গল্প হলেও সত্যি

গল্প মানুষের ভাবনার প্রতিবিম্ব , কল্পনার চিত্র । এক এক রত্ন কে সুচারু রূপে গাল্পিক তার মায়াবী হাতে গল্পের সৌন্দর্য বৃদ্ধির চেষ্টায় সঠিক ভাবে স্থাপন করেন যাতে পাঠক আকৃষ্ট হন তার গল্পের প্রতি ।

Friday, June 29, 2018

সংস্কৃত তে अल्वारनाथ , বাংলায় অলারনাথ ঠাকুর বিষ্ণু র মূর্তি । এই মূর্তি সম্পূর্ণ কষ্টি পাথরের তৈরি । লোক কথায় আছে এই বিগ্রহ দর্শন জগন্নাথ দর্শনের সমান মূল্য রাখে যখন তিন ঠাকুর অণসর ঘরে অধিষ্ঠান করেন



     


      

সংস্কৃত তে अल्वारनाथ , বাংলায় অলারনাথ ঠাকুর বিষ্ণু র মূর্তি । এই মূর্তি সম্পূর্ণ কষ্টি পাথরের তৈরি । লোক কথায় আছে এই বিগ্রহ দর্শন জগন্নাথ দর্শনের সমান মূল্য রাখে যখন তিন ঠাকুর অণসর ঘরে অধিষ্ঠান করেন ।কারণ এখানেই জগন্নাথ ভক্তদের দর্শন দেন এই ১৫ দিন স্নান পুর্ণিমার পরের দিন থেকে আষাঢ় শুক্লা প্রতিবদ পর্যন্ত । কৃষ্ণ পক্ষে অলারনাথ ঠাকুরের দর্শন স্বয়ং জগন্নাথের দর্শনের সঙ্গে সমান। 
পুরী থেকে প্রায় ২৪ কিমি দক্ষিণে ব্রহ্মগিরি নামে একটি ছোট্ট যায়গা আছে। সেখানে ভগবান বিষ্ণুর মন্দির প্রতিষ্ঠিত  
তাঁর নাম অলারনাথ। জগন্নাথের স্নান যাত্রার পর তিন ঠাকুর অণসর ঘরে ১৫ দিন অধিষ্ঠান করেন। ওনাদের জর হয় তাই ভক্তদের প্রভু দর্শন দেন না। এই সময় কোন ভোগ হয় না। এই সময় জগন্নাথের দর্শনের সমান পুণ্য অলারনাথ দর্শনে সম্ভব কারন প্রভু ওখানেই অবস্থান করেন দর্শনাভিলাষী ভক্তদের জন্য। আষাঢ় কৃষ্ণপক্ষে অলারনাথ দর্শন করতে লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় অলারনাথ মন্দির প্রাঙ্গণে। এই মন্দির ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। 
এই মন্দির দর্শনে তামিলনাড়ুর সন্ন্যাসী রামানুজচারিয়া এসেছিলেন। চৈতন্য মহাপ্রভু যিনি কিনা জগন্নাথের পরম ভক্ত এবং লোক কথায় কথিত আছে চৈতন্য মহাপ্রভু প্রত্যেক দিন জগন্নাথের দর্শনে গৌড় বাট সাহির রাস্তা দিয়ে জগন্নাথ মন্দিরে যেতেন। কিন্তু জগন্নাথ যখন অণসর ঘরে থাকেন তখন স্বপ্নাদেশ হয় চৈতন্য মহা প্রভুকে ওই অলারনাথ দর্শনের জন্য এবং তার পর থেকে প্রভু ব্রহ্মগিরি পদব্রজে গমন করেন এবং প্রভু অলারনাথের দর্শন করেন। এই অলারনাথ মন্দির প্রাঙ্গণে এক শিলাতে মহাপ্রভু শয়ন করতেন । সেখানে তাঁর শরীরের চিহ্ন এখন ও আছে।
অলারনাথ মন্দিরের পায়েস ভোগ অত্যন্ত সুস্বাদু । ভক্তরা এই পায়েস ভোগ সেবনের জন্য ঘণ্টা ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ান । এ ছাড়া খিচুড়ি , পাকা কলার এক রকমের বড়া এবং নানা রকমের পিঠা ভোগ পাওয়া যায়।
মন্দির সকাল ৬ থেকে রাত ৮.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে। সকালে বাল ভোগ হয় । দুপুরে অন্ন , ডাল, মহুর , বেসর এবং পায়েস ইত্যাদি ভোগ অর্পণ করা হয় । ভক্তরা এই ভোগ পেতে পারেন বেলা ১ টা থেকে । এই সময় প্রশাসনের প্রায় কর্ম কর্তা ব্রহ্ম-গিরিতে উপস্থিত থেকে দর্শনাভিলাষী ভক্তদের সু শৃঙ্খলিত ভাবে দর্শন করান। রাত্রে পিঠা ভোগ সমর্পণ করা হয়।
আষাঢ় শুক্লা দ্বিতীয়া থেকে মন্দির আবার বন্দ থাকে কারন জগন্নাথের রথ যাত্রা আরম্ভ হয়।

Posted by গল্পগচ্ছ at 3:33 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

Thursday, June 28, 2018

জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা— আগামীকাল মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উৎসব। উৎসবের কিছু কথা--



 
 সুমনা সাহা 
জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা—
আগামীকাল মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উৎসব। উৎসবের কিছু কথা--
মহাপ্রভু জগন্নাথের পরম ভক্ত ছিলেন গুজরাতের সাধক পুরুষ শ্রদ্ধেয় গণপতি ভট্ট৷ তিনি শুধুমাত্র বিষ্ণুর পুজো-আরাধনা করতেন৷ তবে গণপতি ভট্ট-র একই সঙ্গে বিশ্বাস ছিল, প্রভু জগন্নাথ-ই পরম ব্রহ্ম৷ তাঁর শ্রীচরণে ঠাঁই পেলে দেহবন্ধন থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া যাবে৷ যেমন ভাবনা, তেমন কাজ৷ যাত্রা শুরু করলেন পুরীধামের উদ্দেশে৷ পথে পুরী শহরের কাছে আঁধারনালার কাছে মহাপ্রভুকে দর্শন করে ফিরে আসা কয়েকজন ভক্তর সঙ্গে দেখা হল৷ গণপতি জানতে চাইলেন, তাঁরা কেউ জগন্নাথকে দর্শন করেছেন কি না? সবাই একবাক্যে মহাপ্রভু দর্শনের অপূর্ব অভিজ্ঞতার কথা যেমন জানালেন, তেমনই বললেন, যে যা মনোবাসনা নিয়ে জগন্নাথদেবের কাছে যান তা পূর্ণ হয়৷ কারণ জগন্নাথদেব হলেন স্বয়ং বাঞ্ছা কল্পতরু৷
পুরীর মন্দিরে যেদিন গণপতি ভট্ট পৌঁছলেন সেদিন ছিল মহাপ্রভুর স্নানযাত্রার দিন৷ দেখলেন সিংহদুয়ারের কাছে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা ও সুদর্শনকে সিংহাসনে বসিয়ে স্নান করানো হচ্ছে৷ ঘড়া ভর্তি জল নিয়ে এসে দারুব্রহ্মকে স্নানের সেই অপূর্ব পুণ্যমুহূর্ত দর্শন করে গণপতি কিছুটা তৃপ্ত হলেন ঠিকই, কিন্তু মনোবাসনা সম্পূর্ণ পূর্ণ হল না৷ কারণ গণপতির ধারণা ছিল জগন্নাথের রূপ হবে গণেশের মূর্তির মতো৷ অর্থাৎ হাতির মুখের মতো৷ স্বভাবতই সেই রূপে দেখতে না পেয়ে কিছুটা মানসিক ধাক্কা খেলেন গণপতি ভট্ট৷ ফিরে চললেন নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
ভক্ত গণপতির মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন অন্তর্যামী স্বয়ং জগন্নাথ মহাপ্রভু৷ মন্দিরের দায়িত্বে থাকা ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজার বংশধরকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে বললেন, “ডেকে আনো ওই ভক্তকে৷ ও আমার হস্তীমুখ রূপ দেখতে পাবে৷” রাজপ্রতিনিধি গণপতিকে ডেকে আনলেন৷ সেদিন মহাপ্রভুর ভোগগ্রহণের সময় চলছিল৷ ভট্ট দরজার ফাঁক দিয়ে দেখলেন, স্বয়ং মহাপ্রভু শুঁড় দিয়ে রাঁধা ভোগ গ্রহণ করছেন৷ দেবতার এই নয়া রূপ হস্তীমুখ দর্শন করে অভিভূত ভট্ট দেবতার পায়ে নিজেকে সমর্পণ করেন৷ শোনা যায়, জগন্নাথের দেহে তিনি লীন হয়ে গিয়েছিলেন৷
গণপতি ভট্টর শেষ ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে প্রতিবছর স্নানযাত্রায় স্নানের শেষে আমরা সবাই মহাপ্রভু জগন্নাথ ও বলরামকে হস্তীবেশে সাজিয়ে দিই৷ আর দেবী সুভদ্রার মুখ পদ্মফুলে ঢেকে রাখি৷ মন্দিরের পুরোহিত থেকে শুরু করে ভক্তরা সবাই স্নানযাত্রায় দেবতার এই হস্তীরূপকে ‘গণেশ অভিষেক’ নামে ডেকে থাকেন৷
ভগবান জগন্নাথ দেবের আবির্ভাব তিথিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথ দেবের এক বিশেষ স্নান যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
স্কন্ধ পুরাণ অনুসারে রাজা ইন্দ্রদুম্ন যখন জগন্নাথ দেবের কাঠের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করলেন তখন থেকে এই স্নান যাত্রার উৎসব শুরু। স্নান যাত্রার দিনটিকে জগন্নাথ দেবের আবির্ভাব তিথি বা জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। স্নান যাত্রার আগের দিন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা দেবী এবং সুদর্শন দেবকে বেদী থেকে বিশেষ ভাবে তৈরি করা স্নান বেদীতে নিয়ে আসা হয়। পুরীর মন্দির প্রাঙ্গনে বিশেষ ভাবে তৈরি করা এই মণ্ডপকে বলা হয় স্নান মণ্ডপ। এটা এত উঁচু যে মন্দির প্রাঙ্গনের বাইরে থেকেও বেদিতে উপবিষ্ট বিগ্রহ সমূহ অবলোকন করা যায়।
অনুষ্ঠানের দিন স্নান মণ্ডপকে ঐতিহ্যবাহী ফুল, বাগান ও গাছের চিত্রকল্প দ্বারা সজ্জিত করা হয়। তোরণ এবং পতাকা দ্বারা সজ্জিত করা হয়। জগন্নাথ,বলরাম ও সুভদ্রা দেবীর বিগ্রহ ফুল দিয়ে সাজানো হয়। এর পর বিগ্রহের উদ্দশ্যে ধুপ, ধুনা অর্পণ করা হয়।
পুরীতে স্নানের জন্য সোনার তৈরি এক ধরনের কুয়া থেকে জল আনা হয়। জল আনার সময় পুরোহিতরা তাদের মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন যাতে জল তাদের মুখনিঃসৃত কোন কিছু দ্বারা এমনকি তাদের নিঃশ্বাস দ্বারা দূষিত না হয়।
স্নান মহোৎসবের পূর্বে জগন্নাথ,বলরাম এবং সুভদ্রা দেবীকে সিল্কের কাপড় দ্বারা আবৃত করা হয় এবং তারপর লাল এক ধরনের পাউডার দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হয়। ১০৮ টি স্বর্ণ পাত্র জল দ্বারা পূর্ণ থাকে।এই জল দ্বারা অভিষেক করা হয়। অভিষেকের সময় বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ,কীর্তন এবং শঙ্খ বাজানো হয়।
এরপর জগন্নাথ দেব এবং বলরাম দেবকে হাতি বেশে সাজানো হয়। এই সময় সুভদ্রা দেবীকে পদ্ম সাজে সাজানো হয়। স্নান যাত্রা উৎসবের পর ১৫ দিন ভগবানকে জনসাধারণ থেকে দূরে রাখা হয়। এই ১৫ দিন মন্দিরে কোন অনুষ্ঠান করা নিষেধ। এই সময় ভগবান জগন্নাথ , বলরাম এবং সুভদ্রা দেবীকে রতন বেদী নামে এক বিশেষ বেদীতে রাখা হয়। এই সময়কে বলা হয় অনাবাসর কাল মানে পূজা করার জন্য অযোগ্য সময়। স্নান করানোর ফলে বিগ্রহ সমূহ বিবর্ণ হয়ে যায়। এই ১৫ দিনে জগন্নাথ দেবকে আগের সাজে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৬ তম দিনে জগন্নাথ দেবকে আবার সবার দর্শনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
(তথ্যসূত্রঃ--গণমাধ্যম)

Copy From : http://www.festivalsdatetime.co.in/2016/04/2018-Deva-Snana-Yatra-of-Lord-Jagannath-Deva-Snana-Purnima-2018.html#ixzz5JhuBUEhW
#NOTE : DON'T PASTE THIS CONTENT TO YOUR BLOG/WEBSITE, #FestivalsDateTIme
Deva Snana Yatra of Lord Jagannath 2018 Date & Time in India, देवा स्नान यात्रा 2018 तारीख और समय, দেবা স্নান যাত্রা ২০১৮ তারিখ এবং সময়। Deva Snana Purnima 2018 Date & Time. देवा स्नान पूर्णिमा 2018 तारीख और समय, দেবা স্নান পূর্নিমা ২০১৮ তারিখ এবং সময়। 

About Deva Snana Yatra : The Snana Yatra is a bathing festival celebrated on the Purnima (full moon day) of the Hindu month of Jyeshtha. It is an important festival of the Jagannath devotees. This is the first occasion in the year as per the Hindu calendar, when the deities Jagannath, Balabhadra, Subhadra, Sudarshan, and Madanmohan are brought out from the Jagannath Temple (Puri) and taken in a procession to the Snana Bedi. There they are ceremonially bathed and decorated for a public audience with the devotees. It is a belief among devotees of Lord Jagannath that if they make a pilgrimage to see the deity on this day, they would be cleansed of all of their sins. Hundreds of thousands of devotees visit the temple on the occasion.The Skanda Purana mentions that King Indradyumna arranged this ceremony for the first time when the idols of the deities were first installed.


 Copy From : http://www.festivalsdatetime.co.in/2016/04/2018-Deva-Snana-Yatra-of-Lord-Jagannath-Deva-Snana-Purnima-2018.html#ixzz5Jhtt3eLg #NOTE : DON'T PASTE THIS CONTENT TO YOUR BLOG/WEBSITE, #FestivalsDateTIme
Deva Snana Yatra of Lord Jagannath 2018 Date & Time in India, देवा स्नान यात्रा 2018 तारीख और समय, দেবা স্নান যাত্রা ২০১৮ তারিখ এবং সময়। Deva Snana Purnima 2018 Date & Time. देवा स्नान पूर्णिमा 2018 तारीख और समय, দেবা স্নান পূর্নিমা ২০১৮ তারিখ এবং সময়। 

About Deva Snana Yatra : The Snana Yatra is a bathing festival celebrated on the Purnima (full moon day) of the Hindu month of Jyeshtha. It is an important festival of the Jagannath devotees. This is the first occasion in the year as per the Hindu calendar, when the deities Jagannath, Balabhadra, Subhadra, Sudarshan, and Madanmohan are brought out from the Jagannath Temple (Puri) and taken in a procession to the Snana Bedi. There they are ceremonially bathed and decorated for a public audience with the devotees. It is a belief among devotees of Lord Jagannath that if they make a pilgrimage to see the deity on this day, they would be cleansed of all of their sins. Hundreds of thousands of devotees visit the temple on the occasion.The Skanda Purana mentions that King Indradyumna arranged this ceremony for the first time when the idols of the deities were first installed.
source:wikipedia

Here is the date of Deva Snana Yatra :

Name of Festivals
Posted by গল্পগচ্ছ at 1:39 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

অর্ক ক্ষেত্র কোণার্ক ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী




অর্ক ক্ষেত্র কোণার্ক
ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী
কোণার্ক সূর্য মন্দির এর অস্তিত্ব সম্পূর্ণ থাকলে সেটি সেভেন ওয়ান্ডার্স (সপ্ত আশ্চর্য) এর মধ্যে একটি হতো, বা তালিকাটি পরিবর্ধিত হয়ে এইট ওয়ান্ডার্স বলা হত এতে সন্দেহ নেই। সংস্কৃততে কোণ+অর্ক=কোণার্ক। কোণ অর্থাৎ কোণা বা সূর্যের বিভিন্ন কোণের অবস্থান, অর্ক অর্থাৎ সূর্য। এই মন্দিরটি সূর্যের বিভিন্ন অবস্থানে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ বহন করে। এটি সূর্যের মন্দির ছিল। এখনও এর ভগ্নাবশেষ যা আছে, তা সমস্ত পর্যটক দের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু। পৃথিবীর সমস্ত প্রান্ত থেকে সারা বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক কোণার্ক সূর্য মন্দির দেখতে আসেন এর ভাস্কর্য ও কলা কীর্তি দেখার জন্য।
কোণার্কের সূর্য মন্দিরের ইতিহাসঃ-
এই মন্দিরের টানে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসেন অপূর্ব ভাস্কর্য, প্রস্তরের উপর কারুকার্য এবং নৃত্যাঙ্গনাদের অপূর্ব শৈলীতে নৃত্যের প্রস্তর মূর্তি দেখতে। খজুরাহ এবং কোণার্ক দুটোই ভারতবর্ষের অপূর্ব সৃষ্টি। তবে কোণার্কের বৈচিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। ১৩শ শতাব্দীর এই অদ্ভুত কীর্তিকে ইংরাজিতে Black Pagoda বলা হয়। ১২৫০ শতাব্দীতে পূর্ব গঙ্গ বংশের রাজা লাঙ্গুড়া নৃসিংহদেব এই মন্দির নির্মাণ করান। প্রবাদ আছে, ১২০০ প্রস্তর শিল্পী ওই সূর্য মন্দির নির্মানে নিযুক্ত হন রাজার দ্বারা। প্রধান মন্দিরটিতে ৭ টি ঘোড়ার উপর সূর্য মূর্তি নির্মিত হয়েছিল। এই সাতটি ঘোড়া সপ্তাহের সাতটি দিনের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত। মন্দির গর্ভগৃহে রাখা সূর্য দেবতার মুখে এসে পড়ত সূর্যর প্রথম কিরণ। বারো জোড়া ঘোড়ার উপর ওই মন্দির নির্মান হয়। প্রত্যেক চাকা এক একটি সূর্য ঘড়ি। অপূর্ব কলা কৌশলে তৈরি।
কোণার্ক মন্দির তৈরির ইতিহাস যেমন নিপুণ ভাস্কর্যের উদাহরণ, ঠিক তেমনি নৃশংস এক বলিদানের সাক্ষী। ১২০০ শিল্পীকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানর জন্য বলি দেওয়া হয় নাবালক প্রস্তর শিল্পী ধর্মপদকে। ১২ বছর বয়েসের ধর্মপদ ছিল অন্যতম প্রধান স্থপতি বিশু মহারাণার পুত্র। বারো বছর ধরে যে ১২০০ প্রস্তর শিল্পীকে বিশু মহারাণা নিয়োগ করেন কোণার্কের মন্দির নির্মাণের জন্য, তারা মন্দির নির্মাণের পর সূর্য মূর্তির চূড়ায় মুকুট স্থাপনে অসমর্থ হয়। রাজা নৃসিংহ দেব বিশু মহারাণাকে একদিনের সময় দেন ওই মুকুট স্থাপনের জন্য। কিন্তু মহারাণারা সকলে অকৃতকার্য হন। ধর্মপদ বাবার কাজ দেখতে আসে এবং অন্য সকল মহারাণাদের কাছে শোনে যে রাত পোহালে তাদের সকলের শিরশ্ছেদন সুনিশ্চিত। ধর্মপদ নিজে মন্দিরের চূড়ায় গিয়ে ওই মুকুট স্থাপন করে যা একটি চুম্বকীয় তত্ত্বের উপর নির্ভর করে। কোণার্কের সূর্য মূর্তি দুটি চুম্বকের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় স্থাপন করা হয়। আমরা জানি, চুম্বকীয় তত্ত্বে সম মেরু পরস্পরকে বিকর্ষণ করে (according to the laws of magnetism, like poles repel each other)। ওই তত্ত্ব অনুযায়ী দুটি সমান মেরুর, সমান আকারের এবং সমান ওজনের চুম্বকের মধ্যিখানে সূর্য মূর্তিটি ঝুলন্ত অবস্থায় স্থাপন করা এক বিশাল প্রযুক্তি জ্ঞানের প্রমাণ দেয়। এই অসম্ভব কার্য ধর্মপদের দ্বারা সুসম্পন্ন হয়। কিন্তু রাজার কানে ওই কথা পৌঁছলে সমস্ত মহারাণার মস্তকচ্ছেদন সুনিশ্চিত ছিল। তাই ১২০০ মহারাণা (প্রস্তর শিল্পী) বিশু মহারানাকে তার পুত্রকে অপসারণের জন্য তাকে হত্যা করার কথা বলে। ১২০০ মহারাণার জীবন রক্ষা করে ওই নাবালক ধর্মপদ। নিজে ধর্মপদ ওই কাজ সম্পাদনের পর মন্দির চূড়া থেকে আত্মাহুতি দেয় সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে, যার করুণ ইতিহাস কোণার্কের মন্দির গাত্রে প্রতিধ্বনিত। এই করুণ গাথা সকল শিল্পীকে স্তম্ভিত করে। কিন্তু কেউ কিছু বলে না। রাজা মহারাণাদের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে পুরস্কার দেন। ধর্মপদের আত্মবলির কথা চিরকালের জন্য নেপথ্যে থেকে যায়। তারই অভিশাপে হয়তো কোণার্কের ভাস্কর্য অতুলনীয় হয়েও পৃথিবীতে তার সঠিক মূল্যায়ন হয়নি, এবং মূল সূর্য মূর্তি ধ্বংস হয়ে যায়।
মন্দিরের বেদী থেকে শুরু করে চূড়া পর্যন্ত প্রতি ইঞ্চি জায়গায় পাথরের ভাস্কর্য ও কারুকার্য রয়েছে। দেবতা, অপ্সরা, কিন্নর, যক্ষ, গন্ধর্ব, নাগ, মানুষ, বিভিন্ন প্রাণী, পৌরাণিক বিভিন্ন ঘটনার প্রতিরূপ, নৃত্যরত নরনারী, প্রেমিক যুগল, রাজদরবারের বিভিন্ন দৃশ্য, শিকারের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাথরের বুকে।মূর্তিগুলোর মানবিক আবেদন, নিখুঁত গড়ন, লীলায়িত ভঙ্গী শিল্পকলার চরম উৎকর্ষের নিদর্শন। কলিঙ্গ রীতিতে নির্মিত মন্দিরের চূড়াগুলো পিরামিড আকৃতির। মন্দিরের সামনে রয়েছে নাট্ নাটমণ্ডপ। এখানে একসময় দেবদাসীরা দেবতার উদ্দেশ্যে পূজানৃত্য পরিবেশন করতেন। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে নাট্যমন্দির, ভোগমন্দির ও গর্ভগৃহ। মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ৮৫৭ ফুট। তবে মন্দিরের অনেক অংশ এখন বালিতে দেবে গেছে। মন্দিরের দেউল এখনো ২০০ ফুট উঁচু। মন্দিরে সূর্যদেবতার যে বিশাল বিগ্রহ ছিল তা এখন নেই। কালের করাল গ্রাসে স্থাপত্যের অনেকটাই আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত। বাংলার সুলতান সুলেমান খান এর সেনাপতি কালাপাহাড়ের আক্রমণে কোণার্ক মন্দির প্রথম ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। উড়িষ্যার ইতিহাস অনুযায়ী কালাপাহাড় ১৫০৮ সালে কোণার্ক আক্রমণ করে। ১৬২৬ সালে খুরদার তৎকালীন রাজা পুরুষোত্তম দেবের পুত্র নরসিংহ দেব সূর্যদেবের বিগ্রহটি পুরীর জগন্নাথের মন্দিরে নিয়ে যান। তিনি কোণার্ক মন্দির থেকে কারুকার্য করা অনেক পাথর পুরীর মন্দিরে নিয়ে যান। মারাঠা শাসনামলে কোণার্ক মন্দির থেকে অনেক ভাস্কর্য ও প্রস্তরখন্ড পুরীতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৭৭৯ সালে কোণার্ক থেকে অরুণ স্তম্ভ নামে বিশাল একটি স্তম্ভ নিয়ে পুরীর সিংহদ্বারের সামনে স্থাপন করা হয়। ওই স্তম্ভটি এখনও বিদ্যমান. এবং এটি একটি গ্রানাইট পাথরের তৈরি। এই সময় মারাঠা প্রশাসন কোনার্কের নাটমণ্ডপটি অপ্রয়োজনীয় মনে করে ভেঙ্গে ফেলে।
সূর্যদেবের বিগ্রহ অপসারণের পর কোনার্কে পূজা ও আরতি বন্ধ হয়ে যায়। পর্তুগীজ জলদস্যুদের ক্রমাগত আক্রমণের ফলে কোণার্ক বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আঠারশ' শতক নাগাদ কোণার্ক মন্দির তার সকল গৌরব হারিয়ে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। মন্দিরের অনেক অংশ বালির নিচে চাপা পড়ে যায়।মন্দির চত্বর ও এর আশেপাশের এলাকা ধীরে ধীরে ঘন অরণ্যে ছেয়ে যায়। বন্য জন্তুরা বাসা বাঁধে মন্দিরের ভিতর। জলদস্যু ও ডাকাতের আস্তানায় পরিণত হয় কোণার্ক মন্দির। সেসময় দিনের আলোতেও সাধারণ মানুষ ভয়ে এর ত্রিসীমানায় যেত না। বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে প্রত্নতত্ববিদরা কোণার্ক মন্দির পুনরাবিষ্কার করেন। খননের ফলে লোকচক্ষুর সামনে উন্মোচিত হয় কোণার্ক মন্দিরের অপূর্ব স্থাপত্য শৈলী, বিস্ময়কর ভাস্কর্যকীর্তি ও অনন্য শিল্প সম্ভার।কোণার্ক মন্দিরের অনেক শিল্প কীর্তি এখন সূর্য মন্দির জাদুঘর ও উড়িষ্যার জাতীয় জাদুঘরে রয়েছে। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী কোনার্কের সূর্য মন্দির দেখতে আসেন। প্রাচীন ভারতীয় স্থপতি ও ভাস্করদের শিল্পনৈপুণ্য ও সৃষ্টিশীলতা আজও মানুষকে বিস্ময় বিমুগ্ধ করে।
কোণার্ক সূর্য মন্দির এখন Archaeological Survey of India (ASI)র অধীনে। পর্তুগীজ জলদস্যুদের দস্যুবৃত্তি করতে অসুবিধা হওয়ার জন্য তারা মন্দিরের মাথায় অবস্থিত অতি শক্তিশালী চুম্বকটিকে নষ্ট করে দেয়। এখনকার কোণার্ক সূর্য মন্দিরের ভিতরে বালি দিয়ে ভরা। প্রবেশ নিষেধ। মন্দিরের পাশে ঘুরতে হয়।
এই মন্দিরের পরিসীমার ভিতর অনেকগুলি ছোট ছোট মন্দির আছে। মন্দিরের কিছু দূরে প্রত্নতাত্বিক মিউজিয়াম আছে যা শুক্রবার বন্ধ থাকে। ইতিহাস বলে, কালাপাহাড়ের আক্রমণে প্রধান মন্দির ধ্বংস হয়ে যায়। এখন যেটি আছে সেটি মুখ-শালা বা সিংহদ্বার। এই মন্দিরটি UNESCO থেকে World Heritage Site ঘোষিত হয়েছে। ভারতের ৭ টি আশ্চর্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে কোণার্ক একটি (এন ডি টিভির মতে)।
চন্দ্রভাগাঃ-
কোনার্কের কাছে সমুদ্র সৈকত ‘চন্দ্রভাগা’ নামে পরিচিত। এটি একটি তীর্থ স্থানে পরিণত হয় মাঘী সপ্তমীর দিন। ওই দিন এখানে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী আসেন চন্দ্রভাগাতে ডুব দেওয়ার জন্য। কোণার্কের সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য অপরূপ। কোণার্ক থেকে ঢ়িল ছোঁড়া দূরত্বে এই সমুদ্র সৈকত না দেখলে কোণার্ক দেখা সম্পূর্ণ হয় না। পরিষ্কার বালি এবং ঘূর্ণায়মান ঢেউ। শীতল নীল সমুদ্র সৈকত দীর্ঘ প্রসারিত। সঙ্গে সৈকতের নিজস্ব সুদৃশ্য নির্মলতা আছে। এখানে আন্তর্জাতিক ইয়টিং (Yachting) প্রতিযোগিতা হয়। দেশ বিদেশ থেকে বহু প্রতিযোগী আসেন এই প্রতিযোগিতায় ভাগ নিতে।
কোণার্ক মুক্তাঙ্গন নৃত্য উৎসবঃ-
কোণার্কের সূর্য মন্দির একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। প্রত্যেক বছর এখানে কোণার্ক মুক্তাঙ্গন নৃত্য উৎসব (Open Air Auditorium for Konarak Dance Festival) ডিসেম্বর মাসে হয়। ১লা ডিসেম্বর থেকে ৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত কোণার্ক নৃত্য উৎসব চলে। সারা ভারতবর্ষ থেকে এখানে বহু শিল্পী আসেন নৃত্য পরিবেশন করতে। সারা রাত এই অনুষ্ঠান হয় ফ্লাড লাইট জ্বালিয়ে। সারা রাত ওড়িশি, কুচিপুড়ি, কথাকলি, ভারতনাট্যম, মোহিনী আট্যম, কত্থক, মনিপুরী, ইত্যাদি প্রায় প্রত্যেক প্রদেশের নৃত্য প্রদর্শিত হয়। এখানে প্রসিদ্ধ নৃত্য শিল্পী বিরজু মহারাজ, কেলু চরণ মহাপাত্র, সোনাল মান সিংহ, সুধা চন্দ্রন, পদ্মা সুভ্র্যমন্যম, হেমা মালিনী, মল্লিকা সারাভাই, প্রমুখ নৃত্য জগতের প্রসিদ্ধ শিল্পীরা তাঁদের নৃত্যকলা প্রদর্শন করে দর্শককে মুগ্ধ করেন। এ ছাড়া বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীরাও আসেন, যেমন পৃথিবী বিখ্যাত শরদ শিল্পী ওস্তাদ আমজাদ আলী খাঁ, বংশীবাদক পণ্ডিত হরি প্রসাদ চৌরসিয়া, তবলা শিল্পী ওস্তাদ জাকির হোসেন, সন্তুরশিল্পী পণ্ডিত শিব কুমার শর্মা প্রমুখ।
কি করে কোণার্ক যাবেনঃ-
বলা বাহুল্য ভবঘুরে বাঙালী পুরী-কোণার্ক না ঘুরেছে এরকম বোধ হয় কেউ নেই। পুরী এবং ভুবনেশ্বর থেকে বাস কোণার্ক যায়। এ ছাড়া ওলা ট্যাক্সি এবং অন্য ট্র্যাভেল এজেন্সি ট্যাক্সি ভাড়া দেন টুরিস্টদের। এখানে রাত্রে থাকার ব্যবস্থাও আছে। ভুবনেশ্বর থেকে ৫৮ কিলোমিটার এবং পুরী থেকে মাত্র ৩৬ কিলো মিটার যাত্রা করলেই কোণার্ক পৌঁছে যাবেন অনায়াসে। ভুবনেশ্বর থেকে ছয় লেনের সুন্দর রাস্তা পিপিলি বাইপাস দিয়ে যাওয়া যায়। প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট লাগে প্রাইভেট কারে গেলে। এছাড়া অটো, ট্রেকার, টাটা এস আছে তবে ওগুলো সুবিধের নয়। কোণার্কের এস.টী.ডি কোড ০৬৭৫৮। এখানে থাকার জন্য প্রচুর হোটেল আছে। উড়িষ্যা রাজ্য সরকারে পরিচালনায় ও টি ডি সি র পান্থনিবাস। চন্দ্রভাগার কাছে ৩ স্টার “লোটাস হোটেল” খুব সুন্দর। ওখানে সুন্দর কটেজ আছে সমুদ্র সৈকতে। বোটিং এর সুবিধে আছে। আমরা ওখানে স্বপরিবারে এক দিন কাটিয়েছি।





Posted by গল্পগচ্ছ at 1:13 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest
KOLKATA Kolkata, West Bengal, India

শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নবকলেবর যাত্রা ২০১৫ (বঙ্গাব্দ ১৪২২ সাল) সম্বন্ধে কিছু তথ্য:- ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী



 শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নবকলেবর যাত্রা ২০১৫ (বঙ্গাব্দ ১৪২২ সাল)
সম্বন্ধে কিছু তথ্য:-
ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী
পুরী কেবল মাত্র সমুদ্র,মন্দির,অন্যান্য সুন্দর সুন্দর দর্শনিও স্থান এর ক্ষেত্রই নয় বরং নানা উৎসব এবং যাত্রার মাধ্যমে পুরীর বৈচিত্র্য এক আলাদা তীর্থ স্থানের উপলব্ধি দেয় ।শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর রথ যাত্রা বিশ্ব প্রসিদ্ধ । ভারত বর্ষের প্রায় প্রত্যেক সহরে এর অনুকরণে রথ যাত্রার আয়োজন মহা আড়ম্বরে হয় কিন্তু পুরীর রথ যাত্রার মহাত্ম আলাদা । পুরীকে শঙ্খ ক্ষেত্র , নীলাচল ক্ষেত্র , পুরুষোত্তম ক্ষেত্র ইত্যাদি বহু নামে নামিত করা হয়েছে । যুগ যুগ ধরে কোটি কোটি ভক্তের সমাগম হয় শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর দর্শন অভিলাষে। শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু ,শিখ ধর্ম গুরু , গুরু নানক , এই শ্রী ক্ষেত্রে তাঁদের স্মৃতি ছেড়ে গিয়েছেন । পুরীর স্বর্গ দ্বারের কাছে এক চৌ মাথার মোড়ে , শ্রী চৈতন্য দেবের মূর্তি আছে। শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু গৌড় বাট সাহির রাস্তায় শ্রী মন্দিরে রোজ দর্শনে যেতেন , তাই ওই রাস্তার নাম গৌড় বাট (বাট= রাস্তা )।
ভারতবর্ষের চার ধাম (১) পশ্চিমে ,‘দ্বারকা ধাম’ গুজরাটের দ্বারকায় , ‘দ্বারকাধিশ’ শ্রী কৃষ্ণর মন্দির বিদ্যমান। (২) উত্তরে ‘কেদারনাথ ধাম’ । কেদারনাথের মন্দির বিখ্যাত শিবের মন্দির ,হিমালয়ের গাড়োয়াল অঞ্চলে উত্তরাখণ্ডের মন্দাকিনী নদীর ধারে অবস্থিত । (৩) পূর্বে শ্রী জগন্নাথের , “পুরুষোত্তম ক্ষেত্র” (৪) দক্ষিণে “রামেশ্বরম”। রামেশ্বরমের মন্দির ভগবান শিবের মন্দির। হিন্দু মতে এই চার ধাম ই ভারতের সর্ব বৃহৎ তীর্থস্থান । চার ধামের দর্শনে মহা পুণ্য সাধন হয় । এর মধ্যে শ্রী ক্ষেত্র অন্যতম ।
নব-কলেবর কি?ঃ- সাধারণ ভক্তের মনে নব-কলেবর কেন হয় এবং এর বিশেষত্ব কি এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক । যে বছর জোড়া আষাঢ় পড়ে সেই বছরটি শ্রী জগন্নাথ , বলভদ্র ও মা সুভদ্রার নব-কলেবর হয় । নব-কলেবর অর্থাৎ প্রভু জগন্নাথ ,বলভদ্র , দেবী সুভদ্রা ও সুদর্শনের নতুন বিগ্রহ প্রস্তুতির পরে ব্রহ্ম পরিবর্তন , নবযৌবন দর্শন এবং রথ যাত্রা উৎসব ।
বিগ্রহর প্রস্তুতির জন্য দারু অন্বেষণ যা কাকটপুরের মা মঙ্গলার স্বপ্নাদেশে বনযাগ যাত্রা নামে বলা হয় । এই যাত্রা থেকে নব-কলেবরের প্রস্তুতি পর্ব আরম্ভ ।
নব-কলেবর সম্বন্ধে কিছু তথ্য:-
যে বছর জোড়া আষাঢ় পড়ে সেই বছরটি শ্রী জগন্নাথ , বলভদ্র ও মা সুভদ্রার নব-কলেবর হয় । সাধারণত জোড়া আষাঢ় ৮, ১২ ,১৬ কিম্বা ১৯ বছর পর পড়ে । এবারে ১৯ বছর পর তিন ঠাকুরের নব-কলেবর যাত্রা সম্পন্ন হবে। বিংশ শতাব্দীর নব-কলেবর যাত্রা প্রথমে ১৯১২ ,১৯৩১ ,১৯৫০ , ১৯৬৯ , ১৯৭৭ এবং ১৯৯৬ সালে হয়েছিল। এই বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে নব-কলেবর যাত্রা ১৯ বছর বাদে পড়েছে । নব-কলেবর
১। বনযাগ যাত্রা:- পুরীর গজপতি রাজা শ্রী দিব্য-সিংহ দেব রাজগুরু কে পৈতে , বস্ত্র এবং সুপুরি প্রদান করে বঞ্জাগ যাত্রার জন্য আদেশ দেন । এই পরম্পরাকে গজপতি “রাজার আজ্ঞা” বলে বলা হয়। অর্থাৎ রাজা আদেশ দিলেন রাজগুরুকে , তিন ঠাকুরের জন্য দারু অন্বেষণে বনে যাওয়ার আয়োজন কর । সেইথেকে বনযাগ যাত্রার শুভারম্ভ হল । যে বছর নব-কলেবর যাত্রা থাকে তার পূর্ব বৎসরের চৈত্র মাসের শুক্ল দশমী থেকে সুরু হয় বনযাগ যাত্রা । অর্থাৎ ১৪২১ চৈত্র মাসের শুক্লা দশমী তে আরম্ভ হল ১৪২২ এর নব-কলেবর যাত্রার জন্য।
বনযাগ যাত্রা কি ?ঃ- তিন ঠাকুরের নব-কলেবরের জন্য দারু সংগ্রহর জন্য যাত্রা কে ‘বনযাগ যাত্রা’ বলে । পুরীর গজপতি রাজার আজ্ঞা প্রাপ্তির পর একটি বিশেষ দল , দল-বধ্য হয়ে যাত্রা আরম্ভ করে। গজপতি রাজা দিব্য-সিংহ দেব ; পুরী রাজার রাজগুরু কে পৈতে , বস্ত্র এবং সুপুরি প্রদান করে এই যাত্রার শুভারম্ভ করেন । এই পরম্পরাকে “গজপতি রাজার আজ্ঞা” বলে বলা হয়। অর্থাৎ রাজা আদেশ দিলেন রাজগুরুকে , তিন ঠাকুরের এবং সুদর্শনের জন্য দারু অন্বেষণে বনে যাওয়ার আয়োজন কর ।
সে-ইথেকে বনযাগ যাত্রার শুভারম্ভ:-
রাজগুরু যিনি জগন্নাথ মন্দিরের মুখ্য সেবায়ত , তিনি এই সংকল্প সুপারি দইতাপতি(রথের সময় এরা তিন ঠাকুরের সেবায়ত) দলপতি শ্রী হলধর দাস-মহাপাত্র কে প্রদান করেন । এই পরম্পরাকে শ্রী ক্ষেত্রে “গুয়া টেকা” বলে। এই সমস্ত পদ্ধতি গত ২৯ মার্চ ২০১৫(রবিবার) চৈত্র শুক্ল দশমী তে সুসম্পন্ন হয়েছে । এর পর জগন্নাথ মন্দিরের সিংহ দ্বার থেকে বনযাগ যাত্রা সুরু হল। শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের তিন ঠাকুরের মধ্যাহ্ন ভোগের পর অপরাহ্ণ ৩ টের সময় দারু-গৃহ অনুকূলের পর এই যাত্রা সুরু হয় ।
এই যাত্রাতে বরিষ্ঠ দইতাপতি হলধর দাস মহাপাত্র র সঙ্গে দলপতি অধ্যাপক দুর্গা-প্রসাদ দাস মহাপাত্র , ৯৬ জন দইতাপতি , ১৪ জন ব্রাহ্মণ , ১০ জন বিশ্বকর্মা(কাষ্ঠ শিল্পী) , শ্রী মন্দিরের ২ জন পুরোহিত , ২ জন রাজগুরু , ১ জন পতি-মহাপাত্র , ১ জন লেঙ্কা , ১জন দেউল করণ(কায়স্থ) , ১ জন তঢ়উ করণ , সর্ব মোট ১৩০ জন , মন্দিরের পুলিশ , ডাক্তার , এবং দারু পরিবহনের জন্য তিনটি বিশেষ ভাবে সজ্জিত গরুর গাড়ী । এখানে উল্লেখ যোগ্য সকলে পদব্রজে এই যাত্রা পুরী থেকে কাকটপুর মঙ্গলা মন্দির অবধি পুরী- কোণার্ক মেরিন ড্রাইভের রাস্তায় যাত্রা করবেন । ২৯ শে মার্চ ২০১৫(রবিবার) সকলে পুরীর জগন্নাথ বল্লভ মঠে রাত্রিযাপন করেছিলেন ।
রাস্তায় বিভিন্ন যায়গায় বিশ্রাম এবং শ্রী মন্দির প্রশাসন থেকে খাদ্যের ব্যবস্থা আছে । সকলে মাটিতে শয়ন করবেন এবং সাত্ত্বিক মন্দিরের প্রসাদ সেবন করবেন । দিনের বেলায় ফল মূল ছাড়া অন্য কিছু আহার নিষিদ্ধ । রাত্রে বিশ্রাম এবং মহা-প্রসাদ সেবন।
এর পরদিন অর্থাৎ ৩০ শে মার্চ ২০১৫(সোমবার) শ্রী জগন্নাথ বল্লভ মঠ থেকে বিলম্বিত রাত্রিতে বেরিয়ে পুরীর সন্নিকটে নুআনই , বালিঘাই হয়ে রামচন্ডী মন্দিরে তে ৩১ শে মার্চ ২০১৫(মঙ্গলবার) রাত্রিযাপন এবং বিশ্রাম । ১ লা এপ্রিল ২০১৫(বুধবার) পূর্বাহ্ণে যাত্রা সুরু এবং রাত্রে কুঢেই গ্রামের “শঙ্করে-শ্বর মন্দিরে”রাত্রিযাপন ।
১ লা এপ্রিল ২০১৫(বুধবার) পূর্বাহ্ণে যাত্রা সুরু এবং রাত্রে কুঢেই গ্রামের “শঙ্করে-শ্বর মন্দিরে” রাত্রিযাপন ।
২রা এপ্রিল ২০১৫ তে কাকটপুর “মা মঙ্গলার মন্দিরে” পৌঁছবেন । মা মঙ্গলার মন্দিরের “দেউলি মঠে” ২ তারিখে সকলে পৌঁছে রাত্রিযাপন করবেন ।
৩রা এপ্রিল ২০১৫ থেকে মা মঙ্গলার পূজার্চনা সুরু হবে । এর পর মা মঙ্গলা প্রসন্ন হলে স্বপ্নাদেশ হবে দারুর অবস্থিতি সম্পর্কে সূচনা । এসব প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন হওয়ার পর দারুর সন্ধানে বনযাগ যাত্রীরা যাত্রা করবেন নির্দিষ্ট স্থানে ।
নব-কলেবর নিমিত্ত তিন ঠাকুরের জন্য যে বৃক্ষ চিহ্নিত করা হয় বা ব্যাবহার করা হয় তার লক্ষণ গুলি নিম্ন লিখিত অনুসারে নির্বাচন করা হয়:-
১. বৃক্ষ টি নিম বৃক্ষ হওয়া প্রয়োজন ।
২. বৃক্ষের অনতিদূরে ঊই ঢ়িপি , নদী , স্মশান কিম্বা পুষ্করিণী থাকা অনিবার্য । বৃক্ষের কাছে বেল গাছ ,তুলসী গাছ থাকা প্রয়োজন ।
৩. বৃক্ষে কোন পাখির বাসা থাকবে না , ঊই ঢ়িপির কাছে নাগ সাপ গাছটিকে পাহারা দিতে দেখা যাবে ।
৪. বৃক্ষের কোন অংশ কীট পতঙ্গ দ্বারা আক্রান্ত , কিম্বা বজ্র পাতের চিহ্ন থাকবে না । পূর্বে কোন ডাল কাটা না হওয়া প্রয়োজন । কোন রকম খুঁত থাকা চলবে না ।
৫. সেই বৃক্ষে শঙ্খ , চক্র , গদা ,পদ্ম চিহ্ন থাকা প্রয়োজন ।
৬. বৃক্ষটি অন্যূন ১২ ফুট লম্বা সোজা এবং মোটা হওয়া প্রয়োজন যাতে অনায়াসে বিশ্বকর্মার দ্বারা মূর্তি নির্মাণ কর্ম সুসম্পন্ন হবে ।
উপরোক্ত লক্ষ্মণ গুলি অনিবার্য এবং তারপর অন্বেষণকারী দল ঠিক করে পবিত্র দারু নির্বাচন করেন। এরপর দারু নির্বাচন কার্য সুসম্পন্ন হয় । বিশ্বকর্মা এরপর মাপজোপ করেন । এরপর যথাবিধি যজ্ঞশালা , যজ্ঞকুণ্ড , অঙ্কুরারোপণ গৃহ নির্মিত হয়ে বনযাগ হোম আরম্ভ হয় । এরপর আচার্য অস্ত্র-পূজায় বসে সোনা , রুপো ও লৌহ কুড়ুলকে যথাক্রমে বিদ্যাপতি , বিশ্বাবসু ও বিশ্বকর্মা সেবকদের সহায়তায় বৃক্ষ ছেদন করা হয় ।
দারু ঘোষনাঃ- বর্তমানের প্রশাসনের নির্দেশানুযায়ী কোন টিভি চ্যানেল কিম্বা অন্য মিডিয়ার লোক গণমাধ্যমে পূর্ব সূচনা দিতে পারবেন না । দারুর ফটো চিত্র উত্তোলন কিম্বা ভিডিও রেকর্ডিং নিষেধ । কোন সেবায়তের সঙ্গে সাক্ষাৎকার নিষেধ আছে । প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে এইসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । পবিত্র দারু সরকারি স্তরে ঘোষণা হবে এবং সেবায়ত ব্যতীত কোন জনসাধারণের স্পর্শ নিষেধ । দারু উত্তর দ্বার পথে শ্রী মন্দিরে প্রবেশ হবে।
প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে সূচনা:-
একবিংশ শতাব্দীর এই প্রথম নব-কলেবর যাত্রার প্রারম্ভে প্রশাসনের গুরু দায়িত্ব যাত্রীদের সুরক্ষা,সুব্যবস্থা এবং সুচারু রূপে যাত্রা সুসম্পন্ন করা , যার প্রস্তুতি এবং ঘন ঘন মিটিং সুরু হয়েছে বৎসরের প্রারম্ভ থেকেই । এর জন্য পুরী টেম্পল এডমিনিস্ট্রেশনের মুখ্য প্রশাসক শ্রী সুরেশ চন্দ্র মহাপাত্র , আই।এ।এস ; পুরীর জেলা প্রশাসক (কালেক্টর) শ্রী অরবিন্দ অগরওয়াল, আই।এ।এস , পুরীর গজপতি রাজা , মহামান্য শ্রী শ্রী দিব্য-সিংহ দেব (চলন্ত বিষ্ণু বলে বলাহয় তাঁকে) , পুরীর বিধায়ক শ্রী মহেশ্বর মাহান্তী এবং পুরীর সাংসদ শ্রী পিনাকী মিশ্র । তা ছাড়া মন্দিরের মুখ্য পাণ্ডা , দইতাপতি ও সেবায়তদের নিয়ে দফায় দফায় মিটিং চালিয়ে যাচ্ছেন । এর থেকে সহজেই অনুমেয় প্রশাসনের ব্যগ্রতা শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নব-কলেবর যাত্রা যাতে সুসম্পন্ন হয় নির্বিঘ্নে ।
২০১৫ সাল জগন্নাথ রথ যাত্রার এক বিশেষ উৎসবের দিক হল ‘নব-কলেবর’ এবং এর জন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকার উভয়েই প্রশাসনিক দিক থেকে তৎপর যাতে শ্রী জগন্নাথের নব-কলেবর যাত্রা সুচারু রূপে সম্পন্ন হয়। তাই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী শ্রীযুক্ত ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং পর্যটন মন্ত্রী ডক্টর মহেশ শর্মা র নেতৃত্বে এ বছরের জগন্নাথের রথ যাত্রার বিশেষ নামকরণ করা হয়েছে যার নাম সরকারি স্তরে ধার্য হয়েছে“নব-কলেবর রথ যাত্রা” । এজন্য কেন্দ্র সরকার-থেকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । আশা করা হচ্ছে এই বছর নব-কলেবরের সময় ২০ – ২৫ লক্ষ ভক্তের সমাগম হবে । তাই প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রশাসনের যাত্রীদের সুব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উভয় কিছু নতুন পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভুবনেশ্বর থেকে পুরী যাওয়ার নতুন করে ৪ লেনের রাস্তা সম্পূর্ণ হয়ে-গিয়েছে তাই পুরী যেতে মাত্র ১ ঘণ্টা সময় লাগছে। রেল লাইন দোহরিকরন হয়েছে । বাস টার্মিনাল , কার পার্কিং ইত্যাদি নতুন করে মালতিপাটপুরের কাছে তৈরি হয়েছে। প্রায় প্রত্যেকটা ছোট ছোট যায়গা যেমন পিপিলি, সাক্ষীগোপাল ,চন্দন-পুর বাইপাস করে রাস্তা তৈরি হয়েছে । ভুবনেশ্বর থেকে রেড লাইন নন স্টপ বাতানুকূল বাস চালু হয়েছে পুরী পর্যন্ত যাত্রীদের সুবিধের জন্য ।
২০১৫ নব-কলেবরের জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিশেষ বাজেট:- ১) শ্রী জীউ জগন্নাথ,বলভদ্র, দেবী সুভদ্রা র নব-কলেবরের নীতির জন্য ২১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে ২) শ্রী মন্দিরের চতুষ্পার্শ্বের রাস্তা মেরামত এবং সম্প্রসারন যার ব্যয় বরাদ্দ রাশি ২০ কোটি টাকা , । ৩) জয়-বিজয় দ্বারের রুপোর ছাউনির জন্য ২ কোটি টাকা , ৪) প্রভুর দৈনন্দিন নীতি সম্পাদন এবং সেবা পূজার উদ্দেশ্যে ১৫ কোটি ৩২ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে , ৫) শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের কর্মচারীদের মাস মাহিনা এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বাবদ ২৫ কোটি ২৫ লক্ষ ৭৪ হাজার ৮৫০ টাকা ব্যয় বরাদ্দ , ৬) সেবায়তদের পুত্র সন্তানদের বৈদিক শিক্ষা বাবদ এক আদর্শ বিদ্যালয় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠা হবে । ৭) প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ৩ কোটি ২৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ , 8) শ্রী গুন্ডিচা মন্দিরের সংগ্রহালয় নির্মাণের প্রস্তাব , আনন্দ বাজার পুনরুজ্জীবিত , আঠার নালার গরুড় মূর্তি প্রতিষ্ঠা , শ্রী গুন্ডিচা ভক্ত-নিবাস নির্মাণ ,
২০১৫ নব-কলেবরের কার্য্যসূচী ঃ-
১. ২৯ মার্চ ২০১৫ রবিবার , বনযাগ যাত্রা আরম্ভ ২০১৫ নব-কলেবর কার্য্যসূচী ঃ-
১. ২৯ মার্চ ২০১৫ রবিবার , বনযাগ যাত্রা আরম্ভ (সম্পূর্ণ যাত্রা পদব্রজে) , চৈত্র মাসের শুক্ল দশমী থেকে সুরু হয় বনযাগ যাত্রা । জগন্নাথ বল্লভ মঠে রাত্রিযাপন ।
২. ৩০ মার্চ ২০১৫ সোমবার , মধ্য রাত্রিতে দইতাপতিরা জগন্নাথ বল্লভ মঠ ছেড়ে ‘নুয়ানোই’ নদীর কূল সংলগ্ন আশ্রমে রাত্রিযাপন
৩. ৩১ মার্চ ২০১৫ মঙ্গলবার , আশ্রম থেকে বেরিয়ে মেরিন ড্রাইভ রাস্তায় পদব্রজে রামচন্ডী মন্দিরে রাত্রি যাপন ।
৪. ১ লা এপ্রিল ২০১৫ বুধবার পূর্বাহ্ণে যাত্রা সুরু এবং রাত্রে ‘কুঢেই’ গ্রামের “শঙ্করে-শ্বর মন্দিরে”রাত্রিযাপন ।
৫. ২রা এপ্রিল ২০১৫ বৃহস্পতিবার তে কাকটপুর “মা মঙ্গলার মন্দিরে” পৌঁছবেন । মা মঙ্গলার মন্দিরের “দেউলি মঠে” ২ তারিখে সকলে পৌঁছে রাত্রিযাপন করবেন ।
৬. ৩রা এপ্রিল ২০১৫ শুক্রবার থেকে মা মঙ্গলার পূজার্চনা সুরু হবে । এর পর মা মঙ্গলা প্রসন্ন হলে স্বপ্নাদেশ হবে দারুর অবস্থিতি সম্পর্কে সূচনা ।
৭. ৪ঠা এপ্রিল ২০১৫ শনিবার থেকে দারু অন্বেষণে ৬ টি দলে বিভক্ত হয়ে পবিত্র দারু সন্ধানে যাত্রা সুরু।
৮.প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে দারু চিহ্নট ক্রিয়া সম্পন্ন । প্রশাসনের দ্বারা পবিত্র দারু সম্বন্ধে ঘোষণা ।
…………… *******…………..
৯. ২ জুন ২০১৫ মঙ্গলবার দেব-স্নান পূর্ণিমা । তিন ঠাকুরের জর হয় তাকে ‘অণসর ঘরে বাস’ বলে। এখানে ঠাকুরকে রাজবৈদ্য দ্বারা ঔষধাদির প্রলেপ এবং সেবা শুশ্রূষা করা হয় । এরপর ঠাকুরের জর ছাড়ে এবং ঠাকুর সুস্থ হন ।
এরপর বিগ্রহ পরিবর্তন রুদ্ধ দ্বারে । সম্পূর্ণ রুদ্ধ দ্বারে নতুন বিগ্রহ বিশ্বকর্মা র দ্বারা সুসম্পন্ন । সর্বসাধারণ এবং প্রশাসনের কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়না এইসময় ।
১৫ ই জুন ২০১৫ সোমবার , বলরাম , মা সুভদ্রা ও জগন্নাথ মহাপ্রভুর ব্রহ্ম পরিবর্তন । বড় পাণ্ডা করেন ।
এর পর পূরণ বিগ্রহ কৈলি বৈকুণ্ঠে স্থানান্তরিত এবং সমাধি । উত্তর দ্বারের সংলগ্ন কৈ্লি বৈকুণ্ঠ ।
১৭ ই জুলাই ২০১৫ , শুক্রবার ঃ তিন ঠাকুরের নব যৌবন দর্শন । এই দর্শন অত্যন্ত পুণ্য অর্জন করে তাই লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় ।
১৮ ই জুলাই ২০১৫ শনিবার শ্রী গুন্ডিচা যাত্রা বা জগন্নাথের রথ যাত্রা ।
২৬ শে জুলাই ২০১৫ রবিবার উল্টো রথ যাত্রা ।
২৭ শে জুলাই ২০১৫ সোমবার তিন ঠাকুরের সোনা বেশ ।
জয় জগ্ননাথ
  




Posted by গল্পগচ্ছ at 1:11 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

দয়া আর মায়া সমান নয় । শ্রী শ্রী পরমহংস রামকৃষ্ণ দেব বলেন,দয়া মানে .......




 দয়া আর মায়া সমান নয় । শ্রী শ্রী পরমহংস রামকৃষ্ণ দেব বলেন,দয়া মানে সর্বভূতে আমার হরি আছেন। এই জেনে সকলকে সমান ভালোবাসা। দয়া আর মায়া দুটি আলাদা জিনিস। 
মায়া মানে আত্মীয়ে মমতা- যেমন বাবা,মা,ভাই,বোন,স্ত্রী পুত্র - এদের ভালবাসা। 
দয়া সর্বভূতে ভালোবাসা- সমদৃষ্টি। কারু ভেতর যদি দয়া দেখ, সে জানবে ঈশ্বরের দয়া। দয়া থেকে সর্বভূতে সেবা হয়।
মায়াতে মুগ্ধ ক'রে রাখে আর বদ্ধ করে কিন্তু দয়াতে চিত্তশুদ্ধি হয়।ক্রমে তাহা বন্ধন মুক্ত হয়।
Posted by গল্পগচ্ছ at 1:07 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

আত্মানাং রথিনং বৃদ্ধি শরীরং রথমেব তু | মিমি ব্যানার্জী ।



 
 আত্মানাং রথিনং বৃদ্ধি শরীরং রথমেব তু |
বুদ্ধিঙ তু সারথিং বিদ্ধি মনঃ প্রগ্রহমেব চ || 
আত্মা হলেন রথী, শরীর রথ, বুদ্ধি সারথি, মন বল্গা, ইন্রিয়গুলি অশ্ব এবং ভোগ্য বিষয়গুলিরথের গমন পথ | এসবগুলি যদি 'সদশ্বাহ' অর্থাৎ সুনিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে রথটিকে সারথি ঠিকমতো লক্ষে পৌঁছে দিতে পারবে | আর যদি অসংযত হয় তাহলে রথটিকে তারা কোথায় নিয়ে ফেলবে কে জানে ?
মানুষের জীবন রথের প্রতীক | প্রবৃত্তিমার্গ ছেড়ে যে নিবৃত্তিমার্গ যেতে চায় তার জীবন সুনিয়ন্ত্রিত হতে হবে, সমাহিত হতে হবে | রথের রথী অন্তর্যামী - তিনি অসঙ্গ নির্লিপ্ত | এটি তাঁর যথার্থ স্বরূপ | সেই স্বরূপ কে এই দেহের মধ্যে উপলব্ধি করতে হবে | ( স্বামী স্বতন্ত্রানন্দ, অমৃত কথা )
Posted by গল্পগচ্ছ at 1:03 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

Tuesday, June 19, 2018

বৃন্দাবনে কৃষ্ণ লীলা। ঊমা মিস্ত্রী ১৯।০৬।২০১৮


    বৃন্দাবনে কৃষ্ণ লীলা।
       ঊমা মিস্ত্রী 
মধ্যযুগে বৃন্দাবনে এক
ব্যবসায়ী বাস করত যার ছিল একটি মিষ্টির
দোকান।
তার দোকানটি ছিল ঠিক বৃন্দাবনের
সবচেয়ে বিখ্যাত
মন্দির বাঙ্কেবিহারীর সামনে।
দোকানদার ভগবান
শ্রীকৃষ্ণের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত ছিল।সে
প্রতিদিন
খুব রাত করে দোকান বন্ধ করত কারন তার
মনের
মধ্যে ক্ষুদ্র একটা বাসনা ছিল কোন না
কোন দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে বিহার
করতে করতে তার
দোকানে আসবে এবং থাকে দর্শন দেবে।
তার এই
বাসনা নিয়ে বহু বছর পার করে দিল,একসময়
দোকানদার বৃদ্ধ হয়ে গেল কিন্তু তার মনের
আশা
সে ছাড়ল না।সে এখনো খুব রাত করে
দোকান
লাগাত এই আশায় কখন যে শ্রীকৃষ্ণ আসেন
ঠিক
নাই।প্রতিদিনের মত দোকানদার বহু রাত
পর্যন্ত
দোকানে বসে আছে। হঠাৎ একটা ছোট্ট
ছেলে এই
সাত আট বছরের হবে। মনে হচ্ছিল কোন ধনী
ব্যাক্তির
ছেলে। ধূতি পড়া,হাতে বালা, চুল
কুকরানো,দেখতে সুন্দর।তার দোকানের
দিকে এগিয়ে আসছে দোকানদার একটু
বিস্মিত হল এত রাতে কার ছেলে ঘরের
বাইরে রাস্তায় হাটছে।ছোট ছেলেটি
তার দোকানেই আসে
এবং দোকানদারের কাছে মতিচূর লাড্ডু
চায়।দোকানদার তার দোকানের ভেতরে
গিয়ে দেখল
মতিচূড় লাড্ডু নেই।তাই সে বালক টি কে
বলল রাত
হয়ে যাওয়ায় তার কাছে আর লাড্ডু নেই
তবে ছানার
মিষ্টি আছে তা নেবে কি না। বালকটি
রাজি হল ছানার
মিষ্টি নিতে। দোকানদারও তাকে
মিষ্টি টি দিল দোকানদার বালকটি কে
জিজ্ঞেস করল তোমার
কাছে কী টাকা আছে। বালকটি উত্তর দিল
না।দোকানদার ভাবল ছোট বালক তার
থেকে আর
টাকা নিয়ে আর কী করবে কতটুকু আর
মিষ্টি!
সে আর কিছু চাইল না। কিন্তু বালক এর মূল্য
দিতে চাইল,নিজের হাতের স্বর্ণের
বালা দিয়ে। কিন্তু দোকানদার রাজি হল
না এবং বলল তার কোন
মূল্য চাই না।অনেকক্ষন টানা পোড়ন চলল।
কিন্তু দোকানদার কোন মূল্য নিতে চাইল
না।তখন
বালকটি ছুড়ে মারল তার বালাটি
দোকানের ভেতরে।ঠিক তখনই দোকানদার
সেই বালাটি উঠাতে নিঁচু হল আর উঠে
দেখে বালকটি উধাও!!!!দূর দূর পর্যন্ত
তার দেখা নেই।কোথায় গেল সেই বালক
এই প্রশ্ন
এবং তার বালাটি নিয়ে সেই রাতে আর
ঘুমোতে
পারল না বৃদ্ধ দোকানদার।পরদিন সকালে
সম্পূর্ণ
বৃন্দাবনে ঘোষিত হল।বাঙ্কেবিহারী
মন্দিরের বিগ্রহের
হাতের স্বর্নের বালা চুরি হয়েছে।
বিগ্রহের হাতের
বালা আর নেই।এই বার্তা দোকানদারের
কানে এসেও
পৌছে। এই কথা শোনার পর দোকানদার
তৎক্ষনাত সেই বালাটি সাথে নিয়ে
বাঙ্কেবিহারীর পুরোহিতের
কাছে গেল।পুরোহিত কে বালাটি
দেখাল এবং সব
কথা খুলে বলল।পুরোহিত বলল এটিই
বাঙ্কেবিহারীর হাতের বালা!এরপর
দোকানদার বুঝতে পারল কাল রাতে যেই
ছেলেটি এসেছিল তা আর কেউ নয় স্বয়ং
অনাদির আদি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ।
দোকানদার কেঁদে ওঠে বাঙ্কেবিহারীর
চরণে গিয়ে পরল এবং আফসোস করল ভগবান
স্বয়ং তার দুয়ারে
আসল কিন্তু সে চিনতে পারল না।।
*****হরে কৃষ্ণ****

Posted by গল্পগচ্ছ at 1:46 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

শ্রীখণ্ডের গোপীনাথ / সুমনা সাহা / ১৯।০৬।২০১৮

   


       

     সুমনা সাহা 

।।শ্রীখণ্ডের গোপীনাথ।।
নবদ্বীপের কাছে গঙ্গার ওপারে কাটোয়ার কাছে শ্রীখণ্ড বলে একটা গ্রাম আছে। অতি প্রাচীন অখ্যাত একটা গ্রাম। আজ থেকে প্রায় পাঁচশ বছর আগেকার কথা। মহাপ্রভুর প্রায় সমসাময়িক। সেই গ্রামের তৎকালীন বিখ্যাত কবিরাজ ছিলেন মুকুন্দ রায়। তিনি ছিলেন একজন সদাচারী ব্রাহ্মণ বৈষ্ণব। বাড়িতে তার প্রতিষ্ঠিত গৃহদেবতা কষ্টিপাথরের গোপীনাথ। প্রতিদিন ভোরে উঠে মুকুন্দ কবিরাজ স্নান সেরে গোপীনাথের সেবা পুজো সেরে তারপর রুগী দেখতে বসতেন। আর ঈশ্বরের কৃপায় কবিরাজ মশাইএর অদ্ভুত হাতযশ ছিল। প্রায় সমস্ত রোগীই তার ওষুধ সেবন করে ভাল হয়ে যেত।
এইরকম একদিন মুকুন্দ কবিরাজ স্নান সেরে ঠাকুর ঘরে ঢুকেছেন , এমন সময় একটি বাচ্চা ছেলে কোথা থেকে ছুটতে ছুটতে এসে আকুল স্বরে ডাকছে, কোবরেজ মশাই, ও কোবরেজ মশাই ........"
মুকুন্দ কবিরাজ ঠাকুর ঘর থেকে বের হয়ে ছেলেটিকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, "কে বাবা তুমি? কি হয়েছে?"
ছেলেটি বলল, "কোবরেজ মশাই, আমি পাশের গাঁয়ে থাকি। আমার নাম গুরুচরণ। আমার বাবার খুব জ্বর। আপনি এক্ষুনি চলুন।"
কবিরাজ মশাই বললেন, "তা কি করে হয় বাবা। সবে আমি আমার গোপীনাথের চরণে তুলসী দিয়েছি মাত্র। একটু দাঁড়াও, প্রভুকে সেবা দিয়েই আমি যাব।"
ছেলেটা আকুল স্বরে বলল, "না কোবরেজ মশাই। অত দেরী করলে বাবাকে বাঁচানো যাবে না। গোপীনাথ পরেও সেবা নিতে পারবেন। আপনি দয়া করে এক্ষুণি চলুন। আপনার দুটি পায়ে পড়ি কোবরেজ মশাই ......।"
ছেলেটার আকুতি দেখে কবিরাজ মশাইএর খুব মায়া হল। উপায়ান্তর না দেখে মুকুন্দ কবিরাজ তার নিজের পাঁচ বছরের ছেলেকে হাঁক পাড়লেন, " রঘুনাথ! ও রঘুনাথ "
ঘরের ভেতর থেকে ছোট্ট রঘুনাথ বেরিয়ে এল। কবিরাজ মশাই বললেন, "বাবা রঘু! আমি এই ছেলেটির সাথে পাশের গাঁয়ে যাচ্ছি, ফিরতে দেরী হতে পারে। তুই বাবা স্নান সেরে গোপীনাথের সেবাটা দিয়ে দিস।"
রঘুনাথ তো মহা খুশি। এই প্রথম গোপীনাথের সেবার সুযোগ পেয়েছে। আনন্দে আটখানা হয়ে বাবাকে বলছে, তুমি নিশ্চিন্ত মনে যাও বাবা। গোপীনাথকে আমি আজ সেবা দেব। কবিরাজ মশাই চলে গেলেন।
রঘুনাথ তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ধুতি পড়ে মায়ের কাছে গিয়ে বলছে, "মা বাবা আজ আমায় গোপীনাথের সেবা দিতে বলে গেছেন। তুমি তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে দাও।"
মা বললেন, “এই ত বাবা, এখুনি দিচ্ছি।” --এই বলে কাঁসার থালায় করে বেশ কিছু নাড়ু এনে রঘুনাথের হাতে দিয়ে বললেন, “ভাল করে গোপীনাথকে সেবা দিবি। তিনি যেন গ্রহণ করেন।"
সরল বাচ্চা ছেলে ভাবলে গোপীনাথ বোধহয় সত্যি সত্যিই খান। যাই হোক ঠাকুর ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গোপীনাথকে থালাটা এগিয়ে দিয়ে বলছে, “দেখ গোপীনাথ! আজ মা তোমায় নাড়ু দিয়েছে। জান তো গোপীনাথ! মা কিন্তু গেল হপ্তায় এগুলো নিজে হাতে বানিয়েছে, আমি দেখেছি। নাও আর দেরী কোর না। জানি খুব ক্ষিদে পেয়েছে তোমার। নাও শিগগির খেয়ে নাও ত দেখি।”
কিন্তু কই? গোপীনাথ ত খাচ্ছে না!
“ওওও .... বুঝেছি। তোমায় বাবার মত চন্দন দিইনি বলে খাচ্ছ না? আচ্ছা বেশ। এই নাও তোমায় চন্দন পরিয়ে দিচ্ছি।”
চন্দন পরিয়ে আবার বলছে, “নাও গোপীনাথ! নাড়ু খাও।”
তবুও গোপীনাথ খাচ্ছেনা!
“ওওও বুঝেছি, বাবা তোমায় বাতাস করে। তাই না? দাঁড়াও।”
এই বলে গোপীনাথকে পাখা দিয়ে বাতাস করছে আর বলছে, “নাও গোপীনাথ এবার খাও।”
না তো, এখনও তো গোপীনাথ খাচ্ছেনা!
এভাবেই চলছে অনুনয় বিনয়। কিন্তু গোপীনাথের কোন সারা নেই। অবশেষে অধৈর্য হয়ে বালক রঘুনাথ বলছে, " ও আমি দিচ্ছি বলে খাচ্ছ না? খেতে হবেনা তোমার। এই আমি তোমার চরণে মাথা কুটে মরব। এই বলে অভিমানী রঘুনাথ গোপীনাথের চরণে মাথা ঠুকতে শুরু করল। ঠুকতে ঠুকতে ছোট্ট শরীরের নরম চামড়া কেটে গিয়ে রক্ত পরতে শুরু করেছে। হঠাত্ এক চোখধাঁধানো জ্যোতিতে ঠাকুর ঘর আলোকিত। কষ্টিপাথরের গোপীনাথের ভেতর থেকে দুটি অপ্রাকৃত হাত বেড়িয়ে এল , " কই রে রঘুনাথ! নাড়ু দে ...."
নিজের চোখকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না রঘুনাথ। নির্বাক হয়ে বিস্ফারিত নয়নে তাকিয়ে আছে রঘুনাথ চিন্ময় গোপীনাথের ভুবন মোহন রূপের দিকে। আহা! কি রূপ!!!
"কি হল রঘু! নাড়ু দিবিনা?"
“হ্যাঁ হ্যাঁ”, সম্বিত ফিরে পেল রঘুনাথ। "গোপীনাথ! তুমি এসেছ ! আঃ, কি সুন্দর দেখতে তুমি। নাও এই নাও,” বলে একটা নাড়ু গোপীনাথের সামনে ধরল। গোপীনাথ হাত বাড়িয়ে নাড়ুটি গ্রহণ করলেন।
“নাও আর একটা খাও”--গোপীনাথ খেলেন।
“এই নাও, আর একটা।”
রঘু দিয়ে যাচ্ছে, গোপীনাথ খেয়ে যাচ্ছেন।
হটাৎ গোপীনাথ বললেন, "রঘু ! ও দুটো থাক। ও দুটো তোর জন্য।"
হুঁশ ফিরল রঘুনাথের। থালায় মাত্র দুটো নাড়ু পরে আছে। ততক্ষণে গোপীনাথ আবার সেই কষ্টিপাথরের।
এদিকে ততক্ষণে মুকুন্দ কবিরাজ ফিরে এসেছেন। ডাকছেন, রঘু! ও রঘু! কোথায় গেলি বাবা?
ঠাকুর ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে এল রঘুনাথ। থালায় দুটো নাড়ু। মা দেখে বলছেন, “একি রঘু! বাকি নাড়ু কোথায়?"
"গোপীনাথ খেয়েছে মা"।
"ছিঃ বাবা! গোপীনাথের নামে মিথ্যে বলতে নেই। পাপ হয়।" মুকুন্দ কবিরাজ বললেন।
"আমি মিথ্যে বলছি না বাবা। বিশ্বাস কর।" এই বলে রঘুনাথ আদ্যপান্ত ঘটনা বর্ননা করল।
সব শুনে মুকুন্দ কবিরাজ ভাবলেন ছেলে মিথ্যে বলছে। লোভে পড়ে নাড়ু খেয়ে এখন গোপীনাথের নামে মিথ্যে বলছে। কিন্তু তিনি মুখে কিছু বললেন না।
পরদিন সকালে আবার রঘুনাথকে ডাকলেন। ডেকে বললেন, "বাবা রঘু ! আমাকে একটা জরুরী কাজে বেরুতে হচ্ছে। তুই বাবা কালকের মত গোপীনাথের পুজোটা দিয়ে দিস। ক ই গো! শুনছ, রঘুকে আজকেও নাড়ু দিয়েই সেবা দেওয়াবে।"......বলে চলে গেলেন।
কিন্তু গেলেন না। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এলেন। ততক্ষণে রঘুনাথ ঠাকুর ঘরে ঢুকে পড়েছে। আবার সেই সাধ্য সাধনা। বাইরে দাঁড়িয়ে চুপটি করে সব শুনছেন মুকুন্দ কবিরাজ ও রঘুর মা। হঠাত্ সব চুপচাপ। ঠাকুর ঘরে কোন সাড়া শব্দ নেই। কবিরাজ মশাই বুঝলেন, এইবার রঘুনাথ চুপ করে বসে নাড়ু খাচ্ছে। পা টিপে টিপে দরজার সামনে গেলেন কবিরাজ মশাই। এবং হটাৎ হাট করে খুলে দিলেন দরজা। বিস্ফারিত চোখে দেখলেন একটা জ্যোতি যেন হটাৎ মিলিয়ে গেল আর গোপীনাথের হাতে বাঁশীর বদলে ধরা রয়েছে একটি নাড়ুর অর্ধেকটি এবং সেটিও শীলায় পরিনত হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে রঘুনাথ দাঁড়িয়ে আছে।
জড়িয়ে ধরলেন বাবা ছেলেকে। কাঁদতে কাঁদতে বললেন "বাবা রঘু! তুই ধন্য। ধন্য তোর ভক্তি, তোর সরল বিশ্বাস। আমি এতদিন নিয়ম নিষ্ঠাভরে প্রভুর সেবা করে যা পাইনি ,তুই শুধু তোর সরল বিশ্বাস আর প্রেমের জোড়ে তা পেয়েছিস। তোকে মিথ্যেবাদী ভেবেছিলাম। ধিক্ আমাকে ধিক্।”
আজও শ্রীখণ্ডে গোপীনাথ মন্দিরে বিরাজ করছে সেই কষ্টিপাথরের গোপীনাথ বিগ্রহ যার হাতে আজও বাঁশীর বদলে বিরাজিত পাথরের অর্ধ নাড়ু। সারা ভারতবর্ষে আর কোথাও এমন কৃষ্ণবিগ্রহ নেই! (#sumana)
(এটা গল্প নয়। ইতিহাস)
   
   Sumana Saha
Moderator · 17 hrs
।।শ্রীখণ্ডের গোপীনাথ।।
নবদ্বীপের কাছে শ্রীখণ্ড বলে একটা জায়গা আছে

1
Manage


LikeShow more reactions
 · Reply · 7h
Jit Mukherjee
Jit MukherjeeYou manage the membership, moderators, settings, and posts for গল্প দাদুর আসর. জয় গোপীনাথ.
Manage


LikeShow more reactions
 · Reply · 2h
Jit Mukherjee
Write a comment...

Posted by গল্পগচ্ছ at 1:34 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest
Newer Posts Older Posts Home
Subscribe to: Posts (Atom)

Feedjit

Flag Counterikko trader mobile

Feedjit

Total Pageviews

Pages

  • Home

Blog Archive

  • ►  2024 (11)
    • ►  November (1)
    • ►  March (4)
    • ►  January (6)
  • ►  2021 (10)
    • ►  July (2)
    • ►  May (6)
    • ►  March (1)
    • ►  February (1)
  • ►  2020 (31)
    • ►  December (1)
    • ►  November (1)
    • ►  October (4)
    • ►  September (2)
    • ►  August (5)
    • ►  July (4)
    • ►  May (6)
    • ►  April (7)
    • ►  February (1)
  • ►  2019 (8)
    • ►  December (4)
    • ►  February (2)
    • ►  January (2)
  • ▼  2018 (27)
    • ►  December (1)
    • ►  November (5)
    • ►  October (3)
    • ►  September (1)
    • ►  August (1)
    • ►  July (2)
    • ▼  June (9)
      • সংস্কৃত তে अल्वारनाथ , বাংলায় অলারনাথ ঠাকুর বিষ্ণু...
      • জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা— আগামীকাল মহাপ্রভু জগন্ন...
      • অর্ক ক্ষেত্র কোণার্ক ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী
      • শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নবকলেবর যাত্রা ২০১৫ (বঙ্গাব...
      • দয়া আর মায়া সমান নয় । শ্রী শ্রী পরমহংস রামকৃষ্ণ দে...
      • আত্মানাং রথিনং বৃদ্ধি শরীরং রথমেব তু | মিমি ব্যান...
      • বৃন্দাবনে কৃষ্ণ লীলা। ঊমা মিস্ত্রী ১৯।০৬।২০১৮
      • শ্রীখণ্ডের গোপীনাথ / সুমনা সাহা / ১৯।০৬।২০১৮
      • আদ্যাপীঠের কালীপূজো / প্রদিপ ঘোষ / জুন ৯ ২০১৮
    • ►  March (3)
    • ►  February (2)
  • ►  2017 (22)
    • ►  December (1)
    • ►  November (1)
    • ►  September (1)
    • ►  August (1)
    • ►  July (7)
    • ►  June (6)
    • ►  May (2)
    • ►  April (1)
    • ►  March (2)
  • ►  2016 (9)
    • ►  July (3)
    • ►  June (1)
    • ►  January (5)
  • ►  2015 (77)
    • ►  December (3)
    • ►  November (1)
    • ►  October (2)
    • ►  September (5)
    • ►  August (9)
    • ►  July (5)
    • ►  June (13)
    • ►  May (14)
    • ►  April (7)
    • ►  March (7)
    • ►  February (3)
    • ►  January (8)
  • ►  2014 (56)
    • ►  December (9)
    • ►  November (2)
    • ►  October (2)
    • ►  September (8)
    • ►  August (6)
    • ►  July (2)
    • ►  June (7)
    • ►  May (4)
    • ►  April (6)
    • ►  March (5)
    • ►  February (5)
  • ►  2013 (49)
    • ►  December (2)
    • ►  November (5)
    • ►  October (4)
    • ►  September (4)
    • ►  August (10)
    • ►  July (5)
    • ►  June (6)
    • ►  May (4)
    • ►  March (2)
    • ►  February (3)
    • ►  January (4)
  • ►  2012 (26)
    • ►  December (3)
    • ►  November (7)
    • ►  September (2)
    • ►  August (6)
    • ►  July (5)
    • ►  June (1)
    • ►  May (1)
    • ►  March (1)

Followers

Popular Posts

  • কেয়া চক্রবর্তী মৃত্যু - হত্যা ? দুর্ঘটনা ? আত্মহত্যা ?
       কেয়া চক্রবর্তী মৃত্যু - হত্যা ? দুর্ঘটনা ? আত্মহত্যা ?      অঞ্জন দত্ত  ১৩ মার্চ রবিবার সকাল দশটায় পোর্ট পুলিশের লঞ্চ সাঁ...
  • যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯ ম (শেষপর্ব )
    যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম   ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী শেষ পর্ব সুদীপ্...
  • তথ্য সূত্র – কলিকাতা দর্পণ / রাধারমণ মিত্র
             কথা কলকাতাঃগোরুর গাড়ি থেকে জেটযুগ কলকাতার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা   : গোরুর গাড়ি থেকে জেট যুগ আমাদের স্কুল-কলেজে...
  • প্রেমের গল্প যন্ত্রমানব@ভালোবাসা.কম। ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ০১.০৭.২০১৭ /
          শব্দের মিছিল   |   জুন ৩০, ২০১৭   |   গল্প Views: 28 “আমার দোসর যে জন ওগো তারে কে জানে একতারা তার দেয় কি সাড...
  • সানির প্রেম কাহিনী ::. Soncita L Nova
    :: সানির প্রেম কাহিনী ::. সানির প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে খুব সকালে , যদিও ঘুম ভেঙ্গে দেখে সকাল ১১ টা বেজে গেছে   । ফ্রেশ হবার পর এক গ্লাস আ...
  • =অপরাধীর পেছনে= (অপরাধমূলক ডিটেকটিভ কাহিনী) -বিভূতি চক্রবর্তী
    = অপরাধীর পেছনে= ( অপরাধমূলক ডিটেকটিভ কাহিনী) - বিভূতি চক্রবর্তী ( ১) শুধুমাত্র তৎপরতা ,' পুলিশ-কুকুরের ' কেরামতি নয় , নয় কোন...
  • নেতজী সুভাষ চনদ্র বসু মৄত্যু রহস্য সুশানত কর।
    সুভাষ চন্দ্রঃ মৃত্যু নিয়ে এক ধ্রুপদি শিল্পের স্রষ্টা ( লেখাটি বেরিয়েছিল আজ থেকে ঠিক দশ বছর আগে গোপাল বসু সম্পাদিত তিনসুকিয়ার...
  • শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নবকলেবর যাত্রা ২০১৫ (বঙ্গাব্দ ১৪২২ সাল) ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ৩১.০৩.২০১৫(বুধবার) / সন্ধ্যা ৭.৫০ ।
        শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নবকলেবর যাত্রা ২০১৫ (বঙ্গাব্দ ১৪২২ সাল) ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ৩১.০৩.২০১৫(বুধবার) / সন্ধ্যা ৭.৫০ । ...
  • “ছোট গল্প” যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ২৫.১২.২০১৪ / ১১.৪৮ / খৃষ্ট মাস / বৃহস্পতিবার
        “ছোট গল্প” যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম  ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ২৫.১২.২০১৪ / ১১.৪৮ / খৃষ্ট মাস / বৃহস্পতিবার / “আমার দোসর যে জন ওগো তার...
  • রমলা বৌদি ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী /২৭.০২.২০১৪
    রমলা বৌদি   ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী /২৭.০২.২০১৪ রমলা বৌদি আমাদের পাসের বাড়িতেই থাকেন। সংসার বলতে শ্বশুর  , শ্বাশুডী এক ননদ , রম...

mtribhuban.blogspot.com.com

Use Avro Software to post in Bengali font and download the same from http://www.omicronlab.com. অভ্র সফট্ওয়ার ব্যবহার করুন বাংলা ফন্ট এ লিখতে। ডাউনলোড করুন এই ওয়েব সাইট্ থেকে http://www.omicronlab.com.

গল্প হলেও সত্যি

  • কেয়া চক্রবর্তী মৃত্যু - হত্যা ? দুর্ঘটনা ? আত্মহত্যা ?
       কেয়া চক্রবর্তী মৃত্যু - হত্যা ? দুর্ঘটনা ? আত্মহত্যা ?      অঞ্জন দত্ত  ১৩ মার্চ রবিবার সকাল দশটায় পোর্ট পুলিশের লঞ্চ সাঁ...
  • যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯ ম (শেষপর্ব )
    যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম   ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী শেষ পর্ব সুদীপ্...
  • তথ্য সূত্র – কলিকাতা দর্পণ / রাধারমণ মিত্র
             কথা কলকাতাঃগোরুর গাড়ি থেকে জেটযুগ কলকাতার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা   : গোরুর গাড়ি থেকে জেট যুগ আমাদের স্কুল-কলেজে...
  • প্রেমের গল্প যন্ত্রমানব@ভালোবাসা.কম। ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ০১.০৭.২০১৭ /
          শব্দের মিছিল   |   জুন ৩০, ২০১৭   |   গল্প Views: 28 “আমার দোসর যে জন ওগো তারে কে জানে একতারা তার দেয় কি সাড...
  • সানির প্রেম কাহিনী ::. Soncita L Nova
    :: সানির প্রেম কাহিনী ::. সানির প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে খুব সকালে , যদিও ঘুম ভেঙ্গে দেখে সকাল ১১ টা বেজে গেছে   । ফ্রেশ হবার পর এক গ্লাস আ...
  • =অপরাধীর পেছনে= (অপরাধমূলক ডিটেকটিভ কাহিনী) -বিভূতি চক্রবর্তী
    = অপরাধীর পেছনে= ( অপরাধমূলক ডিটেকটিভ কাহিনী) - বিভূতি চক্রবর্তী ( ১) শুধুমাত্র তৎপরতা ,' পুলিশ-কুকুরের ' কেরামতি নয় , নয় কোন...
  • নেতজী সুভাষ চনদ্র বসু মৄত্যু রহস্য সুশানত কর।
    সুভাষ চন্দ্রঃ মৃত্যু নিয়ে এক ধ্রুপদি শিল্পের স্রষ্টা ( লেখাটি বেরিয়েছিল আজ থেকে ঠিক দশ বছর আগে গোপাল বসু সম্পাদিত তিনসুকিয়ার...
  • শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নবকলেবর যাত্রা ২০১৫ (বঙ্গাব্দ ১৪২২ সাল) ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ৩১.০৩.২০১৫(বুধবার) / সন্ধ্যা ৭.৫০ ।
        শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর নবকলেবর যাত্রা ২০১৫ (বঙ্গাব্দ ১৪২২ সাল) ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ৩১.০৩.২০১৫(বুধবার) / সন্ধ্যা ৭.৫০ । ...
  • “ছোট গল্প” যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ২৫.১২.২০১৪ / ১১.৪৮ / খৃষ্ট মাস / বৃহস্পতিবার
        “ছোট গল্প” যন্ত্রমানব@ভালবাসা.কম  ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ২৫.১২.২০১৪ / ১১.৪৮ / খৃষ্ট মাস / বৃহস্পতিবার / “আমার দোসর যে জন ওগো তার...
  • রমলা বৌদি ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী /২৭.০২.২০১৪
    রমলা বৌদি   ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী /২৭.০২.২০১৪ রমলা বৌদি আমাদের পাসের বাড়িতেই থাকেন। সংসার বলতে শ্বশুর  , শ্বাশুডী এক ননদ , রম...

About Me

গল্পগচ্ছ
View my complete profile
Awesome Inc. theme. Theme images by molotovcoketail. Powered by Blogger.