।।শ্রীখণ্ডের গোপীনাথ।।
নবদ্বীপের কাছে গঙ্গার ওপারে কাটোয়ার কাছে শ্রীখণ্ড বলে একটা গ্রাম আছে। অতি প্রাচীন অখ্যাত একটা গ্রাম। আজ থেকে প্রায় পাঁচশ বছর আগেকার কথা। মহাপ্রভুর প্রায় সমসাময়িক। সেই গ্রামের তৎকালীন বিখ্যাত কবিরাজ ছিলেন মুকুন্দ রায়। তিনি ছিলেন একজন সদাচারী ব্রাহ্মণ বৈষ্ণব। বাড়িতে তার প্রতিষ্ঠিত গৃহদেবতা কষ্টিপাথরের গোপীনাথ। প্রতিদিন ভোরে উঠে মুকুন্দ কবিরাজ স্নান সেরে গোপীনাথের সেবা পুজো সেরে তারপর রুগী দেখতে বসতেন। আর ঈশ্বরের কৃপায় কবিরাজ মশাইএর অদ্ভুত হাতযশ ছিল। প্রায় সমস্ত রোগীই তার ওষুধ সেবন করে ভাল হয়ে যেত।
এইরকম একদিন মুকুন্দ কবিরাজ স্নান সেরে ঠাকুর ঘরে ঢুকেছেন , এমন সময় একটি বাচ্চা ছেলে কোথা থেকে ছুটতে ছুটতে এসে আকুল স্বরে ডাকছে, কোবরেজ মশাই, ও কোবরেজ মশাই ........"
মুকুন্দ কবিরাজ ঠাকুর ঘর থেকে বের হয়ে ছেলেটিকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, "কে বাবা তুমি? কি হয়েছে?"
ছেলেটি বলল, "কোবরেজ মশাই, আমি পাশের গাঁয়ে থাকি। আমার নাম গুরুচরণ। আমার বাবার খুব জ্বর। আপনি এক্ষুনি চলুন।"
কবিরাজ মশাই বললেন, "তা কি করে হয় বাবা। সবে আমি আমার গোপীনাথের চরণে তুলসী দিয়েছি মাত্র। একটু দাঁড়াও, প্রভুকে সেবা দিয়েই আমি যাব।"
ছেলেটা আকুল স্বরে বলল, "না কোবরেজ মশাই। অত দেরী করলে বাবাকে বাঁচানো যাবে না। গোপীনাথ পরেও সেবা নিতে পারবেন। আপনি দয়া করে এক্ষুণি চলুন। আপনার দুটি পায়ে পড়ি কোবরেজ মশাই ......।"
ছেলেটার আকুতি দেখে কবিরাজ মশাইএর খুব মায়া হল। উপায়ান্তর না দেখে মুকুন্দ কবিরাজ তার নিজের পাঁচ বছরের ছেলেকে হাঁক পাড়লেন, " রঘুনাথ! ও রঘুনাথ "
ঘরের ভেতর থেকে ছোট্ট রঘুনাথ বেরিয়ে এল। কবিরাজ মশাই বললেন, "বাবা রঘু! আমি এই ছেলেটির সাথে পাশের গাঁয়ে যাচ্ছি, ফিরতে দেরী হতে পারে। তুই বাবা স্নান সেরে গোপীনাথের সেবাটা দিয়ে দিস।"
রঘুনাথ তো মহা খুশি। এই প্রথম গোপীনাথের সেবার সুযোগ পেয়েছে। আনন্দে আটখানা হয়ে বাবাকে বলছে, তুমি নিশ্চিন্ত মনে যাও বাবা। গোপীনাথকে আমি আজ সেবা দেব। কবিরাজ মশাই চলে গেলেন।
রঘুনাথ তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ধুতি পড়ে মায়ের কাছে গিয়ে বলছে, "মা বাবা আজ আমায় গোপীনাথের সেবা দিতে বলে গেছেন। তুমি তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে দাও।"
মা বললেন, “এই ত বাবা, এখুনি দিচ্ছি।” --এই বলে কাঁসার থালায় করে বেশ কিছু নাড়ু এনে রঘুনাথের হাতে দিয়ে বললেন, “ভাল করে গোপীনাথকে সেবা দিবি। তিনি যেন গ্রহণ করেন।"
সরল বাচ্চা ছেলে ভাবলে গোপীনাথ বোধহয় সত্যি সত্যিই খান। যাই হোক ঠাকুর ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গোপীনাথকে থালাটা এগিয়ে দিয়ে বলছে, “দেখ গোপীনাথ! আজ মা তোমায় নাড়ু দিয়েছে। জান তো গোপীনাথ! মা কিন্তু গেল হপ্তায় এগুলো নিজে হাতে বানিয়েছে, আমি দেখেছি। নাও আর দেরী কোর না। জানি খুব ক্ষিদে পেয়েছে তোমার। নাও শিগগির খেয়ে নাও ত দেখি।”
কিন্তু কই? গোপীনাথ ত খাচ্ছে না!
“ওওও .... বুঝেছি। তোমায় বাবার মত চন্দন দিইনি বলে খাচ্ছ না? আচ্ছা বেশ। এই নাও তোমায় চন্দন পরিয়ে দিচ্ছি।”
চন্দন পরিয়ে আবার বলছে, “নাও গোপীনাথ! নাড়ু খাও।”
তবুও গোপীনাথ খাচ্ছেনা!
“ওওও বুঝেছি, বাবা তোমায় বাতাস করে। তাই না? দাঁড়াও।”
এই বলে গোপীনাথকে পাখা দিয়ে বাতাস করছে আর বলছে, “নাও গোপীনাথ এবার খাও।”
না তো, এখনও তো গোপীনাথ খাচ্ছেনা!
এইরকম একদিন মুকুন্দ কবিরাজ স্নান সেরে ঠাকুর ঘরে ঢুকেছেন , এমন সময় একটি বাচ্চা ছেলে কোথা থেকে ছুটতে ছুটতে এসে আকুল স্বরে ডাকছে, কোবরেজ মশাই, ও কোবরেজ মশাই ........"
মুকুন্দ কবিরাজ ঠাকুর ঘর থেকে বের হয়ে ছেলেটিকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, "কে বাবা তুমি? কি হয়েছে?"
ছেলেটি বলল, "কোবরেজ মশাই, আমি পাশের গাঁয়ে থাকি। আমার নাম গুরুচরণ। আমার বাবার খুব জ্বর। আপনি এক্ষুনি চলুন।"
কবিরাজ মশাই বললেন, "তা কি করে হয় বাবা। সবে আমি আমার গোপীনাথের চরণে তুলসী দিয়েছি মাত্র। একটু দাঁড়াও, প্রভুকে সেবা দিয়েই আমি যাব।"
ছেলেটা আকুল স্বরে বলল, "না কোবরেজ মশাই। অত দেরী করলে বাবাকে বাঁচানো যাবে না। গোপীনাথ পরেও সেবা নিতে পারবেন। আপনি দয়া করে এক্ষুণি চলুন। আপনার দুটি পায়ে পড়ি কোবরেজ মশাই ......।"
ছেলেটার আকুতি দেখে কবিরাজ মশাইএর খুব মায়া হল। উপায়ান্তর না দেখে মুকুন্দ কবিরাজ তার নিজের পাঁচ বছরের ছেলেকে হাঁক পাড়লেন, " রঘুনাথ! ও রঘুনাথ "
ঘরের ভেতর থেকে ছোট্ট রঘুনাথ বেরিয়ে এল। কবিরাজ মশাই বললেন, "বাবা রঘু! আমি এই ছেলেটির সাথে পাশের গাঁয়ে যাচ্ছি, ফিরতে দেরী হতে পারে। তুই বাবা স্নান সেরে গোপীনাথের সেবাটা দিয়ে দিস।"
রঘুনাথ তো মহা খুশি। এই প্রথম গোপীনাথের সেবার সুযোগ পেয়েছে। আনন্দে আটখানা হয়ে বাবাকে বলছে, তুমি নিশ্চিন্ত মনে যাও বাবা। গোপীনাথকে আমি আজ সেবা দেব। কবিরাজ মশাই চলে গেলেন।
রঘুনাথ তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ধুতি পড়ে মায়ের কাছে গিয়ে বলছে, "মা বাবা আজ আমায় গোপীনাথের সেবা দিতে বলে গেছেন। তুমি তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে দাও।"
মা বললেন, “এই ত বাবা, এখুনি দিচ্ছি।” --এই বলে কাঁসার থালায় করে বেশ কিছু নাড়ু এনে রঘুনাথের হাতে দিয়ে বললেন, “ভাল করে গোপীনাথকে সেবা দিবি। তিনি যেন গ্রহণ করেন।"
সরল বাচ্চা ছেলে ভাবলে গোপীনাথ বোধহয় সত্যি সত্যিই খান। যাই হোক ঠাকুর ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গোপীনাথকে থালাটা এগিয়ে দিয়ে বলছে, “দেখ গোপীনাথ! আজ মা তোমায় নাড়ু দিয়েছে। জান তো গোপীনাথ! মা কিন্তু গেল হপ্তায় এগুলো নিজে হাতে বানিয়েছে, আমি দেখেছি। নাও আর দেরী কোর না। জানি খুব ক্ষিদে পেয়েছে তোমার। নাও শিগগির খেয়ে নাও ত দেখি।”
কিন্তু কই? গোপীনাথ ত খাচ্ছে না!
“ওওও .... বুঝেছি। তোমায় বাবার মত চন্দন দিইনি বলে খাচ্ছ না? আচ্ছা বেশ। এই নাও তোমায় চন্দন পরিয়ে দিচ্ছি।”
চন্দন পরিয়ে আবার বলছে, “নাও গোপীনাথ! নাড়ু খাও।”
তবুও গোপীনাথ খাচ্ছেনা!
“ওওও বুঝেছি, বাবা তোমায় বাতাস করে। তাই না? দাঁড়াও।”
এই বলে গোপীনাথকে পাখা দিয়ে বাতাস করছে আর বলছে, “নাও গোপীনাথ এবার খাও।”
না তো, এখনও তো গোপীনাথ খাচ্ছেনা!
এভাবেই চলছে অনুনয় বিনয়। কিন্তু গোপীনাথের কোন সারা নেই। অবশেষে অধৈর্য হয়ে বালক রঘুনাথ বলছে, " ও আমি দিচ্ছি বলে খাচ্ছ না? খেতে হবেনা তোমার। এই আমি তোমার চরণে মাথা কুটে মরব। এই বলে অভিমানী রঘুনাথ গোপীনাথের চরণে মাথা ঠুকতে শুরু করল। ঠুকতে ঠুকতে ছোট্ট শরীরের নরম চামড়া কেটে গিয়ে রক্ত পরতে শুরু করেছে। হঠাত্ এক চোখধাঁধানো জ্যোতিতে ঠাকুর ঘর আলোকিত। কষ্টিপাথরের গোপীনাথের ভেতর থেকে দুটি অপ্রাকৃত হাত বেড়িয়ে এল , " কই রে রঘুনাথ! নাড়ু দে ...."
নিজের চোখকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না রঘুনাথ। নির্বাক হয়ে বিস্ফারিত নয়নে তাকিয়ে আছে রঘুনাথ চিন্ময় গোপীনাথের ভুবন মোহন রূপের দিকে। আহা! কি রূপ!!!
"কি হল রঘু! নাড়ু দিবিনা?"
“হ্যাঁ হ্যাঁ”, সম্বিত ফিরে পেল রঘুনাথ। "গোপীনাথ! তুমি এসেছ ! আঃ, কি সুন্দর দেখতে তুমি। নাও এই নাও,” বলে একটা নাড়ু গোপীনাথের সামনে ধরল। গোপীনাথ হাত বাড়িয়ে নাড়ুটি গ্রহণ করলেন।
“নাও আর একটা খাও”--গোপীনাথ খেলেন।
“এই নাও, আর একটা।”
রঘু দিয়ে যাচ্ছে, গোপীনাথ খেয়ে যাচ্ছেন।
হটাৎ গোপীনাথ বললেন, "রঘু ! ও দুটো থাক। ও দুটো তোর জন্য।"
হুঁশ ফিরল রঘুনাথের। থালায় মাত্র দুটো নাড়ু পরে আছে। ততক্ষণে গোপীনাথ আবার সেই কষ্টিপাথরের।
এদিকে ততক্ষণে মুকুন্দ কবিরাজ ফিরে এসেছেন। ডাকছেন, রঘু! ও রঘু! কোথায় গেলি বাবা?
ঠাকুর ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে এল রঘুনাথ। থালায় দুটো নাড়ু। মা দেখে বলছেন, “একি রঘু! বাকি নাড়ু কোথায়?"
"গোপীনাথ খেয়েছে মা"।
"ছিঃ বাবা! গোপীনাথের নামে মিথ্যে বলতে নেই। পাপ হয়।" মুকুন্দ কবিরাজ বললেন।
"আমি মিথ্যে বলছি না বাবা। বিশ্বাস কর।" এই বলে রঘুনাথ আদ্যপান্ত ঘটনা বর্ননা করল।
সব শুনে মুকুন্দ কবিরাজ ভাবলেন ছেলে মিথ্যে বলছে। লোভে পড়ে নাড়ু খেয়ে এখন গোপীনাথের নামে মিথ্যে বলছে। কিন্তু তিনি মুখে কিছু বললেন না।
পরদিন সকালে আবার রঘুনাথকে ডাকলেন। ডেকে বললেন, "বাবা রঘু ! আমাকে একটা জরুরী কাজে বেরুতে হচ্ছে। তুই বাবা কালকের মত গোপীনাথের পুজোটা দিয়ে দিস। ক ই গো! শুনছ, রঘুকে আজকেও নাড়ু দিয়েই সেবা দেওয়াবে।"......বলে চলে গেলেন।
কিন্তু গেলেন না। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এলেন। ততক্ষণে রঘুনাথ ঠাকুর ঘরে ঢুকে পড়েছে। আবার সেই সাধ্য সাধনা। বাইরে দাঁড়িয়ে চুপটি করে সব শুনছেন মুকুন্দ কবিরাজ ও রঘুর মা। হঠাত্ সব চুপচাপ। ঠাকুর ঘরে কোন সাড়া শব্দ নেই। কবিরাজ মশাই বুঝলেন, এইবার রঘুনাথ চুপ করে বসে নাড়ু খাচ্ছে। পা টিপে টিপে দরজার সামনে গেলেন কবিরাজ মশাই। এবং হটাৎ হাট করে খুলে দিলেন দরজা। বিস্ফারিত চোখে দেখলেন একটা জ্যোতি যেন হটাৎ মিলিয়ে গেল আর গোপীনাথের হাতে বাঁশীর বদলে ধরা রয়েছে একটি নাড়ুর অর্ধেকটি এবং সেটিও শীলায় পরিনত হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে রঘুনাথ দাঁড়িয়ে আছে।
জড়িয়ে ধরলেন বাবা ছেলেকে। কাঁদতে কাঁদতে বললেন "বাবা রঘু! তুই ধন্য। ধন্য তোর ভক্তি, তোর সরল বিশ্বাস। আমি এতদিন নিয়ম নিষ্ঠাভরে প্রভুর সেবা করে যা পাইনি ,তুই শুধু তোর সরল বিশ্বাস আর প্রেমের জোড়ে তা পেয়েছিস। তোকে মিথ্যেবাদী ভেবেছিলাম। ধিক্ আমাকে ধিক্।”
"কি হল রঘু! নাড়ু দিবিনা?"
“হ্যাঁ হ্যাঁ”, সম্বিত ফিরে পেল রঘুনাথ। "গোপীনাথ! তুমি এসেছ ! আঃ, কি সুন্দর দেখতে তুমি। নাও এই নাও,” বলে একটা নাড়ু গোপীনাথের সামনে ধরল। গোপীনাথ হাত বাড়িয়ে নাড়ুটি গ্রহণ করলেন।
“নাও আর একটা খাও”--গোপীনাথ খেলেন।
“এই নাও, আর একটা।”
রঘু দিয়ে যাচ্ছে, গোপীনাথ খেয়ে যাচ্ছেন।
হটাৎ গোপীনাথ বললেন, "রঘু ! ও দুটো থাক। ও দুটো তোর জন্য।"
হুঁশ ফিরল রঘুনাথের। থালায় মাত্র দুটো নাড়ু পরে আছে। ততক্ষণে গোপীনাথ আবার সেই কষ্টিপাথরের।
এদিকে ততক্ষণে মুকুন্দ কবিরাজ ফিরে এসেছেন। ডাকছেন, রঘু! ও রঘু! কোথায় গেলি বাবা?
ঠাকুর ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে এল রঘুনাথ। থালায় দুটো নাড়ু। মা দেখে বলছেন, “একি রঘু! বাকি নাড়ু কোথায়?"
"গোপীনাথ খেয়েছে মা"।
"ছিঃ বাবা! গোপীনাথের নামে মিথ্যে বলতে নেই। পাপ হয়।" মুকুন্দ কবিরাজ বললেন।
"আমি মিথ্যে বলছি না বাবা। বিশ্বাস কর।" এই বলে রঘুনাথ আদ্যপান্ত ঘটনা বর্ননা করল।
সব শুনে মুকুন্দ কবিরাজ ভাবলেন ছেলে মিথ্যে বলছে। লোভে পড়ে নাড়ু খেয়ে এখন গোপীনাথের নামে মিথ্যে বলছে। কিন্তু তিনি মুখে কিছু বললেন না।
পরদিন সকালে আবার রঘুনাথকে ডাকলেন। ডেকে বললেন, "বাবা রঘু ! আমাকে একটা জরুরী কাজে বেরুতে হচ্ছে। তুই বাবা কালকের মত গোপীনাথের পুজোটা দিয়ে দিস। ক ই গো! শুনছ, রঘুকে আজকেও নাড়ু দিয়েই সেবা দেওয়াবে।"......বলে চলে গেলেন।
কিন্তু গেলেন না। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এলেন। ততক্ষণে রঘুনাথ ঠাকুর ঘরে ঢুকে পড়েছে। আবার সেই সাধ্য সাধনা। বাইরে দাঁড়িয়ে চুপটি করে সব শুনছেন মুকুন্দ কবিরাজ ও রঘুর মা। হঠাত্ সব চুপচাপ। ঠাকুর ঘরে কোন সাড়া শব্দ নেই। কবিরাজ মশাই বুঝলেন, এইবার রঘুনাথ চুপ করে বসে নাড়ু খাচ্ছে। পা টিপে টিপে দরজার সামনে গেলেন কবিরাজ মশাই। এবং হটাৎ হাট করে খুলে দিলেন দরজা। বিস্ফারিত চোখে দেখলেন একটা জ্যোতি যেন হটাৎ মিলিয়ে গেল আর গোপীনাথের হাতে বাঁশীর বদলে ধরা রয়েছে একটি নাড়ুর অর্ধেকটি এবং সেটিও শীলায় পরিনত হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে রঘুনাথ দাঁড়িয়ে আছে।
জড়িয়ে ধরলেন বাবা ছেলেকে। কাঁদতে কাঁদতে বললেন "বাবা রঘু! তুই ধন্য। ধন্য তোর ভক্তি, তোর সরল বিশ্বাস। আমি এতদিন নিয়ম নিষ্ঠাভরে প্রভুর সেবা করে যা পাইনি ,তুই শুধু তোর সরল বিশ্বাস আর প্রেমের জোড়ে তা পেয়েছিস। তোকে মিথ্যেবাদী ভেবেছিলাম। ধিক্ আমাকে ধিক্।”
আজও শ্রীখণ্ডে গোপীনাথ মন্দিরে বিরাজ করছে সেই কষ্টিপাথরের গোপীনাথ বিগ্রহ যার হাতে আজও বাঁশীর বদলে বিরাজিত পাথরের অর্ধ নাড়ু। সারা ভারতবর্ষে আর কোথাও এমন কৃষ্ণবিগ্রহ নেই! (#sumana)
(এটা গল্প নয়। ইতিহাস)
।।শ্রীখণ্ডের গোপীনাথ।।
নবদ্বীপের কাছে শ্রীখণ্ড বলে একটা জায়গা আছে
No comments:
Post a Comment