Monday, August 25, 2014

আমার শহর ...আরও সুন্দরী হয়ে ওঠে শারদোত্সবে ত্রিভুবনজিৎ মুখোপাধ্যায় (কলকাতা) ২১.১০.২০১২ তে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা



জ থেকে বহু বছর আগের কথা। তখন কলকাতা বলতে টালা থেকে টালিগঞ্জ বোঝাত। আমরা তখন বেলঘরিয়াতে থাকতাম, ভাড়া ঘরে। ১৯৫৯ সালের কথা। তখন স্টিম ইঞ্জিন চলত। নতুন পুজোর জামা বলতে স্কুল ড্রেস— তাই পেয়েই খুশি। ষষ্ঠীর দিন মা কপালে চন্দনের টিপ দিয়ে আশীর্বাদ করতেন, “দীর্ঘজীবী হও।” সপ্তমী থেকে পাড়ার পুজো দেখে আর ভোগ খেয়ে প্রতিমা দর্শন। তার পর পায়ে হেঁটে বেলঘরিয়া, মোহিনী মিল, পুকপাড়া, নিমতার পুজো।
পরের দিন অর্থাত্ অষ্টমীর দিন, হাঁটতে হাঁটতে রথতলা-সিঁথি ঘুরে পায়ের ব্যথা নিয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়তাম। মা হয়তো পুজোর খরচের জন্য ১ আনা দিতেন তাতে রাস্তায় হয় চানাচুর নয় ঝুরিভাজা। সঙ্গে একটা বেলুন। মাইকে শ্যামল মিত্রর গান, ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা...’ সেই গানের কলির অর্থ বুঝতাম না, তাও গাইতাম। আবার কখনও মিন্টু দাশগুপ্তের প্যারডি, ‘আমি তো পকেট কাটিনি কেন মোরে দাও শুধু প্যাদানি’। লতা মঙ্গেশকরের ‘না যেও না রজনী এখনও বাকি, বলে রাত জাগা পাখি’ সলিল চৌধুরীর সাড়া জাগানো গান। কি বাচ্চা কি বুড়ো— সকলের মুখে ওই এক গান। গান শুনলেই মন ভরে যেত।

দুর্গা প্রতিমা দর্শন— কুমোরটুলির ঠাকুর, বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো, শোভাবাজারের ঠাকুর,আহিরিটোলা, পরে ফিরে দেশবন্ধু পার্ক, শ্যামবাজারের পুজো।

নবমীর পুজোর সময় ঢাকের বাদ্যির তালে ধুনুচি নাচ। কোথাও কোথাও পাঁঠা বলি হত তখনও। নবমীর দিন পাড়ার পুজো বেশি উপভোগ্য ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে হুটোপাটি, নাগরদোলনা চড়া, ফুচকা খাওয়া— খুব হইচই। আর দশমীতে দেবীর বিদায়ের পালা। বিজয়ার প্রণাম সারতে সারতে পুজোও শেষ। অপেক্ষা আবার আরও একটা বছরের।

লেখক পরিচিতি
সরকারি চাকরি থেকে প্রায় দেড় বছর হল অবসর নিয়েছেন। বদলির চাকরির ফলে পুরো ওড়িশাই ছিল পায়ের তলায়। ঘোরাঘুরির বহর এমনই যে তাঁকে ভবঘুরেও বলা যেতে পারে। কালাহান্ডি, কোরাপুট, মালকানগিরি, যাজপুর, পুরী— শেষে বারো বছর ভুবনেশ্বরে কাটানোর পর ওড়িশা-বাস শেষ হয়েছে। এখন স্বামী-স্ত্রীতে কলকাতায় ছেলের কাছেই থাকেন।
• গীতাঞ্জলি বিশ্বাস
• দেবশ্রী চক্রবর্তী দুবে
• শুভশ্রী নন্দী
• ত্রিভুবনজিৎ মুখোপাধ্যায়
• ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
• ঝর্না বিশ্বাস
• দীপাঞ্জনা ঘোষ ভট্টাচার্য
• মধুমিতা দে
• রূপা মণ্ডল
• ভাস্করণ সরকার

No comments:

Post a Comment