিরাট বনেদি বাড়ি। অনেক বছরের পুরোনো। ওরা খুব বড় লোক তাই ওদের ব্যাপার স্যাপার আলাদা। বেশ জমিদারী ভাব আছে।
মা ক্রমে বাবার কাছে এসে বলেন শুনছো।
- হ্যাঁ শুনছি। আবার কি হল?
- আবার কিছু হয়নি। যেটা হয়েছে তার একটা সূত্র তোমার ছেলে মনে করিয়ে দিয়েছে। আমার মনে ছিলোনা।
- কি সেটা।
- আমার শোবার ঘরের এ. সি. টা খারাপ হয়েছিলো। সেটা সারাতে যে মেকানিক এসেছিলো সেদিন আমি সেই সময় ঠাকুর ঘরের পাশে ঠাকুর ঝির রান্না কিরছিলাম। ঘরে তো কেউ ছিলোনা।
- খুব ভালো করেছ। সেতো এক মাস প্রায় হবে। ঠাকুর ঘর থেকে ফিরে তুমি দেখোনি।
- না লক্ষ্মী ছিল কাছে। আমি লক্ষ্মীকে বলি, আমি যাইরে তোর পিসির রান্না করতে সে মানুষটা পুজোর পর না খেয়ে বসে থাকবে। তুই চোখ রাখিস। ফিরে দেখি এ. সি. চলছে। ঘরে কেউ নেই।
- লক্ষ্মী কোথায় ছিলো?
- জগা ননার কাছে রান্নাঘরে জোগাড় দিচ্ছিলো।
- তন্ময়দা সব শুনছিলেন। বললেন আপনাদের বাড়িতো আমার এলাকায় পড়ে না। তবে কি আমি সিঁথি র ও. সি. কে বলবো তদন্ত করতে? ও ঠিক খুঁজে বার করে দেবে কে নিয়েছে।
- বাবা বললেন না না পুলিশ ঘরে ঢোকাসনা বাবা। আমার মেয়েটাকে ( লক্ষ্মীকে ) হেনস্তা করবে। তারচেয়ে তুই কিছু কর বাবা। দ্যাখ যদি পাওয়া যায়।
- এ. সি. মেকানিকের নাম ঠিকানা ফোন নাম্বার দাও তাহলে।
- হ্যাঁ তা পাওয়া যাবে। তবে ঠিকানাতো জানিনা। দেখি বলে বাবা ফোনটার কল লিস্ট সার্চ করেন
****খুকুদির বিবাহ লগ্ন এবং বিবাহ ভোজ ****
এরমধ্যে বর এসেগেল। উলু ধ্বনি আর শঙ্খ বেজে উঠলো। সব্বাই ঐ বরের গাড়ির দিকে ছুটলো। মা বরণ ডালা নিয়ে গেলেন বরকে বরণ করতে। বাবা, তন্ময়দা গেলেন বরের গাড়ির কাছে বরকে ঘরে নিয়ে আসতে। দ্বারে প্রবেশ করার সময় ওপর থেকে পুষ্প বৃষ্টি হল। চারিদিকে রজনীগন্ধার সুগন্ধ। প্রবেশ দ্বার থেকে সারা ঘর নানা ফুল দিয়ে সাজানো। সত্যি খুব যাঁক যমকে খুকুদির বিয়ে হচ্ছে। হবে নাইবা কেন ! ওরা প্রচুর টাকার মালিক। মনটাও ওদের বিশাল। সমস্ত আত্মীয় স্বজনকে নিমন্ত্রণ করেছে তা ছাড়া পাড়া প্রতিবেশী সকলে। তন্ময়দার অফিসের বন্ধু। ডি. সি. পি নর্থ। তিনিও এসেছেন তন্ময়দার নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে। খাওয়া দাওয়া এলাহী কাণ্ড।
***খুকুদির বিয়ের ভোজ***
স্টার্টার :-
অতিথিদের স্টার্টার দিয়ে স্বাগত জানানো হল । স্টার্টারে খুব বেশি বৈচিত্র্য রাখা হয়নি । তাই এই ঠান্ডায় বিয়েতে, গরম ডাম্পলিং, টিক্কা, ফিশ ফ্রাই, মিনি সামোসা, কাবাব, কাটলেট, চিলি পটেটো, স্প্রিং রোল, ডরাই মাঞ্চুরিয়ান আছে।এ ছাড়া ফুচকা, চাট কর্নার, দই-ভল্লা তো আছেই। কি নেই!
শীত কালে বিয়ের মরসুমের স্যুপ :-
বিয়ের মেনুতে গরম স্যুপ রাখতেই হয় । মটর-পুদিনা স্যুপ, টমেটো স্যুপ, ভেজ স্যুপ, কর্ন স্যুপ, ইতালিয়ান স্যুপ, চিকেন স্যুপ, পনির স্যুপ এছাড়াও, হট চকলেট, জাফরানি চা এবং কফির বিকল্প তো আছেই। কাশ্মীরি কাবা।
ভেজ আইটেম-
ভেজের জন্য অনেক অপশন রাখতে হয়েছে কারণ খুকুদির অনেক মারোয়াড়ি অতিথি কাস্টমার আছেন। তাদের জন্য আলু ভাজি, জিরা আলু, মেথি আলু, মাশরুম, মেথি মালাই, বাঁধাকপি মুসাল্লাম এবং মিক্সড ভেজ রাখা আছে। । অন্যদিকে তরকারিতে পনির মেথি মালাই, শাহি পনির, পনির কোরমা, পনির আচারি, কড়াই পনির, পনির লাবদার, মালাই কোফতা, ছোলে এবং ছানা রাওয়াল পিন্ডি। চলে বটুরে। ঢোকলা গুজুদের জন্য।
ননভেজ আইটেম- নন-ভেজ আইটেম যেমন বাটার চিকেন, চিকেন রেজালা, বিরিয়ানি আমার সবচেয়ে বেশি পছন্দের। এছাড়াও, তাওয়া চিকেন, মটন দো পেঁয়াজ ফিশ কারি, মটন বিরিয়ানি এবং চিকেন বিরিয়ানি তো আছেই। ভেটকির বাটার ফ্রাই, চিংডির মালাইকারি,ইলিশ মাছের পাতুরি, সর্ষে ইলিশ, তোপসে ফ্রাই, পাবদা মাছের ঝাল। কি নেই?
মিষ্টি :- গোলাপ জামুন, রসগোল্লা, শক্তিগড়ের ল্যাংচা, মনোহরা, শাঁখ সন্দেশ, দরবেশ, মিহিদানা, সীতাভোগ,মিষ্টি দই,
চাটনি পাঁপড়,
পান :- বেনারসী পান, মিষ্টি পান, জর্দা পান।
চিত্র ঋন :- ইন্টারনেট।
All reactions:
Madhabi Chakraborty and Narmada Choudhury
2
Like
Comment
Send

No comments:

Post a Comment