মরিচিকা
ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী
পুরন লুনাটা
নিয়ে আদিত্য বাবু বেরিয়ে পডলেন । আজ পেন্সন পাওয়ার তারিখ । তখন পেন্সন এর টাকা
আনতে ব্যাঙ্কে যেতে হত ।
- স্ত্রী বললেন,
গাডীটা নিয়েই যাওনা !
- আদিত্য ঃ না থাক । পেট্রোল এর যা দাম বাডছে তাতে রিটায়ারের পর আর
গাডির সখ না করাই ভাল।
- -কেন ? রেক্স তোমায় টাকা পাঠায় না ? আমেরিকা থেকে তোমার একাউন্টে ডলার তো ফি মাসে আসে
। তবে কেন কষ্ট করবে তুমি ! খেয়ে যাওনা কিছু ! ওরম না খেলে শরীর খারাপ হলে কে
দেখবে ? আমার কথাত তোমার কাছে টোকো বাশি পান্তা !
-
- দ্যাখ
কোথাউ বেরুবার সময় গজ গজ করনা । ভাল লাগেনা তোমার ওই একঘেয়ে আমেরিকা র কথা ।
আজকাল কার বাডিতে কোন ছেলেমেয়ে আমেরিকা না
গিয়ে আছে ! আমাদের এ পাডাতে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে হয় ইঞ্জিনীয়ার নয় ডাক্তার । হা
ঘরের মত রাস্তায় ব্যাজ ব্যাজ কোরনাত।
- “ছেলে ! বাবার মুখে চুন কালি দিয়েছে ; ছেলে !!” মনে মনে গজরাতে লাগ্লেন আদিত্য বাবু ।
- -ওমা আমিকি তাই বোল্লাম নাকি? কথার কি ছিরি দ্যাখ ? রিটায়ারমেন্টের পর কি সবাই এই রকম কথা বলেন ! কিছু মুখে দিয়ে যাও
না ?
আদিত্য বাবু কথা
কানে না দিয়ে জলখাবার না খেয়েই চলে
গেলেন । ছেলের বিয়ের কথা জানার পর ওর কাছ থেকে এক পয়সা
নেওয়া বন্দ করে দিয়েছেন।
সেদিন ব্যাঙ্কের
পুরন বন্ধুদের সঙ্গে দ্যাখা । চা সিগারেটের ফোয়ারা ছুটল । পকেটে প্রথম পেন্সেন
জদিও নগন্ন্য মাত্র কিন্তু আদিত্য বাবুর কোন অভিজোগ নেই এ ব্যাপারে ।কারন
রিটায়ারমেন্টের পর স্টেট্ ব্যাঙ্কে খুব কম টাকা পেন্সন দেয় । গ্রাচুইটির টাকা সব
ফিক্সড ডেপসিট করে দিয়েছেন আদিত্য বাবু। কিছু বন্ধু ; ছেলের বিয়ের কথা পাডলেন । মেয়ে গছানোর লোকের ত
অভাব নেই ! সব্বাই টোপ ফেলে আছেন যদি এই সুবাদে মেয়েকে
গছানো যায়। ওসব কথায় আমল দিলেন না । ও প্রসংগ এডিয়ে ওন্য কথা বলতে লাগ্লেন ।
কারন ওনার ছেলে এক আমেরিকান সহ কর্মিকে বিয়ে করে ফেলেছে ।মা’কে যানিয়েছিল
বাবকে যানায় নি। সেই থেকে আদিত্য বাবুর ছেলের ওপর অভিমান ।
- দুটো বেজে গিয়েছে , অর্চনা দেবি ঘরে পায়চারি কোরতে কোরতে বললেন ।
মানুস টার এখনো আসার সময় হলনা ?
৩ টে বাজল ৪ টে বাজল স্বামির আসার কোনআভাস পেলেন না । তখন মোবাইল ছিল না । ল্যান্ড ফোন ই ভরসা । কি ভেবে, ছোট
জামাই কে ফোন কোরলেন ।
No comments:
Post a Comment