Sunday, August 3, 2014

৯ম পর্ব আবিষ্কারের নেশা (পূর্ব প্রকাশিতর পর)


৯ম পর্ব আবিষ্কারের নেশা
(পূর্ব প্রকাশিতর পর) 

অয়নের সকালটা কেমন যাবে জানেনা । সকাল সকাল মেঘলা আকাশ । আকাশ ভারাক্রান্ত । ঘন মেঘে আচ্ছন্ন । শ্রাবণের বর্ষণমুখর দিনে , মনে মনে কবিতা রচনা করার প্রবল চেষ্টা । কলম নিয়ে বসে পড়ে । নিজের ডাইরিতে লিখতে থাকে:
শ্রাবণ ধারা
আজি শ্রাবণ ধারায় বসিয়া আছি তোমার পথ চাহিয়া
তুমি আসিবে বলিয়া মন আমার ওঠে গান গাহিয়া ।
একি অবিশ্রান্ত ধারা চিত্তে জাগায় পুলক আমায়
বর্ষণ মুখর দিবসে বসিয়া আমার ই আঙ্গিনায় ।।
একি ক্লান্ত বিষম দিবস রজনী যায় যে বহিয়া
নাহি মানে কভু কোন বাধা কোন বাঁধনের হিয়া ।
আঁকি তোমারি চিত্র নিত্য আমার মানস পটে
উত্থাল যৌবনের উন্মত্ত হৃদয় প্রেক্ষাপটে
নাহি কভু ভুলি যাতনা বিরহের বহ্নি স্রোতে ।
একি ঘন মেঘের আচ্ছাদনে আঁধার রাতে
গুনি মুহূর্ত প্রহরগুলি যায় অনিদ্রার রাতে ।।
তুমি আসিবে বলিয়া মন আমার ওঠে গান গাহিয়া ।
আজি শ্রাবণ ধারায় বসিয়া আছি তোমার পথ চাহিয়া ।।
অয়ন কাল ফিরে যাবে বেঙ্গালুরু। বাবা মাকে শালিনীর কথা বলেছে ।
ওনারা কিছু উত্তর দেন নি ।
মা বলেছেন তোমার যেখানে পছন্দ সেখানেই আমরা তোমার বিয়ের ঠিক করবো । তবে ওই মেয়ে খুব অহংকারী । ওইখানেই কি তুমি মন স্থির করেছ ?
হ্যাঁ মা । ও একটু জেদি কিন্তু আজকাল ওর মত মেয়ে তোমরা খুঁজলে পাবে না ।
কেন পাবো না !
না মা পাবে না ।
আমি বলে রাখছি , ও যা করেছে সেটার জন্য আমি দায়ী ।
আসলে আমি ওকে বুঝতে ভুল করি । ও যে অন্য মেয়েদের চেয়ে আলাদা সেটা আমার বোঝা উচিত ছিল।
শালিনীকে খুব খুশি খুশি লাগছিল । হঠাৎ শালিনীর মুখেও রবীন্দ্র সঙ্গীতের এক গানের কলি ঃ-
আজি ঝর ঝর শ্রাবণ দিনে
জানিনে জানিনে কিছুতে কিছু যে মন মানে না
ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে ...।
পরে সুরু করে তার প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত , শ্রাবন্তি র কণ্ঠেঃ
শাঙন গগনে ঘোর ঘনঘটা
নিশীথ যামিনী রে ...।
কুঞ্জ-পথে সখি , কৈসে যাওত
অবলা কামিনী রে ...।।
মায়ের ডাকে শালিনীর গান থামে । স্নান সেরে খেয়ে নে । কাল জাওয়া । আবার ওই অচেনা অজানা জায়গা ।
তোমার কোন চিন্তা করার প্রয়োজন নেই । আমি ত একাই সব জায়গায় যাই । এবারে আমাকে অয়ন ভুবনেশ্বরে ছেড়ে নেক্সট ফ্লাইটে বেঙ্গালুরু ফিরে যাবে । এর আগের বার ত আমি একা গিয়েছিলাম বেঙ্গালুরু তখন কোন অসুবিধে হয়েছিল কি ?
তা হয়নি । তা তোমরা যা ভাল বোঝ তাই কর । আমি আর কদিন মা ! তোমার বিয়েটা ভালয় ভালয় হলে বাঁচি ।
হ্যাঁ মা তা আর বলতে ! তোমার গলা থেকে মাছের কাঁটা নামবে !! তাই না ?
ওই আরম্ভ হল । একটু যদি মায়ের মনটা বুঝতিস শালু । উনি আমাকে একলা ফেলে চলে গেলেন এই জঞ্জালে আমি ছট পট করছি । ঠাকুর জানেন সে কথা । মা রান্না ঘরে চলে যান।
শালিনী নিজের ঘরে ওর জিনিষগুলো ভাল ভাবে চেক করে নেয় । দুটো ট্রলি ব্যাগ , কিছু বই একটা মেকআপ বক্স (অয়ন ওকে প্রে-সেন্ট করেছিল) আর অন্য টুকি টাকি জিনিস । বাকি যদি কিছু সেরকম প্রয়োজন হয় তবে সেগুল ওখানেই কিনে নেবে । ফ্লাইটে কম লাগেজ ভাল এখন ত ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটে ২৫ কেজির বেশি নিতে দেয়না । এক্সট্রা লাগেজের জন্য $ 100 চার্জ করে । তবু ডোমেস্টিক ফ্লাইটে অতটা রেস্ট্রিক্সন নেই। কাল সন্ধ্যা ৭ টার ফ্লাইট । সন্ধ্যা ৫ টায় চেক ইন । সিকুরিটি চেকের পর সন্ধ্যায় INDIGO র ফ্লাইট No 6E447 CCA to BBA Dep. Time 19.05 hrs । অয়ন বিকেল ৫ টার সময় নেতাজী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ডোমেস্টিক টার্মিনালের কাছে আমার জন্য অপেক্ষা করবে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে ।
মা দক্ষিণেশ্বরের কালী ঠাকুরের ফুল দিয়ে মাথায় আশীর্বাদ করে শালিনীকে রওনা করেন ওর মা । শালিনী বিকেল ৪।৩০ টের সময় ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে মা দুর্গা দুর্গা বলে ।

নেতাজী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট:-
সন্ধ্যা ৫ টায় চেক ইন । সিক্যুরিটি চেকের পর ১৯টা ০৫ এ ইন্ডিগো র ফ্লাইট । অয়ন বিকেল ৫ টার সময় নেতাজী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ডোমেস্টিক টার্মিনালে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল ।
এয়ারপোর্টে পৌঁছেই অয়নকে দেখে ধাতস্থ হয় । অয়ন ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এর কাছেই ছিল । শালিনীকে দেখে কাছে চলে আসে । লাগেজ গুল সঙ্গে নিয়ে অয়ন ওয়েটিং লাউঞ্জে চলে যায়। দুজনে এই-প্রথম এক সঙ্গে ফ্লাইটে যাত্রা করবে তাও মাত্র এক ঘণ্টার । সিকুরিটি চেকের পর কন-ভয়রে লাগেজ চলে যায় । ইন্ডিগোর ফ্লাইট নাম্বার 6E447 Dep. Time 19.05 hrs. From CCA to BBI মানে কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর । ভুবনেশ্বরে ১৯।৫৫ অর্থাৎ ৮ টায় পৌঁছবে । Indigo Airlines এর বাস যাত্রীদের নিয়ে প্লেনের কাছে পৌঁছে দেয় । দুজনে পাশা পাশী উইন্ডোর পাসের দুটো সিটে বসে । কিছুক্ষণের মধ্যেই প্লেন টেক অফ করে। উইন্ডোর সার্সি দিয়ে বঙ্গপ সাগরের দৃশ্য । নিচে সুন্দর বনের কিছুটা দৃশ্য দেখা জায় । আকাশ পরিষ্কার তাই দেখতে অসুবিধে নেই। এর পর খণ্ড খণ্ড মেঘের মধ্যে দিয়ে প্লেন এগিয়ে চলে নিচে নীল জল রাশি । সব মিলিয়ে মনোরম দৃশ্য ।
অয়নঃ- কফি খাবে শালু ।
শালিনীঃ- না ওই হাড় মাগ্যি কফি খাওয়ার আমার কোন ইচ্ছে নেই ।
এই ফ্লাইটে কিছু কমপ্লিমেন্টরই নেই । কিং ফিশারে তাও কিছু স্ন্যাক্স দিত ।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ভুবনেশ্বর এসে-গেল । ধউলি শান্তি স্তূপ দেখা গেল । আকাশ থেকে ভুবনেশ্বরের এরিয়াল সার্ভে করে-ফেললাম দুজনে । ওটা লিঙ্গরাজ মন্দির বোধ হয় । বেশ সহর ভুবনেশ্বর ।

বিজু পট্টনায়ক ইন্টারন্যাশনাল এয়ার পোর্টঃ-
ছোট এয়ারপোর্ট হলেও বেশ সুন্দর ভুবনেশ্বর এয়ারপোর্ট । রাতের আলো ঝলমলে শহর । রাস্তা সুন্দর পরিষ্কার । এয়ারপোর্টে সিকিউরিটি চেক আউটের পর অয়নকে সঙ্গে নিয়ে কারে উঠি । ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করি , কত সময় লাগবে , ওখানে কাছে হোটেল আছে কিনা , ইন্সটিট্যুটে থাকার ব্যবস্থা আছে কিনা ইত্যাদি। ড্রাইভারের কাছে শুনি গেস্ট রুম আছে এবং ক্যান্টিনে বলা আছে আমাদের জন্য রাতের ডিনার এর জন্য । আমরা শুনে ধাতস্থ হই। আমাদের দুজনকে NISER Institute থেকে কার রিসিভ করে নিয়ে যায় । এয়ারপোর্ট থেকে সোজা রাস্তা সচিবালয় মার্গ ধরে ডানদিকে ঘুরে আবার সৈনিক স্কুল পেরিয়ে আবার ডান দিকে ঘুরলেই একটু পরে National Institute of Science Education and Research , Bhubaneswar.
খুব সুন্দর ইন্সটিট্যুট । ছিম ছাম পরিষ্কার ক্যাম্পাস । আমাদের দুজনকেই রিসিভ করার জন্য ডঃ জয়দীপ ভট্টাচার্য , রিডার আসেন । অমায়িক ভদ্রলোক । উনি Jawaharlal Neheru Centre for Advance Scientific Research, Bangalore থেকে Ph.D করেছেন শুনে শালিনী খুব আগ্রহের সঙ্গে ওনার সঙ্গে বাক্যালাপে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । এখানকার পরিবেশ এবং রিসার্চের স্কোপ অনেক বলে উনি বলেন। শালিনী ওনার সঙ্গে কথা বলতে এতই মসগুল ছিল যে অয়নের কথা একদম ভুলে যায় । পরের দিন বিকেল বেলা ৫ টায় অয়নের Indigo Airlines এর 6E265 ফ্লাইট বেঙ্গালুরু যাওয়ার । 19.05 এ ছাড়বে রাত 22.20 পৌঁছবে ।
অয়ন শালিনী এবং ডঃ ভট্টাচার্য র কথার মধ্যে শালিনীর উদ্দেশ্যে বলে শালিনী তাহলে আমি যাই !
ও মা সেকি ? আপনার ত এখানেই থাকার ব্যবস্থা আছে । বাই দি বাই আমি জয়দীপ ভট্টাচার্য এখানে ছোট খাট একটা পোষ্টে আছি ।
শালিনী খুব অপরাধী মনে করে নিজেকে । অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে সরি অয়ন আমার পরিচয় করান উচিত ছিল । আসলে...।
আসলে তুমি এখানে এসে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছ । হ্যাঁ ডঃ ভট্টাচার্য আমি ‘অয়ন’ । বাকিটা শালিনীর কাছ থেকে জেনে নেবেন । আমার তাড়া আছে । বাই ! বলে গট গট করে নিজের লাগেজ নিয়ে চলে জায় ।
শালিনী এই পরিস্থিতি কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনা । অয়ন! অয়ন !! দাঁড়াও লক্ষ্মীটি , আমার ভুল হয়ে গিয়েছে ।
অয়ন পিছু ফেরে না । এগিয়ে চলে । সে খুব অপমানিত বোধ করেছে । হবু বৌয়ের কাছথেকে এরকম উদাসীনতা আশা করেনি।
অয়ন শালিনী এবং ডঃ ভট্টাচার্য র কথার মধ্যে শালিনীর উদ্দেশ্যে বলে শালিনী তাহলে আমি যাই !
ও মা সেকি ? আপনার ত এখানেই থাকার ব্যবস্থা আছে । বাই দি বাই আমি জয়দীপ ভট্টাচার্য এখানে ছোট খাট একটা পোষ্টে আছি ।
শালিনী খুব অপরাধী মনে করে নিজেকে । অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে সরি অয়ন আমার পরিচয় করান উচিত ছিল । আসলে...।
আসলে তুমি এখানে এসে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছ । হ্যাঁ ডঃ ভট্টাচার্য আমি ‘অয়ন’ । বাকিটা শালিনীর কাছ থেকে জেনে নেবেন । আমার তাড়া আছে । বাই ! বলে গট গট করে নিজের লাগেজ নিয়ে চলে জায় ।
শালিনী এই পরিস্থিতি কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনা । অয়ন! অয়ন !! দাঁড়াও লক্ষ্মীটি , আমার ভুল হয়ে গিয়েছে । আমাকে ক্ষমা কর । কিছু ফল হয় না । পোঁরে নিজেকে সামলে নেয় ।
অয়ন পিছু ফেরে না । এগিয়ে চলে । সে খুব অপমানিত বোধ করেছে । হবু বৌয়ের কাছথেকে এরকম উদাসীনতা আশা করেনি। এত অহংকার !! ভাবা জায় না।
**কিন্তু ভাবতে গেলে ব্যাপারটা সেরকম কিছু সিরিয়াস না । এটা স্বাভাবিক একজন প্রফেসেন এর লোক দেখলে সমান প্রফেসেনের আরেকজন একটু বাক্যালাপ করবেই। এতে খারাপ ভাবার কি আছে? এখানেই বলে igo clash । এটা আজকালকার ছেলে মেয়েদের মধ্যে প্রায় দেখা যায় ।**
শালিনী ফোন করে কিন্তু ফোন স্বিচ অফ থাকে তাই কোন কথা বলা সম্ভব ছিলনা।
অনুতপ্ত শালিনী এই প্রথম নিজের প্রতি ধিক্কার দেয় । একি করলাম আমি ! নিজেই নিজেকে শাসন করে । কিন্তু এখন উপায় ! রাতে নিজেদের institute এর গেস্ট রুমে থাকে। ভালই ব্যবস্থা ছিল। ভাল বিছানা নতুন চাদর পাতা হয়েছে দেখল , এটাচড বাথ রুম , ড্রেসিং টেবিল, কাপ বোর্ড , টিভি , ইন্টারনেট কানেক্সেন (wi fi) । শালিনী কিছুই খেলনা সেদিন রাতে ।
তারপরের দিন ওর কাজে জয়েন করতে হবে । অনেক দায়িত্বর চাকরি । নতুন চাকরি নতুন institute . ডাইরেক্টর এর সঙ্গে দেখা করে কাজ সম্বন্ধে বোঝে ।
সেদিন রাতে অয়ন কাছেই একটা গেস্ট হাউস পেয়ে যায় । ওখানে রাত কাটায় । রাতের খাবার এক হোটেলে খেয়ে নেয় । শালিনীর প্রতি বিরক্তি ভাব আসে । এতো উদাসীন মেয়ে নিজের হবু স্বামীর সম্বন্ধে ! এটা ঠিক মেনেনিতে পারেনা অয়ন । মায়ের কথা মনে পড়ে, “ওই মেয়ে খুব অহংকারী ”। মা বাবা কিন্তু ওর ওপর সব ছেড়ে দিয়েছে ।
সকালে উঠে অয়ন ফোন স্বিচ অন করাতে শালিনীর মিস কল দ্যাখে । কিছু জবাব দেওয়ার আগেই শালিনীর ফোন ...
ওপার থেকে হ্যালো হ্যালো ...।
অয়ন ইচ্ছার বিরুধ্যে এই প্রথম শালিনীর ফোন রিসিভ করে । বল কি বলছ !!
তুমি আমার ওপর রাগ করে চলে গেলে বুঝলেওনা আমার রাতটা কিরকম কাটলো অজানা জায়গায় !
কেন তুমি ত তোমার institute এর গেস্ট হাউসে আছ । জলে ত পড়েছিলেনা !
কাল তুমি কোথায় রাত কাটালে ?
ভেবেছিলাম তোমাকে জড়িয়ে শোব । তা হল কোথায় ! এখানকার এক গেস্ট হাউসে রাত কাটালাম । বেশি দূর না কাছেই ছিলাম।
অশালীনতার একটা সীমা আছে অয়ন। ভুলে যেওনা আমাদের এখন বিয়ে হয়নি । তুমি ভাবলে কি করে ওই নোংরা কথা ! কোথায় রাত কাটালে ?
বেশি দূর না কাছেই ছিলাম । এখানকার এক গেস্ট হাউসে রাত কাটালাম । আমি তোমাকে খুব মিস করছি । লাঞ্চে এসনা।
কোথায় ?
আমি তোমাকে নিয়ে আসব ।
তার দরকার নেই । আমি ক্লাস ছেড়ে কোথাও যেতে পারবোনা ।
ঠিক আছে তবে আমি সন্ধ্যার ফ্লাইটে চলে যাচ্ছি বেঙ্গালুরু ।
আমি সম্ভব হলে তোমাকে এয়ারপোর্টে সী অফ করে আসব । আপাতত কোয়ার্টার না পাওয়া অব্ধি ওই গেস্ট হাউসেই থাকব ।
ঠিক আছে । যা ভাল বোঝ কর । আমার কি আমাদের ত বিয়ে হয়নি আমার আবার অত চিন্তা কেন?
কি ?
আর আমাকে শাসি-ওনা । তুমি নিজে মুখে বলেছ আমাদের এখন বিয়ে হয়নি ।
সেটা কি মিথ্যে !
তা কেন ।
তাহলে ?
তাহলে তোমার দায়িত্ব তোমার । আমার দায়িত্ব আমার । ব্যাস ।
বিকেলে সত্যি শালিনী এয়ারপোর্ট এ গেল । এবারে বাসেই গেল। ভুবনেশ্বরে ভল্ভো রেড লাইন বাস আছে । সোজা এয়ারপোর্টে যায় ওদের institute এর পাস দিয়ে । খুব সুবিধে । সঙ্গে এক ক্ষুদে ছাত্রকে নিয়ে শালিনী বেরিয়ে পড়ে । ওই এখন ওর গাইড ।
অয়ন ওয়েটিং লাউঞ্জে বসেছিল । খুব ভাবুক ভাবুক লাগছিল। হঠাৎ শালিনীকে দেখে মুচকি হাঁসে ।
কাল কি কাণ্ডটাই না করলে !
কেন ? কাণ্ডের কি আছে । আমি বেশ ছিলাম । মিছি মিছি তোমাকে জ্বালাতাম। তুমি আবার আমাকে রাতে বের করে দিতে ... তখন!
যাঃ ফাজিল কোথাকার ! কি যে বলে না !!
তবে আমি কোথায় শুতাম ? সঙ্গে ওটা কে ?
এক সঙ্গে দুটো প্রশ্ন র উত্তর না দিয়ে ... তোমার ফ্লাইট কখন পৌঁছবে বেঙ্গালুরু ?
কি করে বলব ! সিডুল টাইম ১০ টা ২০ মি । লেট করলে আরো দেরি হতে পারে ।
আমি কোথায় শুতাম কাল রাতে বলনা !
পাশের রুমে ।
নক করলে খুলতে ?
আমি চলে যাব অয়ন ।
তবে তাই যাও । আমার বিয়ে অব্ধি অপেক্ষা করা সম্ভব নয় । চল ফ্লাইট কেন্সেল করে বিয়েটা সেরে ফেলি । আজি বৌভাত সেরে-ফেলি বলে মুচকি হাঁসে অয়ন।
অয়নের ওই দুষ্টুমির কথা আগে ভাল লাগত না এখন শালিনী বোঝে ও ঠাট্টা র ছলে ওইসব বলে ওকে রাগায় ।
দুজনে কফি খায় । শালিনীর সঙ্গে আসা ছেলেটি কি ভাবছে কে যানে ! ওকে কিছু বলে নি ।
অয়ন চেক ইন করে বিদায় নেয় শালিনীর কাছথেকে। দুজনের ই চোখ ছল ছল করছিল।
শালিনীর মন খারাপ হয়ে জায় । মনে হচ্ছে ওর আপনজন যেন ওকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে । তবে কি এটাই বিরহ যাতনা ! না: এত উতলা হলে চলবে না তাকে । কালথেকে তাকে তার নতুন ক্লাসে ছেলে মেয়েদের পড়াতে হবে । নতুন বিষয় তাদের জন্য । ভাল করে বোঝাতে হবে বিষয়টা ।
তাড়াতাড়ি ফিরে এল গেস্ট হাউসে । ফিরেই মাকে , দিদিকে ফোন করল ।
মা একটার পর একটা প্রশ্ন করেন । খাওয়া ঠিক হচ্ছে কিনা , অয়নের খবর , এখানে লোকজন কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি ।
চলবে:-
L

No comments:

Post a Comment