পিঞ্জরে অচিন পাখি
___________________
___________________
অন্তরা ঘোষ। পর্ব- ২
দীপ্ত গ্লাসটা হাতে নিয়ে বোধহয় ধন্যবাদ দিতে গিয়েছিল ...
কিন্তু কিছু বলার আগেই সেই রহস্যময়ী নারী ত্রস্ত হরিনীর মতো উঠোন পেরিয়ে ঘরের দিকে চলে গেল। মাথায় ঘোমটা থাকায় তার মুখটাও দেখতে পেল না দীপ্ত। হঠাৎ সন্তুর বাবার দিকে চোখ পড়ায় দীপ্ত লক্ষ্য করল সহজ সরল অমায়িক মানুষটার চোখের চাউনি কেমন যেন কঠিন হয়ে উঠেছে। রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে সন্তুর মাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, "আরে এ সন্তু কি মা ...
ইধার আও তো জারা --
দেখো মেহমান লোগো কো কেয়া চাহিয়ে.. মুঝে ভি থোড়া সবজি দো"
সন্তুর মা সবজি নিয়ে যখন ওর বাবাকে দিচ্ছে তখন ওর বাবা ফিস ফিস গলায় বলল, বিটিয়া কো সামালকে রাখো.. মেহেমান কা সামনে না আয়ে তো আচ্ছা .."
সন্তুর মা কলের পুতুলের মত মাথা নাড়লো।
দীপ্ত'র চোখ খেতে খেতে বারবার অজান্তেই চলে যাচ্ছে উঠোন পেরিয়ে ঘর গুলোর দিকে।
খেয়ে উঠে ওরা চারজনেই ওদের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা ঘরে এল। সায়ন, অনিরুদ্ধ, সন্তু খাটিয়ায় বডি ফেলে দিল। দীপ্ত আনমনে সিগারেট খেতে খেতে ভাবতে লাগল কিছুক্ষন আগের দেখা মেয়েটির কথা।
কিন্তু কিছু বলার আগেই সেই রহস্যময়ী নারী ত্রস্ত হরিনীর মতো উঠোন পেরিয়ে ঘরের দিকে চলে গেল। মাথায় ঘোমটা থাকায় তার মুখটাও দেখতে পেল না দীপ্ত। হঠাৎ সন্তুর বাবার দিকে চোখ পড়ায় দীপ্ত লক্ষ্য করল সহজ সরল অমায়িক মানুষটার চোখের চাউনি কেমন যেন কঠিন হয়ে উঠেছে। রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে সন্তুর মাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, "আরে এ সন্তু কি মা ...
ইধার আও তো জারা --
দেখো মেহমান লোগো কো কেয়া চাহিয়ে.. মুঝে ভি থোড়া সবজি দো"
সন্তুর মা সবজি নিয়ে যখন ওর বাবাকে দিচ্ছে তখন ওর বাবা ফিস ফিস গলায় বলল, বিটিয়া কো সামালকে রাখো.. মেহেমান কা সামনে না আয়ে তো আচ্ছা .."
সন্তুর মা কলের পুতুলের মত মাথা নাড়লো।
দীপ্ত'র চোখ খেতে খেতে বারবার অজান্তেই চলে যাচ্ছে উঠোন পেরিয়ে ঘর গুলোর দিকে।
খেয়ে উঠে ওরা চারজনেই ওদের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা ঘরে এল। সায়ন, অনিরুদ্ধ, সন্তু খাটিয়ায় বডি ফেলে দিল। দীপ্ত আনমনে সিগারেট খেতে খেতে ভাবতে লাগল কিছুক্ষন আগের দেখা মেয়েটির কথা।
বিকেলে চারজনে গ্রামে ঘুরতে বেরলো। গ্রামের মেঠোপথে হাঁটতে হাঁটতে দেখল , এখানেপাকা বাড়ি কদাচিৎ। বেশিরভাগই মাটির বাড়ি। টালি বা খড়ের চাল।প্রত্যেকের বাড়ির সামনেই গরু বাঁধা আছে। সন্তুদের ঘরেও দীপ্তরা দেখেছে চারটে হৃষ্টপুষ্ট গরু গোয়ালে রাখা।
কিছুটা যেতেই দীপ্তরা টের পেল গ্রামে সন্তুদের বেশ সম্মান আছে। উচ্চ বংশীয় ব্রাহ্মণ বলে আলাদা কদর। কেননা গ্রামে ব্রাহ্মণ পরিবার খুব একটা বেশি নেই। রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় যেই যাচ্ছে পিঠটাকে ধনুকের মতো বেঁকিয়ে একটু ঝুঁকে সন্তুকে বলছে "পায়ে লাগু ঠাকুর"। সন্তুও গম্ভীর মুখে জবাব দিচ্ছে, "জিতে রহো"।
সন্তুর সাথে সাথে দীপ্তদেরও সকলে বলছে 'পায়ে লাগু'। কত সহজ সরল মানুষ এরা।ব্যাপারটা দীপ্তরা বেশ উপভোগ করছে। অনিরুদ্ধ বলে উঠলো, এখানে তো তোদের দারুন সম্মান 'রে সন্তু ! "
সন্তু বলল, হ্যাঁরে গ্রামের লোকেরা বাবাকে খুব সম্মান করে।
কথা বলতে বলতে ওরা গ্রামের শেষে -- মাঠের দিকে চলে এসেছিল। কত ময়ূর মাঠে ঘুরছে খেলছে , পেখম তুলে নাচছে, মাঝে মাঝে কি যেন খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে। এতদিন দীপ্তরা চিড়িয়াখানায় ময়ূর দেখেছিল। দীপ্তর মনে হত খাঁচায় বন্দি প্রাণীরা কেমন যেন উদাস.. ভিতর ভিতর ছটফট করে মুক্তির জন্য। এখানে ময়ূর গুলোকে দেখে মনে হল কত অনাবিল আনন্দে আছে ওরা.. স্বাধীনতার আনন্দ , শৃংখল মুক্তির আনন্দ.. সত্যিই বন্যেরা প্রকৃতিতেই সুন্দর।
সন্ধ্যে নামতেই দীপ্তরা লক্ষ্য করল গোটা গ্রামটা যেন অন্ধকারে ডুবে গেল। সন্তুদের ঘরেও কোনো আলো জ্বলছে না। সন্তুকে জিজ্ঞেস করে ওরা জানতে পারল যে এই গ্রামে এখনও ইলেকট্রিসিটি পৌঁছয়নি। অবাক হল ওরা !
সত্যি গ্রামের লোকেরা কত দিক থেকেই বঞ্চিত !
সব ঘরে সন্তুর বাবা লন্ঠন ও বড় বড় হ্যাজাক জ্বালিয়ে দিয়েছে।
সন্ধ্যেবেলা সন্তুর মা বড় কাসার খালাতে পাঁচ কাপ গরম দুধের চা আর পিয়াজি নিয়ে এল সন্তুর বাবা ও সন্তুদের জন্য। সন্তুর বাবা মানুষটা খুব চা খেতে খুব ভালোবাসেন। আধ ঘন্টা অন্তর অন্তর চা চাই।
এক কথায় বলতে গেলে বলা যায়
'চা খোর'
যেহেতু ঘরে গরু আছে তাই খাঁটি দুধের চা খায় ওরা। এতোটুকু জল থাকে না চা'তে। দশ মিনিটের মধ্যে একথালা পিয়াজি খেয়ে ফেলল ওরা। এখানে এসে থেকে দীপ্তদের সকলেরই খুব খিদে পাচ্ছে। হয়তো জলের জন্য হতে পারে। কিংবা হয়তো ব্যাঙ মুত্র যুক্ত জলের সুফল।
কিছুটা যেতেই দীপ্তরা টের পেল গ্রামে সন্তুদের বেশ সম্মান আছে। উচ্চ বংশীয় ব্রাহ্মণ বলে আলাদা কদর। কেননা গ্রামে ব্রাহ্মণ পরিবার খুব একটা বেশি নেই। রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় যেই যাচ্ছে পিঠটাকে ধনুকের মতো বেঁকিয়ে একটু ঝুঁকে সন্তুকে বলছে "পায়ে লাগু ঠাকুর"। সন্তুও গম্ভীর মুখে জবাব দিচ্ছে, "জিতে রহো"।
সন্তুর সাথে সাথে দীপ্তদেরও সকলে বলছে 'পায়ে লাগু'। কত সহজ সরল মানুষ এরা।ব্যাপারটা দীপ্তরা বেশ উপভোগ করছে। অনিরুদ্ধ বলে উঠলো, এখানে তো তোদের দারুন সম্মান 'রে সন্তু ! "
সন্তু বলল, হ্যাঁরে গ্রামের লোকেরা বাবাকে খুব সম্মান করে।
কথা বলতে বলতে ওরা গ্রামের শেষে -- মাঠের দিকে চলে এসেছিল। কত ময়ূর মাঠে ঘুরছে খেলছে , পেখম তুলে নাচছে, মাঝে মাঝে কি যেন খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে। এতদিন দীপ্তরা চিড়িয়াখানায় ময়ূর দেখেছিল। দীপ্তর মনে হত খাঁচায় বন্দি প্রাণীরা কেমন যেন উদাস.. ভিতর ভিতর ছটফট করে মুক্তির জন্য। এখানে ময়ূর গুলোকে দেখে মনে হল কত অনাবিল আনন্দে আছে ওরা.. স্বাধীনতার আনন্দ , শৃংখল মুক্তির আনন্দ.. সত্যিই বন্যেরা প্রকৃতিতেই সুন্দর।
সন্ধ্যে নামতেই দীপ্তরা লক্ষ্য করল গোটা গ্রামটা যেন অন্ধকারে ডুবে গেল। সন্তুদের ঘরেও কোনো আলো জ্বলছে না। সন্তুকে জিজ্ঞেস করে ওরা জানতে পারল যে এই গ্রামে এখনও ইলেকট্রিসিটি পৌঁছয়নি। অবাক হল ওরা !
সত্যি গ্রামের লোকেরা কত দিক থেকেই বঞ্চিত !
সব ঘরে সন্তুর বাবা লন্ঠন ও বড় বড় হ্যাজাক জ্বালিয়ে দিয়েছে।
সন্ধ্যেবেলা সন্তুর মা বড় কাসার খালাতে পাঁচ কাপ গরম দুধের চা আর পিয়াজি নিয়ে এল সন্তুর বাবা ও সন্তুদের জন্য। সন্তুর বাবা মানুষটা খুব চা খেতে খুব ভালোবাসেন। আধ ঘন্টা অন্তর অন্তর চা চাই।
এক কথায় বলতে গেলে বলা যায়
'চা খোর'
যেহেতু ঘরে গরু আছে তাই খাঁটি দুধের চা খায় ওরা। এতোটুকু জল থাকে না চা'তে। দশ মিনিটের মধ্যে একথালা পিয়াজি খেয়ে ফেলল ওরা। এখানে এসে থেকে দীপ্তদের সকলেরই খুব খিদে পাচ্ছে। হয়তো জলের জন্য হতে পারে। কিংবা হয়তো ব্যাঙ মুত্র যুক্ত জলের সুফল।
রাত্রে ওরা ছাদে শুতে গেল।এক একজনের জন্য এক একটা খাটিয়া পাতা। খাটিয়াতে তোষক ও চাদর বিছানো আর একটা বালিশ। গায়ে ঢাকা দেওয়ার জন্য একটা করে চাদর আছে। সন্তু ওর বাবার ট্রানজিস্টর রেডিওটা ছাদে নিয়ে এসেছে। রেডিও সিলোনে বিনাকা গীতমালা হচ্ছে। আমিন সাহানি হোস্ট। অনেকটা বাংলা অনুরোধের আসরের মতন প্রোগ্রাম।খুব ভালো ভালো হিন্দি ছায়াছবির গান শুনতে পাওয়া যায় এই প্রোগ্রামে। সায়নরা টুকটাক গল্প হাসিঠাট্টা করছে নিজেদের মধ্যে।
দীপ্ত ছাদে পায়চারি করছিল। ঘুম আসছে না। বারবার অবচেতন মনে সেই সাদা শাড়ী পরিহিত মেয়েটার চোখ দুটোকে যেন সে দেখতে পাচ্ছিল। সন্তুকে জিজ্ঞেস করব করব করেও করতে পারছে না। দীপ্ত জানত যে সন্তুরা দু ভাই। বোনের কথা কখনো সন্তুর মুখ থেকে শোনেনি। ছাদে ঠান্ডা হওয়া দিচ্ছে। চারিদিকে খোলামেলা জায়গা। গরম কালের রাতের হাওয়াটাও তাই এখানে একটু ঠান্ডাই। সায়নরা গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছে। রাত প্রায় বারোটা হবে। চারিদিকে জোনাকির আলো আর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। মাঝে মাঝে ব্যাঙের ডাক শোনা যাচ্ছে -- 'কোয়াক' 'কোয়াক' করে। খোলা আকাশের নিচে রাতের এই অদ্ভুত সুন্দর রূপ দীপ্ত দেখেনি কোনদিনও।
সায়ন ,অনিরুদ্ধ অঘোরে ঘুমাচ্ছে।দীপ্তর চোখে শুধু ঘুম নেই। হঠাৎ যেন একটা দরজা খোলার মতো আওয়াজ হল। দীপ্ত ছাদের কার্নিশ থেকে বাড়ির নিচের উঠোনে তাকিয়ে দেখে একটা মানুষের অবয়ব ..হাতে একটা হ্যাজাক। মানুষটার মুখ দেখতে পাচ্ছে না দীপ্ত। দীপ্তর মনে হল বাড়িতে বোধহয় চোর ঢুকেছে! সন্তুকে জানানোটা দরকার।
সন্তুর গায়ে ধাক্কা দিল দীপ্ত , "এই সন্তু ওঠ ওঠ.. বাড়িতে বোধহয় চোর ঢুকেছে! "
চোর কথাটা কানে ঢুকতেই সন্তু ধড়মড়িয়ে উঠে বসল,
"কোথায় ? কোথায় চোর ? "
দীপ্ত ছাদের কার্নিশের কাছে এসে আঙ্গুল দিয়ে নিচে দরজার দিকে দেখিয়ে বলল, "চোর পালিয়ে যাচ্ছে ওই দেখ। "
দুজনেই দেখল মানুষটা একহাতে হ্যাজাক আর এক হাতে কমণ্ডুল নিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে পড়েছে। সন্তু বলে উঠল , "আবে দূর শালা উয়ো তো বাবুজি হ্যায়। "
দীপ্ত অবাক হয়ে বলল , "তোর বাবা ! এত রাতে কোথায় যাচ্ছেন ? "
দীপ্ত ছাদে পায়চারি করছিল। ঘুম আসছে না। বারবার অবচেতন মনে সেই সাদা শাড়ী পরিহিত মেয়েটার চোখ দুটোকে যেন সে দেখতে পাচ্ছিল। সন্তুকে জিজ্ঞেস করব করব করেও করতে পারছে না। দীপ্ত জানত যে সন্তুরা দু ভাই। বোনের কথা কখনো সন্তুর মুখ থেকে শোনেনি। ছাদে ঠান্ডা হওয়া দিচ্ছে। চারিদিকে খোলামেলা জায়গা। গরম কালের রাতের হাওয়াটাও তাই এখানে একটু ঠান্ডাই। সায়নরা গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছে। রাত প্রায় বারোটা হবে। চারিদিকে জোনাকির আলো আর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। মাঝে মাঝে ব্যাঙের ডাক শোনা যাচ্ছে -- 'কোয়াক' 'কোয়াক' করে। খোলা আকাশের নিচে রাতের এই অদ্ভুত সুন্দর রূপ দীপ্ত দেখেনি কোনদিনও।
সায়ন ,অনিরুদ্ধ অঘোরে ঘুমাচ্ছে।দীপ্তর চোখে শুধু ঘুম নেই। হঠাৎ যেন একটা দরজা খোলার মতো আওয়াজ হল। দীপ্ত ছাদের কার্নিশ থেকে বাড়ির নিচের উঠোনে তাকিয়ে দেখে একটা মানুষের অবয়ব ..হাতে একটা হ্যাজাক। মানুষটার মুখ দেখতে পাচ্ছে না দীপ্ত। দীপ্তর মনে হল বাড়িতে বোধহয় চোর ঢুকেছে! সন্তুকে জানানোটা দরকার।
সন্তুর গায়ে ধাক্কা দিল দীপ্ত , "এই সন্তু ওঠ ওঠ.. বাড়িতে বোধহয় চোর ঢুকেছে! "
চোর কথাটা কানে ঢুকতেই সন্তু ধড়মড়িয়ে উঠে বসল,
"কোথায় ? কোথায় চোর ? "
দীপ্ত ছাদের কার্নিশের কাছে এসে আঙ্গুল দিয়ে নিচে দরজার দিকে দেখিয়ে বলল, "চোর পালিয়ে যাচ্ছে ওই দেখ। "
দুজনেই দেখল মানুষটা একহাতে হ্যাজাক আর এক হাতে কমণ্ডুল নিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে পড়েছে। সন্তু বলে উঠল , "আবে দূর শালা উয়ো তো বাবুজি হ্যায়। "
দীপ্ত অবাক হয়ে বলল , "তোর বাবা ! এত রাতে কোথায় যাচ্ছেন ? "
সন্তু স্বাভাবিক গলায় বলল nature's call ইয়ার..
দীপ্ত আতকে উঠে বলল, মানে ! এই এত রাতে !
তোদের বাড়িতে টয়লেট নেই ?"
সন্তু মুচকি হেসে বলল, আমাদের বাড়ি কেন ..গোটা গ্রামেই নেই.. তোদেরকে আগের থেকে বলিনি যদি তোরা শুনে না আসতে চাস তাই.. বাবুজি দিনের বেলা যেতে লজ্জা পায়.. গ্রামের সকলে বাবুজিকে চেনে সম্মান করে.. তাই রাতের অন্ধকারে পাশের গ্রামে যায়। ওই যে দূরে টেলিগ্রাফের পোস্ট দেখছিস তার পরে আছে আর একটা গ্রাম। ওখানে যায় বাবুজি।
দীপ্ত বলে উঠল, "মাই গড.. তারমানে কাল সকালে আমাদেরও... " !
সন্তু দুষ্টু দুষ্টু হেসে বলে উঠল, " হ্যাঁ মাঠে যেতে হবে , একেবারে ধানক্ষেতে ..একসাথে..
খুব মজা হবে দেখবি ,,, "
" তেরি তো" বলে দীপ্ত বালিশ নিয়ে সন্তুর দিকে ছুড়লো।
সন্তু বালিশটা ক্যাচ করে খ্যাক খ্যাক করে হাসতে হাসতে বলল , "পাশের গ্রামে যেতে হবে না বাবুজির মত --
এই গ্রামেই ব্যবস্থা আছে "।
দীপ্ত আতকে উঠে বলল, মানে ! এই এত রাতে !
তোদের বাড়িতে টয়লেট নেই ?"
সন্তু মুচকি হেসে বলল, আমাদের বাড়ি কেন ..গোটা গ্রামেই নেই.. তোদেরকে আগের থেকে বলিনি যদি তোরা শুনে না আসতে চাস তাই.. বাবুজি দিনের বেলা যেতে লজ্জা পায়.. গ্রামের সকলে বাবুজিকে চেনে সম্মান করে.. তাই রাতের অন্ধকারে পাশের গ্রামে যায়। ওই যে দূরে টেলিগ্রাফের পোস্ট দেখছিস তার পরে আছে আর একটা গ্রাম। ওখানে যায় বাবুজি।
দীপ্ত বলে উঠল, "মাই গড.. তারমানে কাল সকালে আমাদেরও... " !
সন্তু দুষ্টু দুষ্টু হেসে বলে উঠল, " হ্যাঁ মাঠে যেতে হবে , একেবারে ধানক্ষেতে ..একসাথে..
খুব মজা হবে দেখবি ,,, "
" তেরি তো" বলে দীপ্ত বালিশ নিয়ে সন্তুর দিকে ছুড়লো।
সন্তু বালিশটা ক্যাচ করে খ্যাক খ্যাক করে হাসতে হাসতে বলল , "পাশের গ্রামে যেতে হবে না বাবুজির মত --
এই গ্রামেই ব্যবস্থা আছে "।
তখন প্রায় মাঝরাতই বলা চলে। দীপ্তর চোখেও তখন গভীর ঘুম।
হঠাৎ কানে কতগুলো শব্দ প্রবেশ করল --
"এ দীপ চায়ে পিয়োগে ?"
দীপ্ত চোখ কচলে উঠে দেখল সন্তুর বাবা। মাঝরাতে ডাকছে চা খাবার জন্য !
দীপ্ত হাত ঘড়িতে দেখল রাত দেড়টা।
আড়মোড়া ভেঙে দীপ্ত বলল ," নেহি চাচাজি সুবহ মে পিয়েঙ্গে.. "
"আরে পিও ভাই , চায়ে খানে মে কেয়া হার্জ হ্যায় " ---
অগত্যা সন্তুর মাকে ডাকতে ডাকতে চলে গেল বুড়ো নিচে --
"এ সন্তু কি মা উঠো , জারা চায়ে পিলাও ভাই --
দীপ ভি পিয়েগা--
জারা বড়িয়া সে বানানা "।
হঠাৎ কানে কতগুলো শব্দ প্রবেশ করল --
"এ দীপ চায়ে পিয়োগে ?"
দীপ্ত চোখ কচলে উঠে দেখল সন্তুর বাবা। মাঝরাতে ডাকছে চা খাবার জন্য !
দীপ্ত হাত ঘড়িতে দেখল রাত দেড়টা।
আড়মোড়া ভেঙে দীপ্ত বলল ," নেহি চাচাজি সুবহ মে পিয়েঙ্গে.. "
"আরে পিও ভাই , চায়ে খানে মে কেয়া হার্জ হ্যায় " ---
অগত্যা সন্তুর মাকে ডাকতে ডাকতে চলে গেল বুড়ো নিচে --
"এ সন্তু কি মা উঠো , জারা চায়ে পিলাও ভাই --
দীপ ভি পিয়েগা--
জারা বড়িয়া সে বানানা "।
দীপ্ত মনে মনে ভাবল বুড়ো নিজেও ঘুমাবেনা , বেচারী সারাদিন খাটাখাটনি করা সন্তুর মাকেও ঘুমাতে দেবে না।
অগত্যা রাত দুটোর পর অনুরোধে ঢেঁকি গেলার মত চা খেতেই হল দীপ্তকে।
অগত্যা রাত দুটোর পর অনুরোধে ঢেঁকি গেলার মত চা খেতেই হল দীপ্তকে।
সকালের আলো ফুটতেই সায়ন অনিরুদ্ধ আর সন্তু উঠে পড়ল। দীপ্ত আগেই উঠে পড়েছিল। দেখল ছাদে চারটে কমন্ডুল বা গাড়ু রাখা.. অনেকটা কেটলির মত দেখতে কিন্তু সাইজে বড়। পিতলের ।
সায়নকে উঠেই বাথরুমে যেতে হয় প্রাতঃকৃত্য সারতে। বেচারা নিচে ঘুরে চলে এলো। কোথাও টয়লেট দেখতে পেল না। অনিরুদ্ধ বলল ,হ্যাঁরে দীপ্ত এই কেটলিগুলো দিয়ে কি হবে?
দীপ্ত বলল ,সবাই একটা করে হাতে উঠিয়ে নে.. মাঠে যেতে হবে.
সায়ন, অনিরুদ্ধ সমস্বরে বলে উঠল ..মানে
দীপ্ত গম্ভীর গলায় বলল ..মানে গ্রামে টয়লেট নেই.. তাই বন্ধুগণ মাঠে যাবার জন্য তৈরি হয়ে যাও!
ওদের ব্যাপারটা বুঝতে একটু টাইম লাগল। তারপর দুজনেই সন্তুর পিছনে ছুটল, শালা হারামি -- "
সন্তু দীপ্তর পিছনে দাঁড়িয়ে দাঁত বের করে হাসতে লাগল।
অগত্যা সবাই একটা করে গাড়ু হাতে নিয়ে যাত্রা শুরু করল।
ওরা লক্ষ্য করল এখানে কারোর এ বিষয়ে লজ্জা নেই। ছেলেরা এক দিকের রাস্তায় যাচ্ছে মেয়েরা আরেক দিকে।বেশ খোশ মেজাজে গল্প করতে করতে যাচ্ছে সবাই। যেন প্রাতঃকৃত্য নয় সব পিকনিক করতে যাচ্ছে।বেশ কিছুটা হেঁটে এসে দেখল আলপথের দুই ধারে দুটো ধানক্ষেত। দুদিকেই সাইনবোর্ড লাগানো। একটাতে লেখা "মহিলাও'কে লিয়ে "অন্যটাতে লেখা "পুরুষো'কে লিয়ে"
লজ্জা বিসর্জন দিয়ে সবাই ধান ক্ষেতে ঢুকে গেল। তবে বাঁচোয়া এটাই যে লম্বা লম্বা উলুগাছগুলো একে অপরকে বেশ আড়াল করে রেখেছে। দেখতে পাচ্ছে না কেউ কাউকে।
দীপ্ত ভাবল তার ডায়েরিতে আরেকটা নতুন অভিজ্ঞতা সংযোজন হল।
সায়নকে উঠেই বাথরুমে যেতে হয় প্রাতঃকৃত্য সারতে। বেচারা নিচে ঘুরে চলে এলো। কোথাও টয়লেট দেখতে পেল না। অনিরুদ্ধ বলল ,হ্যাঁরে দীপ্ত এই কেটলিগুলো দিয়ে কি হবে?
দীপ্ত বলল ,সবাই একটা করে হাতে উঠিয়ে নে.. মাঠে যেতে হবে.
সায়ন, অনিরুদ্ধ সমস্বরে বলে উঠল ..মানে
দীপ্ত গম্ভীর গলায় বলল ..মানে গ্রামে টয়লেট নেই.. তাই বন্ধুগণ মাঠে যাবার জন্য তৈরি হয়ে যাও!
ওদের ব্যাপারটা বুঝতে একটু টাইম লাগল। তারপর দুজনেই সন্তুর পিছনে ছুটল, শালা হারামি -- "
সন্তু দীপ্তর পিছনে দাঁড়িয়ে দাঁত বের করে হাসতে লাগল।
অগত্যা সবাই একটা করে গাড়ু হাতে নিয়ে যাত্রা শুরু করল।
ওরা লক্ষ্য করল এখানে কারোর এ বিষয়ে লজ্জা নেই। ছেলেরা এক দিকের রাস্তায় যাচ্ছে মেয়েরা আরেক দিকে।বেশ খোশ মেজাজে গল্প করতে করতে যাচ্ছে সবাই। যেন প্রাতঃকৃত্য নয় সব পিকনিক করতে যাচ্ছে।বেশ কিছুটা হেঁটে এসে দেখল আলপথের দুই ধারে দুটো ধানক্ষেত। দুদিকেই সাইনবোর্ড লাগানো। একটাতে লেখা "মহিলাও'কে লিয়ে "অন্যটাতে লেখা "পুরুষো'কে লিয়ে"
লজ্জা বিসর্জন দিয়ে সবাই ধান ক্ষেতে ঢুকে গেল। তবে বাঁচোয়া এটাই যে লম্বা লম্বা উলুগাছগুলো একে অপরকে বেশ আড়াল করে রেখেছে। দেখতে পাচ্ছে না কেউ কাউকে।
দীপ্ত ভাবল তার ডায়েরিতে আরেকটা নতুন অভিজ্ঞতা সংযোজন হল।
অন্তরা ঘোষ।
২২.১২.১৯.
২২.১২.১৯.
চিত্রঋণ : ইন্টারনেট
( চলবে)
No comments:
Post a Comment