অমৃতের সন্তান
ত্রিভুবন জিৎ
মুখার্জী / ২৭.০৪.২০১৫ / বেলা ১১.৩৩
শিশু মাত্রই
পবিত্র । সে অমৃতের সন্তান । কেউ
অস্বীকার করছেনা , কিন্তু আমাদের
সমাজ কি এখন অবিবাহিত মা’কে স্বীকৃতি দিয়েছে ? এর পেছনে কিন্তু
নারীদের যথেষ্ট হাত আছে। এটাই বাস্তব।
সমাজ বড় নিষ্ঠুর । নারী অবলা নয় কিন্তু তাকে অবলা বানান হয় সমাজের তাড়নায় ।
সামান্য ভুলের মাসুল দিতে হয় নারীকে সারা জীবন । শত শত গল্প সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু
এখন কি সমাজে ওই গোঁড়ামি বন্দ হয়েছে ? বোধ হয় না । নারী - পুরুষ ভগবানের সর্বোৎকৃষ্ট সৃষ্টির
এক উদাহরণ । আমাদের
সমাজ পুরুষকৈন্দ্রিক , তাই নারীর ব্যক্তি স্বাধিনতা প্রায় নেই বললেই চলে ।
কিন্তু এখন ও নারী
তার অধিকার সম্পর্কে সম্পুর্ন স্বচেতন আছেন কি ? সবাই মুখে বলেন
নারীর প্রগতি নাহলে দেশের প্রগতি সম্ভব নয় কিন্তু সেটা কি কর্ম ক্ষেত্রে সফল হচ্ছে ? অনেক বুদ্ধিজীবী
মহিলা কাজে এক করেন বলেন আরেক কথা।
আসুন একটা ছোট্ট অনুভূতির কথা শুনিঃ(সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয়)
একটি নাম না
জানা ছোট্ট সহর । সেই সহরে ঘর ভাড়া পাওয়া মুস্কিল । বিশেষ করে অবিবাহিত যুবক যুবতি
কে কেউ ভাড়া দিতে চায়না । কিছু আপার্টমেন্ট আছে কিন্তু সেখানেও সোসাইটির নিয়ম কেউ অবিবাহিত যুবক যুবতিকে ভাড়া দিতে
পারবেন না ... যদি দেন তাহলে
৩০০০ টাকা ফাইন দিতে হবে ঘরের মালিক কে । আই টি প্রফেশনাল ছেলে মেয়েদের ক্ষেত্রে
খুব অসুবিধের ব্যাপার । নয় কি ?
সেই সহরে এক
বৃদ্ধ বৃদ্ধা নিজেদের ফ্ল্যাটে থাকেন। তাদের কেউ কাছে পিঠে দেখা শোনা করার নেই ।
ছেলে আমেরিকাতে গ্রিন কার্ড নিয়ে স্ত্রী পুত্র সহ বসবাস করছে আজ ১২ বছর । বছরে একবার ও
আসার সময় হয়না । বৃদ্ধা
মহিলা প্রায় রোগ শয্যায় শায়িত । বৃদ্ধ নিরুপায় হয়ে পেয়িং গেস্টের কথা চিন্তা করেন।
একটি মেয়ে , আই টি সেকটারে
কাজ করে । মেয়েটি ভালো রান্না করে । বৃদ্ধটি , মেয়েটিকে আলাদা মাষ্টার বেডরুম টয়লেট সমেত এবং একটি এ.সি
সমেত তাঁর নিজের ফ্ল্যাটে থাকতে দেন ৫০০০ টাকা মাস ভাড়াতে । কিন্তু সর্ত কোন ছেলে
বন্ধুকে ঘরে নিয়ে আসবেনা । গিন্নী ঠাকুর ঘরে প্রায় থকেন। গোপালের সেবা ছাড়া গিন্নী
কিছুই বোঝেন না । বৃদ্ধ কম্প্যুটার ছাড়া কিছু বোঝেন না । মেয়েটি সকাল ৮ টায় অফিসে
যায় ফেরে রাত ৭ টা নয় ৮ টা।
মেয়েটি এনাদের
দাদু দিদিমা বলে । মাঝে মধ্যে রবিবার দিন মুর্গা মসল্লম রান্না করে বৃদ্ধকে খাওয়ায়
। এই রকম চলে যাচ্ছিল । হঠাৎ এক বিপত্তি এলো । মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা বলে ধরা পড়ে বৃদ্ধার কাছে ।
বৃদ্ধা , মেয়েটিকে সত্তর
ঘর ছেড়ে দিতে বলে । কোন ঝুট ঝামেলার মধ্যে পড়তে রাজি নন।
মেয়েটি বলে দিদা , তুমি গোপাল
ঠাকুর পূজো করছো কিন্তু আমার গোপালকে তুমি স্বীকৃতি দেবেনা সমাজের ভয়ে ।
বৃদ্ধ মহা
ফ্যাসাদে পড়ে । সোসাইটি জানলে নানা ঝামেলা পোহাতে হবে । পুলিসের ঝামেলা ও হতে
পারে । তাই পত্রপাঠ মেয়েটিকে অন্যত্র চলে যেতে বলে ।
মেয়েটি কিন্তু
ছাড়ার পাত্রী নয় । সে বলে সন্তান এখানেই জন্মাবে এবং তার পিতৃ পরিচয় ও সে দেবেনা
কাউকে । এ হেন ফ্যাসাদে বৃদ্ধ পড়ে তার বন্ধু রিটায়ার্ড পুলিশ কমিশনারের শরণাপন্ন
হয় । অগত্যা মেয়েটি ওই পুলিশের ভয়ে ফ্ল্যাট ছাড়তে বাধ্য হয়।
বৃদ্ধ বৃদ্ধা , তীর্থ ভ্রমণে
কাশী চলে-যান । ফিরে শোনেন , মেয়েটি একটি
শিশু পুত্র জন্ম দেয় অন্য
এক সহরের নার্সিং হোমে । ওখানেই সে পুত্র সন্তান
কে জন্মাবার পর ছেড়ে
চলেযায় । মেয়েটি
একটি চিঠি ছেড়ে যায় তাতে লেখা থাকে “আমি অবৈধ সন্তানের জননী নই । সে অমৃত
সন্তান । আমি সমাজের কাছে প্রশ্ন রাখি আমার ভুলের জন্য আমার পুত্র কেন শাস্তি পাবে? সে কেন সমাজে
মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবেনা ? এই পুত্র সন্তানের জনক এক প্রতিভাসম্পন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়ালিষ্ট যিনি আমাকে প্রতারণা
করেছেন । আমি তাঁর নাম নিতে রাজি নই কারন আমি এখন ও তাঁকে শ্রদ্ধা করি ভালোবাসি” ।
মেয়েটি কম্পানি
থেকে অন
সাইটে চলে যায় সুইজারল্যান্ড ।
শিশুটিকে মাদার
টেরে-সা হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এক নিঃসন্তান
দম্পতী তাকে দত্তক নেয় । এখন সে অনেক বড় হয়েছে । অনেক বড় । কখন তার মনে হয়নি এনারা
তার মা বাবা নন বলে। সেই নিঃসন্তান দম্পতী চেষ্টা করেন নি আরেকটি সন্তানের জন্ম
দিতে । সব স্নেহ উজাড় করে দিয়েছেন দত্তক নেওয়া ছেলেটির প্রতি।
No comments:
Post a Comment