Tuesday, June 19, 2018

বৃন্দাবনে কৃষ্ণ লীলা। ঊমা মিস্ত্রী ১৯।০৬।২০১৮


    বৃন্দাবনে কৃষ্ণ লীলা।
       ঊমা মিস্ত্রী 
মধ্যযুগে বৃন্দাবনে এক
ব্যবসায়ী বাস করত যার ছিল একটি মিষ্টির
দোকান।
তার দোকানটি ছিল ঠিক বৃন্দাবনের
সবচেয়ে বিখ্যাত
মন্দির বাঙ্কেবিহারীর সামনে।
দোকানদার ভগবান
শ্রীকৃষ্ণের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত ছিল।সে
প্রতিদিন
খুব রাত করে দোকান বন্ধ করত কারন তার
মনের
মধ্যে ক্ষুদ্র একটা বাসনা ছিল কোন না
কোন দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে বিহার
করতে করতে তার
দোকানে আসবে এবং থাকে দর্শন দেবে।
তার এই
বাসনা নিয়ে বহু বছর পার করে দিল,একসময়
দোকানদার বৃদ্ধ হয়ে গেল কিন্তু তার মনের
আশা
সে ছাড়ল না।সে এখনো খুব রাত করে
দোকান
লাগাত এই আশায় কখন যে শ্রীকৃষ্ণ আসেন
ঠিক
নাই।প্রতিদিনের মত দোকানদার বহু রাত
পর্যন্ত
দোকানে বসে আছে। হঠাৎ একটা ছোট্ট
ছেলে এই
সাত আট বছরের হবে। মনে হচ্ছিল কোন ধনী
ব্যাক্তির
ছেলে। ধূতি পড়া,হাতে বালা, চুল
কুকরানো,দেখতে সুন্দর।তার দোকানের
দিকে এগিয়ে আসছে দোকানদার একটু
বিস্মিত হল এত রাতে কার ছেলে ঘরের
বাইরে রাস্তায় হাটছে।ছোট ছেলেটি
তার দোকানেই আসে
এবং দোকানদারের কাছে মতিচূর লাড্ডু
চায়।দোকানদার তার দোকানের ভেতরে
গিয়ে দেখল
মতিচূড় লাড্ডু নেই।তাই সে বালক টি কে
বলল রাত
হয়ে যাওয়ায় তার কাছে আর লাড্ডু নেই
তবে ছানার
মিষ্টি আছে তা নেবে কি না। বালকটি
রাজি হল ছানার
মিষ্টি নিতে। দোকানদারও তাকে
মিষ্টি টি দিল দোকানদার বালকটি কে
জিজ্ঞেস করল তোমার
কাছে কী টাকা আছে। বালকটি উত্তর দিল
না।দোকানদার ভাবল ছোট বালক তার
থেকে আর
টাকা নিয়ে আর কী করবে কতটুকু আর
মিষ্টি!
সে আর কিছু চাইল না। কিন্তু বালক এর মূল্য
দিতে চাইল,নিজের হাতের স্বর্ণের
বালা দিয়ে। কিন্তু দোকানদার রাজি হল
না এবং বলল তার কোন
মূল্য চাই না।অনেকক্ষন টানা পোড়ন চলল।
কিন্তু দোকানদার কোন মূল্য নিতে চাইল
না।তখন
বালকটি ছুড়ে মারল তার বালাটি
দোকানের ভেতরে।ঠিক তখনই দোকানদার
সেই বালাটি উঠাতে নিঁচু হল আর উঠে
দেখে বালকটি উধাও!!!!দূর দূর পর্যন্ত
তার দেখা নেই।কোথায় গেল সেই বালক
এই প্রশ্ন
এবং তার বালাটি নিয়ে সেই রাতে আর
ঘুমোতে
পারল না বৃদ্ধ দোকানদার।পরদিন সকালে
সম্পূর্ণ
বৃন্দাবনে ঘোষিত হল।বাঙ্কেবিহারী
মন্দিরের বিগ্রহের
হাতের স্বর্নের বালা চুরি হয়েছে।
বিগ্রহের হাতের
বালা আর নেই।এই বার্তা দোকানদারের
কানে এসেও
পৌছে। এই কথা শোনার পর দোকানদার
তৎক্ষনাত সেই বালাটি সাথে নিয়ে
বাঙ্কেবিহারীর পুরোহিতের
কাছে গেল।পুরোহিত কে বালাটি
দেখাল এবং সব
কথা খুলে বলল।পুরোহিত বলল এটিই
বাঙ্কেবিহারীর হাতের বালা!এরপর
দোকানদার বুঝতে পারল কাল রাতে যেই
ছেলেটি এসেছিল তা আর কেউ নয় স্বয়ং
অনাদির আদি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ।
দোকানদার কেঁদে ওঠে বাঙ্কেবিহারীর
চরণে গিয়ে পরল এবং আফসোস করল ভগবান
স্বয়ং তার দুয়ারে
আসল কিন্তু সে চিনতে পারল না।।
*****হরে কৃষ্ণ****

No comments:

Post a Comment