মুখাগ্নি
ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী
(তৃতীয় পর্ব)
ব্যাপারটা হচ্ছে ভগবানের মদের দোকানেই প্ল্যানটা হয়েছিল তবে সবাই কোড
ল্যাংগুয়েজে কথা বলছিল l ভগবান কিছুটা ঠাওর করতে পারে l
এ. সি. পি. চক্রবর্তী কাল বিলম্ব না করে দলবল নিয়ে বনগাঁ রওনা দিলেন l বনগাঁ পৌঁছোতে পৌঁছোতে রাত ১০ টা l
বনগাঁ র বেশ কিছু নিষিদ্ধ স্থান লোকাল পুলিশের সঙ্গে ছান বীণ শুরু করতে আরম্ভ করেন l হঠাৎ এক বন্দ গুদাম ঘর থেকে পুরুষ কণ্ঠে ক্ষীণ আওয়াজ শুনে এ. সি. পি. চক্রবর্তী থমকে দাঁড়ান ওনার সন্দেহ হয় এখানেই ওরা আছে l সকলে একদম পিন ড্রপ সাইলেন্ট l গোটা ঘরটা ঘিরে ধরল কিন্তু এ কি বাইরে ওদের লক্ষ করে গুলি কে ছুঁড়ল? একটা গুলি ইন্সপেক্টর শশাঙ্কর কানের পাস দিয়ে চলে গেল l সকলে পজিশন নিয়ে ছুটল হাতে পিস্তল সমেত যে দিক থেকে গুলি এসেছিলো সেইদিকে l ছেলেরা সম্ভবত এই গলির মধ্যে , পুলিশ তাদের পিছু নিয়ে ছুটতে লাগলো l এ. সি. পি. র নির্দেশ ছেলেদের আটকাতে পায়ে গুলি করতে পারো কিন্তু তার ওপরে নয় l ঠিক সেই সময় একটা গুলি এক কনস্টেবলের হাতে লাগে l কনস্টেবলটি যন্ত্রণায় মাটিতে পড়ে যায় l
এ. সি. পি চক্রবর্তী ধৈর্য হারালেন সামনে ছেলেটিকে ফায়ার করলেন l ঐ সময় অন্য ছেলেরা পুলিশকে গুলি চালায় l পুলিশ বাধ্য হয়ে ঐ ছেলেদের ওপর গুলি করে l চারিদিক থেকে পুলিশের আক্রমণে তিনটি ছেলেই গুলি বিদ্ধ হয়ে মাটিতে টলে পড়ে l
চারজনকে সঙ্গে সঙ্গে এম্বুলেন্স ডাকিয়ে বনগাঁ সরকারি হাঁসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু ওখানে ডিউটিতে থাকা ডাক্তার ওদের চারজনকেই মৃত ঘোষণা করেন l
সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ছুটে আসে l এ. সি. পি. চক্রবর্তী নানা প্রশ্ন বানে জর্জরিত হয়ে বলেন পুলিশকে গুলি চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালাতে বাধ্য হয় l তাতে প্রতিপক্ষ মারা গেলে পুলিশ এনকাউন্টার করেছে বলে বলা হয় কেন ? সংবাদ মাধ্যম সেটাই প্রকারান্তরে মানুষকে বোঝাতে চায় l পুলিশ কতটা অসহায় হলে বাধ্য হয় গুলি চালাতে সেটা বোঝেনা l পুলিশ ও মানুষ, তাদেরও পুত্র সন্তান আছে তাই পরিস্থিতি বাধ্য না করলে কখনোই কোন পুলিশ অধিকারী গুলি চালান না l
ডেড বডিগুলো কি সনাক্ত করা হয়েছে? তাদের পরিচয় কি? সাম্বাদিকরা প্রশ্ন করেন l
এ. সি. পি বলেন আপনারা কি বলছেন পুলিশ চিত্রগুপ্তর খাতা খুলে বসে আছে? কে মারা গেলো সঙ্গে সঙ্গে তাদের নাম ঠিকানা বলে দেবেন! আশ্চর্য!!
-না না তা বলছিনা l
- তবে কি বলছেন?
-আমাদের কাজ করতে দিন l অহেতুক অবাস্তব প্রশ্ন করবেন না l বডি পোষ্ট মর্টম করতে পাঠাতে হবে l আমাদের কাজ করতে দিন প্লিজ l
-বুম নিয়ে টি ভি. র রিপোর্টাররা ঐ ছেলেদের এবং উপস্থিত পুলিশ অধিকারীদের ছবি তুলতে চাইলেন কিন্তু মুখ এবং বডি সম্পূর্ণ ঢাকা ছিল তাই কিছুই বোঝা যাচ্ছিলোনা ll
........
পরের দিন বডি পোষ্ট মর্টম হওয়ার পর কলকাতা নিয়ে এম্বুলেন্স যায় l বডি আইডেন্টিফাই করার জন্য ফরেনসিক এক্সপার্টদের ডাকা হয় l তারা ড়ি এন এ টেস্ট এর জন্য স্যাম্পল সংগ্রহ করে নির্ধারিত পদ্ধতি অবলম্বন করে l তিন জনের ঠিকানা অপরাধীদের তালিকা থেকে পাওয়া যায় l তারমধ্যে জন সুপারি কিলার বলে রেকর্ড আছে l খলিল আর আসলাম ছোট ছোট অপরাধ করে সাজা ভুগেছে l আসলাম মাদক চক্রে জড়িত খবর আছে পুলিশের কাছে কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ওকে ধরা যাচ্ছিলোনা l চতুর্থ ছেলেটি ভদ্র ঘরের ছেলে বলে মনে হচ্ছে l কিন্তু তার আইডেন্টিটি পাওয়া যাচ্ছেনা l. এ.সি. পি. চক্রবর্তী কে ভাবিয়ে তুলছে l
ক্রমশ-
No comments:
Post a Comment