Thursday, May 22, 2014

রামমোহন রায় - ২৪৩ লেখাঃ- ফাল্গুনী মুখার্জী ।


রামমোহন রায় - ২৪৩
লেখাঃ- ফাল্গুনী মুখার্জী ।
“সুরাই মেলের কুল
বেটার বাড়ি খানাকুল
ওঁ তৎসৎ বলে বেটা বানিয়েছে ইস্কুল”
সেকালের রক্ষণশীল হিন্দুরা এই ছড়াটি এমন একজন মানুষের পরিচয় দেওয়ার জন্য বানিয়েছিলেন, যিনি আমাদের মুক্ত চিন্তার প্রথম দিশারি, কূসংস্কার আর হাজার বছরের চেতনাহীন বদ্ধ সমাজের ভিতটাকে প্রথম নাড়া দিয়েছিলেন । তিনি এদেশের প্রথম আধুনিক মানুষ রামমোহন রায় । আজ থেকে ২৪২ বছর আগে আজকের দিনে – ২২শে মে হুগলী জেলার খানাকুলের রাধানগর গ্রাম জন্ম দিয়েছিল বাংলার নবজাগরণের প্রথম পুরোহিতকে ।
উদ্ধৃত ছড়াটি থেকেই বুঝতে পারি সেকালের চেতনাহীন সমাজ কি চোখে দেখতো রামমোহনকে । রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ, এমনকি আত্মীয় পরিজনদের কাছ থেকেও পাওয়া প্রবল বাধা অতিক্রম করে আমাদের মননভূমিতে আধুনিক চিন্তা-চেতনার অবিচল অগ্রপথিক হয়ে আছেন রামমোহন রায় ।
কৌলিক পদবী ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’ । প্রপিতামহ মুর্শিদাবাদ নবাবের দেওয়ান হওয়ার সুবাদে ‘রায়’ পদবি প্রাপ্ত হয়েছিলেন । পৌত্তলিকতার বিরোধী ছিলেন বলে গর্ভধারিনী মা’র সঙ্গে সম্পর্কছেদও তাকে টলাতে পারেনি হিন্দু ধর্মের অসারতা ও কূসংস্কার বিরোধী আন্দোলন থেকে । ১৮২৩এ ইংরেজ শাসকের ‘দেশীয় সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণ’আদেশ জারির প্রতিবাদে রামমোহন তাঁর ফারসি ভাষার সংবাদপত্র ‘মিরাৎ-উল-আখবর’ বন্ধ করে দেন । পত্রিকাটির শেষ সংখ্যায় রামমোহন লিখেছিলেন “যে সম্মান হৃদয়ের শত রক্তবিন্দুর বিনিময়ে কেনা, হে মহাশয়, কোন অনুগ্রহের আশায় তাকে দারোয়ানের কাছে বিক্রি করো না” ।
১৯৩৩এ কলকাতা বিদ্যালয়ের সেনেট হলে জন্মশতবার্ষিকীর ভাষণে রবীন্দ্রনাথ রামমোহনকে প্রথম ‘ভারত পথিক’ বলে উল্লেখ করেছিলেন । ১৯৩৩ এ রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন –
“...... মৃত্যু অন্তরাল ভেদি দাও তব অন্তহীন দান
যাহা কিছু জরাজীর্ণ তাহাতে জাগাও নব প্রাণ” ।
Unlike · 

No comments:

Post a Comment