Tuesday, June 9, 2015

অনুগল্প পকেটমার ঃ ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ২০.০৫.২০১৫ / সকাল ০৯.০১



     অনুগল্প পকেটমার ঃ 
ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ২০.০৫.২০১৫ / সকাল ০৯.০১ 

হাওড়া স্টেশনের কোন এক ওয়েটিং রুম । সময় ভোর ছটা । ৭০ এর দশকের কোন এক সময় ।...
 
হাওড়া স্টেশনে পুরী এক্সপ্রেসে আমার দিদি জামাইবাবু আসবেন । ওনারা পুরী বেড়াতে গিয়েছেন। আমি হাওড়া স্টেশন এ প্ল্যাটফর্ম টিকিট কিনে অপেক্ষা করছি সেই ভোর ৫ টা থেকে । প্ল্যাটফর্মে আসার পর এনাউন্স হল গাড়ী এক ঘণ্টা লেট আছে। মানে সেই সকাল ৬ টার সময় আসবে । অগত্যা ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই কারন বাইরে মুশল ধারে বৃষ্টি পড়ছে। ওয়েটিং রুমেই কুকুর গুলোর উৎপাত। ঘেউ ঘেউ চিৎকার মাঝে মাঝে ভিখিরিদের আনাগোনা।এতবড় রেল স্টেশনে কোন সিস্টেম নেই। হটাত এক ভদ্রলোক এসে আমার পাসে বসে জিজ্ঞাসা করলেন দাদা ম্যাচিস হবে ?
আমি মনে মনে বিরক্ত হয়ে বলি , “না আমি সিগারেট খাই না” ও আচ্ছা বলে উঠে যান ভদ্রলোক । ভদ্রলোক দ্রুত পায়ে এগিয়ে উধাও হন ।
 
হটাত আমার কেমন সন্দেহ হয় । পেছনের পকেটে হাত দিয়ে দেখি আমার পার্সটা নেই। আমি টাইট জিন্স পরেছিলাম তাই পার্সটা বোধ হয় বাইরে দেখা যাচ্ছিল । আমি খেয়াল রাখিনি। আমি দৌড়ে লোকটিকে সনাক্ত করার চেষ্টা করি। পরে না পেয়ে জি.আর.পি কে বলি লোকটির বর্ণনা দিয়ে। আমার কথায় ওরা বেশ মজা পায় । হিন্দি মেশান বাংলায় বলেও এতক্ষণে নাস্তা করছে আপনার টাকায় । হামি কি করবো” বলে খৈনি দলতে লাগলো হাতের চেটোয়।
মনে মনে ভাবি আমাদের সরকার এদের মাইনে দিয়ে রেখেছে লোকে বিপদে পড়লে বিদ্রূপ করতে।
 
লোকদের দৌড় দৌড়ীতে আমি বুঝি ট্রেন ইন করছে প্ল্যাটফর্মে ।
 
দিদি জামাইবাবুকে দেখে ধাতস্থ হই । আমার পার্স চুরি যাওয়ার কথা বলি জামাইবাবুকে।
 
জামাইবাবু বলেন তোরা যা আমি আসছি ।
 
হাওড়ার পুলিশ সুপার যে জামাইবাবুর ক্লাসমেট তা দিদির কাছথেকে জানি ।
 
সেই জি.আর.পি. কন্সটেবেল টি আসে আমার কাছে । বলে, “আগে বলবেন ত । হামি কি করে জানবো আপনি সাহেবের পেহচান আছেন। উ হারামি বিশ টাকার খেয়ে লিয়েছে । এই লিন আপনার পার্স । ঠিক আছে কিনা গুনে দেখুন
 
আমি মনে মনে ভাবি আসল হারামিটা কে ........?

No comments:

Post a Comment