Tuesday, March 26, 2024

©প্রতিবাদ ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️ ২৬.০৩.২০২৪ মঙ্গলবার

©প্রতিবাদ ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️ ২৬.০৩.২০২৪ মঙ্গলবার স্যার আমার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করবেন না প্লিজ। আমি ঐ ধরণের মেয়ে নই। আমার বাবা অসুস্থ। মা ছোটবেলায় ইহাধাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমার ওপর সংসারের সমস্ত দায়িত্ব। বুঝতেই পারছেন আমার কতো টেনশন! কথাগুলো বলে সম্পূর্ণা এক গ্লাস জল খেল। বস :- তুমি কর্পোরেট অফিসে চাকরি করার যোগ্যতা রাখোনা। বস কে খুশি করতে পারলে তোমার উন্নতি নিশ্চিৎ। সম্পুর্না :- শুনেছি আপনার স্ত্রী আছেন এবং একটি মেয়ে আছেন তিনি মেডিক্যাল পড়ছেন। আপনার মেয়ের সঙ্গে যদি কোন প্রফেসার এইরকম অসভ্যতা করে......!!! - মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ !! - কেন নিজের মেয়ে বলে গায়ে লাগলো বুঝি! - তোমার অস্পর্ধা দেখে আশ্চর্য হচ্ছি। - সেই এক ই কথা যদি আমি বলি....! - তাই নাকি? তোমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে পারি। ,- দেশে আইন কানুন আছে। আমিও দেখবো আপনি আমাকে কি করে বরখাস্ত করতে পারেন। - ভয় দেখাচ্ছ! - দেখাচ্ছি নয় আপনি ভয় পাচ্ছেন। স্পষ্ট দেখছি আপনি এই শীতে ঘামছেন। আপনার সঙ্গে কথা বলতে আমার ঘৃণা করছে। একজন কন্যা র বয়েসি মেয়েকে আপনি মলেস্টশন করতে চাইছিলেন। তাকে বারে বারে চেম্বারে ডেকে নানা ইঙ্গিত করা কাছে ডাকা। ইচ্ছেকরে গায়ে হাত দেওয়া। এগুলো কি একজন পিতৃতুল্য লোকের কাজ? আমি সাম্বাদিকের কাছে যাচ্ছি। দেখি আপনি আমাকে বরখাস্ত করেন না নিজেই বরখাস্ত হন। নমস্কার। - এই শোন তুমি বড্ড বড় বড় কথা বলছো। তুমি জানোনা আমি কে? - জানি আপনি একজন লম্পট পুরুষ রুপি পাষন্ড। - কি বললে? আমি লম্পট!! কালকেই তোমায় টারমিনেশন লেটার পাঠাচ্ছি - হিম্মত থাকলে পাঠান। এই বলে বসের চেম্বার থেকে সম্পূর্ণা প্রস্থান করলো। *দ্বিতীয় পর্ব* বস একটি নামি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির রিজিওনাল ম্যানেজার। তাঁর এই ছেঁদো মহিলার কথায় বিচলিত হওয়ার কথা নয়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে স্টেনোকে ডাকলেন। স্টেনো চেম্বারে ঢুকে সুপ্রভাত জানালো। বস জিজ্ঞাসা করলেন সম্পূর্ণা র বিষয়। ও কি ধরণের মহিলা ইত্যাদি..... স্টেনো বললেন খুব জেদি মহিলা। ওর কিছু সাম্বাদিক বন্ধু আছে। তারা ওকে অনেক ক্ষেত্রে প্রটেকশন দেয়। - হুম। তারপর.... ঐটুকুই জানি স্যার। - ওকে আপনি আসতে পারেন। - বস চিন্তায় পড়লেন। কিছু অঘটন ঘটাবে নাতো মহিলাটি। এরা বামপন্থী নিশ্চই। নারা বাজি আর বন্দ হরতাল এদের রক্তে। ওকে বুঝিয়ে বলবো। কিন্তু পরক্ষনেই ওনার পৌরুষে লাগে। সুধীর বটব্যাল আপোষ সমাধান করবে একটি মহিলার সঙ্গে.....!! একটি ফোন এলো ল্যান্ড ফোনে। - হ্যালো বটব্যাল হিয়ার। - আপনার ব্যাট স্টাম্পে লেগে আপনি আউট হয়ে যাবেন স্যার। সাবধানে থাকবেন । মহিলা কর্মচারীর সঙ্গে অশালীন ব্যবহার। ওমেন মোলেস্টেশন ইন কর্পোরেট অফিস এই হেডিং নিউজ দেখতে চান? - কে আপিনি? আমাকে থ্রেট করছেন! - হ্যাঁ করছি। জথেষ্ট প্রমাণ আছে। বিনা প্রমানে আমরা কাউকে ঘাঁটাইনা। আজকে সাবধান করছি ভবিষ্যতে এই ধরণের অভিযোগ পেলে বিপদে পড়বেন। কালকে ওনার কাছে ক্ষমা না চাইলে যা ঘটবে তার জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। এক মেয়ের বয়েসি মহিলাকে sexual harrasment!! লজ্জা করেনা আপনার ! সাবধান। নমস্কার। - বসের সারা গা থেকে কাল ঘাম ছুটলো। কি সাংঘাতিক মেয়েটা। পেটে পেটে এতো ছিল। এই লোয়ার মিডিল ক্লাস মেয়েদের বড্ড বাড় বেড়েছে আজকাল। মনে মনে ঠিক করলেন ওকে বুঝিয়ে বলবেন। কিন্তু ও আরো পেয়ে বসবে তাহলে। *তৃতীয় পর্ব* সম্পুর্না অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছে কম্পিউটার কীবোর্ডে কি সব টাইপ করতে ব্যস্ত রইলো। মনে মনে ভাবে কাল চিন্ময় দার কথাগুলোর কি প্রতিক্রিয়া হয় দেখি। চিন্ময় দা বস কে সপাটে একটা চাঁটি মেরেছে। এখন বোধহয় সেই আঘাতটা ভুলতে পারেন নি। কালকে বস জানতেও পারেন নি আমি ওনার সমস্ত কথা রেকর্ডিং করেছি আমার মোবাইলে। সেই অডিও ক্লিপ চিন্ময় দার কাছে আছে। এখনো কোন ডাক আসেনি কিম্বা কাগজ আসেনি। তাহলে কি শেষ পর্যন্ত ওষুধ কাজে লেগেছে? একটা ফাইল এলো সমুর্ণার ডেস্ক এ। দেখছি যা আছে এক্সেল ব্রড সিটে কাজ করতে হবে। সম্পূর্ণা কাজে মন দিল। ইন্টারকামে কল এলো। ফাইলটা আজ চাই। ব্রড সিটে প্রিন্ট করে বিকেলের মধ্যে আমার টেবিলে যেন পৌঁছোয়। - ওকে বস। - ইন্টারকম রেখে বস মনে মনে ভাবলেন,দেখি কি করে সব কাজ সময় মতন করতে পারে!! সাম্বাদিক লাগিয়েছে আমার পেছনে। এখন এমন কাজ দেব যে দুদিনের কাজ একদিনে করতে হবে। না হলেই একসপ্লানেশন। এরমধ্যে একটা মেল এলো। বস মেলটা পেয়ে চিন্তাগ্রস্ত মনেহল। রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম পুঁছলেন। কাজে মন দিলেন। স্টেনো কে ডেকে কিছু ডিক্টটেশন দিলেন। সম্পূর্ণা বুঝতেই পারছে বস ওকে হয়রান করার জন্য বেশি বেশি কাজ দিচ্ছেন। মিসেস গোমস সম্পূর্ণা কে জিজ্ঞাসা করলেন কি হয়েছে তোমার। লাঞ্চে যাবেনা? - না আজ লাঞ্চ আনিনি। বাড়ি থেকে জলখাবার খেয়ে এসেছি। বাস ট্রামের যা অবস্থা অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছোনা এক সমস্যা। আমাদের মতন নিচু তলার কর্মচারীদের সমস্যা বোঝার কেউ নেই। আমাদের টাকা নেই যে নিজের গাড়ি রাখবো। এই যানজটে স্কুটি চালানো বিপদ। সেই বাস নয়তো অটোর ওপর নির্ভর। রোজ যাতায়াতে প্রাণ ওষ্ঠাগত তারওপর রুগ্ন বাবাকে দেখা। তাঁর ওষুধ পথ্য আমি খুব চিন্তায় থাকি ম্যাডাম। নিজের দিকে আমার তাকানোর সময় নেই। - সেকি তুমি লাঞ্চ না করে অফিসের কাজ করবে। কেন? তোমারতো একাউন্টস ডিপার্টমেন্ট নয় তবে তোমাকে এই কাজ কে দিয়েছেন? - কে আবার নিশ্চই বস পাঠিয়েছেন আমাকে সায়েস্তা করতে। - মানে!!! - অফিসের পরে সব বলবো ম্যাডাম। এখন না। - আমি কিছুটা আঁচ করেছি। বলতে হবেনা। - হেড অফিসে কমপ্লেন করবো আমরা মহিলা কর্মচারীরা। এইসব জুলুম বাজি চলবেনা। - পরে কথাহবে। - সম্পুর্না ফাইলটা যথা সময়ে পাঠিয়ে দিল বসের কাছে। ফাইল মুভামেন্ট রেজিস্টারে ডিটেল্স লিখে পিওনের হাতে দিয়ে উঠলো। ক্যান্টিনে গিয়ে এক কাপ কফি আর একটা বার্গার খেল। আজ লাঞ্চ আনেনি। এই খেয়েই থাকতে হবে। *চতুর্থ পর্ব* পরের দিন অফিসে হেড অফিস থেকে অডিট পার্টি এলো। বস পারচেস কমিটি না করে বেআইনি ভাবে অনেক পারচেস করেছেন। টেন্ডার কল হয়নি। অফিস স্টেশনারি, এ. সি. এবং কম্পিউটার কেনা হয়েছে বিনা পারচেস কমিটির এপ্রুভালে। হেড অফিসথেকে শক্ত বাঁশ এলো সো কজ নোটিস হিসেবে। হয়তো চাকরি না থাকতেও পারে। অনেকে কমপ্লেন করেছেন বসের নামে। সম্পূর্ণা র অডিও টেপ কেউ পাঠিয়েছে হেড অফিসে। মহিলা কর্মচারীকে sexual harassment আরেকটা বাঁশ। বস এখন বুঝেছেন নিশ্চই যারা নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর চাকুরে তারাও মানুষ। তাদের প্রতি অন্যায় করলে ভগবান অসন্তুষ্ট হন। এ যাত্রায় তাঁর চাকরিটা থাকলে হয়। সম্পূর্ণা একটা প্রমোশন পেয়েছে। ও এখন জুনিয়র ম্যানেজার। এবারে বোধহয় একটা নিজের ফ্ল্যাট কিনতে পারবে ব্যাঙ্কের লোনে। তবেএকটা দুঃখ থেকেগেলো ওর বাবাকে বাঁচাতে পারলোনা। বাবা থাকলে খুব খুশি হতেন। দু হাত ভরে আশীর্বাদ করতেন। বাবার জন্য চোখে জল এলো। ঈশ্বর সব দিকদিয়ে মানুষ কে সুখী রাখেন না। তাহলে ঈশ্বরকে কেউ ডাকবেনা বোধহয়। ************সমাপ্ত************

©প্রতিবাদ ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️ ২৬.০৩.২০২৪ মঙ্গলবার

©প্রতিবাদ ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️ স্যার আমার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করবেন না প্লিজ। আমি ঐ ধরণের মেয়ে নই। আমার বাবা অসুস্থ। মা ছোটবেলায় ইহাধাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমার ওপর সংসারের সমস্ত দায়িত্ব। বুঝতেই পারছেন আমার কতো টেনশন! কথাগুলো বলে সম্পূর্ণা এক গ্লাস জল খেল। বস :- তুমি কর্পোরেট অফিসে চাকরি করার যোগ্যতা রাখোনা। বস কে খুশি করতে পারলে তোমার উন্নতি নিশ্চিৎ। সম্পুর্না :- শুনেছি আপনার স্ত্রী আছেন এবং একটি মেয়ে আছেন তিনি মেডিক্যাল পড়ছেন। আপনার মেয়ের সঙ্গে যদি কোন প্রফেসার এইরকম অসভ্যতা করে......!!! - মাইন্ড ইওর ল্যাঙ্গুয়েজ !! - কেন নিজের মেয়ে বলে গায়ে লাগলো বুঝি! - তোমার অস্পর্ধা দেখে আশ্চর্য হচ্ছি। - সেই এক ই কথা যদি আমি বলি....! - তাই নাকি? তোমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে পারি। ,- দেশে আইন কানুন আছে। আমিও দেখবো আপনি আমাকে কি করে বরখাস্ত করতে পারেন। - ভয় দেখাচ্ছ! - দেখাচ্ছি নয় আপনি ভয় পাচ্ছেন। স্পষ্ট দেখছি আপনি এই শীতে ঘামছেন। আপনার সঙ্গে কথা বলতে আমার ঘৃণা করছে। একজন কন্যা র বয়েসি মেয়েকে আপনি মলেস্টশন করতে চাইছিলেন। তাকে বারে বারে চেম্বারে ডেকে নানা ইঙ্গিত করা কাছে ডাকা। ইচ্ছেকরে গায়ে হাত দেওয়া। এগুলো কি একজন পিতৃতুল্য লোকের কাজ? আমি সাম্বাদিকের কাছে যাচ্ছি। দেখি আপনি আমাকে বরখাস্ত করেন না নিজেই বরখাস্ত হন। নমস্কার। - এই শোন তুমি বড্ড বড় বড় কথা বলছো। তুমি জানোনা আমি কে? - জানি আপনি একজন লম্পট পুরুষ রুপি পাষন্ড। - কি বললে? আমি লম্পট!! কালকেই তোমায় টারমিনেশন লেটার পাঠাচ্ছি - হিম্মত থাকলে পাঠান। এই বলে বসের চেম্বার থেকে সম্পূর্ণা প্রস্থান করলো। *দ্বিতীয় পর্ব* বস একটি নামি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির রিজিওনাল ম্যানেজার। তাঁর এই ছেঁদো মহিলার কথায় বিচলিত হওয়ার কথা নয়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে স্টেনোকে ডাকলেন। স্টেনো চেম্বারে ঢুকে সুপ্রভাত জানালো। বস জিজ্ঞাসা করলেন সম্পূর্ণা র বিষয়। ও কি ধরণের মহিলা ইত্যাদি..... স্টেনো বললেন খুব জেদি মহিলা। ওর কিছু সাম্বাদিক বন্ধু আছে। তারা ওকে অনেক ক্ষেত্রে প্রটেকশন দেয়। - হুম। তারপর.... ঐটুকুই জানি স্যার। - ওকে আপনি আসতে পারেন। - বস চিন্তায় পড়লেন। কিছু অঘটন ঘটাবে নাতো মহিলাটি। এরা বামপন্থী নিশ্চই। নারা বাজি আর বন্দ হরতাল এদের রক্তে। ওকে বুঝিয়ে বলবো। কিন্তু পরক্ষনেই ওনার পৌরুষে লাগে। সুধীর বটব্যাল আপোষ সমাধান করবে একটি মহিলার সঙ্গে.....!! একটি ফোন এলো ল্যান্ড ফোনে। - হ্যালো বটব্যাল হিয়ার। - আপনার ব্যাট স্টাম্পে লেগে আপনি আউট হয়ে যাবেন স্যার। সাবধানে থাকবেন । মহিলা কর্মচারীর সঙ্গে অশালীন ব্যবহার। ওমেন মোলেস্টেশন ইন কর্পোরেট অফিস এই হেডিং নিউজ দেখতে চান? - কে আপিনি? আমাকে থ্রেট করছেন! - হ্যাঁ করছি। জথেষ্ট প্রমাণ আছে। বিনা প্রমানে আমরা কাউকে ঘাঁটাইনা। আজকে সাবধান করছি ভবিষ্যতে এই ধরণের অভিযোগ পেলে বিপদে পড়বেন। কালকে ওনার কাছে ক্ষমা না চাইলে যা ঘটবে তার জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। এক মেয়ের বয়েসি মহিলাকে sexual harrasment!! লজ্জা করেনা আপনার ! সাবধান। নমস্কার। - বসের সারা গা থেকে কাল ঘাম ছুটলো। কি সাংঘাতিক মেয়েটা। পেটে পেটে এতো ছিল। এই লোয়ার মিডিল ক্লাস মেয়েদের বড্ড বাড় বেড়েছে আজকাল। মনে মনে ঠিক করলেন ওকে বুঝিয়ে বলবেন। কিন্তু ও আরো পেয়ে বসবে তাহলে। *তৃতীয় পর্ব* সম্পুর্না অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছে কম্পিউটার কীবোর্ডে কি সব টাইপ করতে ব্যস্ত রইলো। মনে মনে ভাবে কাল চিন্ময় দার কথাগুলোর কি প্রতিক্রিয়া হয় দেখি। চিন্ময় দা বস কে সপাটে একটা চাঁটি মেরেছে। এখন বোধহয় সেই আঘাতটা ভুলতে পারেন নি। কালকে বস জানতেও পারেন নি আমি ওনার সমস্ত কথা রেকর্ডিং করেছি আমার মোবাইলে। সেই অডিও ক্লিপ চিন্ময় দার কাছে আছে। এখনো কোন ডাক আসেনি কিম্বা কাগজ আসেনি। তাহলে কি শেষ পর্যন্ত ওষুধ কাজে লেগেছে? একটা ফাইল এলো সমুর্ণার ডেস্ক এ। দেখছি যা আছে এক্সেল ব্রড সিটে কাজ করতে হবে। সম্পূর্ণা কাজে মন দিল। ইন্টারকামে কল এলো। ফাইলটা আজ চাই। ব্রড সিটে প্রিন্ট করে বিকেলের মধ্যে আমার টেবিলে যেন পৌঁছোয়। - ওকে বস। - ইন্টারকম রেখে বস মনে মনে ভাবলেন,দেখি কি করে সব কাজ সময় মতন করতে পারে!! সাম্বাদিক লাগিয়েছে আমার পেছনে। এখন এমন কাজ দেব যে দুদিনের কাজ একদিনে করতে হবে। না হলেই একসপ্লানেশন। এরমধ্যে একটা মেল এলো। বস মেলটা পেয়ে চিন্তাগ্রস্ত মনেহল। রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম পুঁছলেন। কাজে মন দিলেন। স্টেনো কে ডেকে কিছু ডিক্টটেশন দিলেন। সম্পূর্ণা বুঝতেই পারছে বস ওকে হয়রান করার জন্য বেশি বেশি কাজ দিচ্ছেন। মিসেস গোমস সম্পূর্ণা কে জিজ্ঞাসা করলেন কি হয়েছে তোমার। লাঞ্চে যাবেনা? - না আজ লাঞ্চ আনিনি। বাড়ি থেকে জলখাবার খেয়ে এসেছি। বাস ট্রামের যা অবস্থা অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছোনা এক সমস্যা। আমাদের মতন নিচু তলার কর্মচারীদের সমস্যা বোঝার কেউ নেই। আমাদের টাকা নেই যে নিজের গাড়ি রাখবো। এই যানজটে স্কুটি চালানো বিপদ। সেই বাস নয়তো অটোর ওপর নির্ভর। রোজ যাতায়াতে প্রাণ ওষ্ঠাগত তারওপর রুগ্ন বাবাকে দেখা। তাঁর ওষুধ পথ্য আমি খুব চিন্তায় থাকি ম্যাডাম। নিজের দিকে আমার তাকানোর সময় নেই। - সেকি তুমি লাঞ্চ না করে অফিসের কাজ করবে। কেন? তোমারতো একাউন্টস ডিপার্টমেন্ট নয় তবে তোমাকে এই কাজ কে দিয়েছেন? - কে আবার নিশ্চই বস পাঠিয়েছেন আমাকে সায়েস্তা করতে। - মানে!!! - অফিসের পরে সব বলবো ম্যাডাম। এখন না। - আমি কিছুটা আঁচ করেছি। বলতে হবেনা। - হেড অফিসে কমপ্লেন করবো আমরা মহিলা কর্মচারীরা। এইসব জুলুম বাজি চলবেনা। - পরে কথাহবে। - সম্পুর্না ফাইলটা যথা সময়ে পাঠিয়ে দিল বসের কাছে। ফাইল মুভামেন্ট রেজিস্টারে ডিটেল্স লিখে পিওনের হাতে দিয়ে উঠলো। ক্যান্টিনে গিয়ে এক কাপ কফি আর একটা বার্গার খেল। আজ লাঞ্চ আনেনি। এই খেয়েই থাকতে হবে। *চতুর্থ পর্ব* পরের দিন অফিসে হেড অফিস থেকে অডিট পার্টি এলো। বস পারচেস কমিটি না করে বেআইনি ভাবে অনেক পারচেস করেছেন। টেন্ডার কল হয়নি। অফিস স্টেশনারি, এ. সি. এবং কম্পিউটার কেনা হয়েছে বিনা পারচেস কমিটির এপ্রুভালে। হেড অফিসথেকে শক্ত বাঁশ এলো সো কজ নোটিস হিসেবে। হয়তো চাকরি না থাকতেও পারে। অনেকে কমপ্লেন করেছেন বসের নামে। সম্পূর্ণা র অডিও টেপ কেউ পাঠিয়েছে হেড অফিসে। মহিলা কর্মচারীকে sexual harassment আরেকটা বাঁশ। বস এখন বুঝেছেন নিশ্চই যারা নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর চাকুরে তারাও মানুষ। তাদের প্রতি অন্যায় করলে ভগবান অসন্তুষ্ট হন। এ যাত্রায় তাঁর চাকরিটা থাকলে হয়। সম্পূর্ণা একটা প্রমোশন পেয়েছে। ও এখন জুনিয়র ম্যানেজার। এবারে বোধহয় একটা নিজের ফ্ল্যাট কিনতে পারবে ব্যাঙ্কের লোনে। তবেএকটা দুঃখ থেকেগেলো ওর বাবাকে বাঁচাতে পারলোনা। বাবা থাকলে খুব খুশি হতেন। দু হাত ভরে আশীর্বাদ করতেন। বাবার জন্য চোখে জল এলো। ভগবান সব দিকদিয়ে মানুষ কে সুখী রাখেন না। তাহলে ভগবানকে কেউ ডাকবেনা বোধহয়। ************সমাপ্ত************

Thursday, March 21, 2024


  পিছুডাক অণু গল্পের শর্ট ফিল্মের জন্য চিত্রনাট্য।

পিছুডাক গল্পের চিত্রনাট্য  
©ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী✍️
 *প্রথম দৃশ্য*
সময় :- বিকেল ৫.৩০ টা
স্থান ( location) :- পুকুর পাড়ের এক রাস্তা। সামনে একটা অনেক দিনের পুরোনো পরিত্যাক্ত পোড় বাড়ি। আগাছা ভর্তি। বাড়িটার সামনে একটা বেল গাছ। 
পাত্র (artist) :- এক ভদ্রলোক বিকেলের ভ্রমনে বেড়িয়েছেন
  তাঁকে দেখে পুকুর পাড় থেকে আর একটি লোক ডাকলেন (ভূত) 
 অন্যমনস্ক ভাবে ভদ্রলোক ঘুরছিলেন হটাৎ থমকে দাঁড়ালেন একটা ডাক শুনে......
 ভূত :- আরে চ্যাটার্জী বাবু কোথায় যাচ্ছেন সন্ধ্যে বেলায়? ওদিকটায় যাবেন না. ওই পোড় বাড়িটার সামনে একটা বেল গাছে ব্রহ্ম দৈত্য আছে.
 ভদ্রলোক :-কে কে আপনি? আপনাকে ত দেখিনি এদিকে ! 
 ভূত :-দেখবেন কি করে আমি ত এখানে বেশি দিন থাকি না.মাঝে মাঝে আসি আবার চলে যাই.
 ভদ্রলোক :-আপনি কি করে জানলেন ব্রহ্ম দৈত্য আছে বলে? আর ব্রহ্ম দৈত্য কি কেউ কোন দিন দেখেছেন? না শুনেছেন?  
 ভূত :- জানি জানি আমার কথা শুনলে আপনিও বিশ্বাস করবেন মোসাই.চলুন ওই পুকুর পাড়টায় বসি.আপনাকে পুরো কাহিনী টা শোনাবো.
ভদ্রলোক :-আপনাকে চিনি না জানিনা কখন দেখিনি আমাকে কেন ডাকছেন কাহিনী শোনানোর জন্য? আমি ই বা যাব কেন? বলুন ত? 
 *দ্বিতীয় দৃশ্য*
 সময় :- সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। ০৬.৩০
 স্থান (location)
একটা সুন্দর বাঁধানো পুকুর পাড়। ভদ্রলোক কে ডেকে ওখানে বসালো অন্য লোকটি যে ওনাকে পেছন থেকে ডেকেছিল চ্যাটার্জি বাবু বলে.....
ভূত :- আসবেন আসবেন আস্তেই হবে এই কাহিনী র টান এমন, কেউ না এসে পারে না ! 
 ভদ্রলোক :- আপনি আমার নাম জানলেন কি করে বলুন ত?  
 ভূত :- জানতে হয় ওটাই আমাদের নিয়ম ! 
 ভদ্রলোক :- তাই বুঝি? 
 ভূত :- হ্যাঁ তাই.
( মনে মনে ভাবলেন ভদ্রলোক ) 
এই ভদ্রলোকটি একটু বেশি কথা বলছেন না ! মনে মনে ভাবি. 
 ভূত :-ও আপনি ভাবছেন আপনাকে কেন ডাকছি? চিন্তা করবেন না. আমি চোর ডাকাত নই. আপনার মতন এক সাধারন মানুষ. আমার ও স্ত্রী পুত্র পরিবার ছিল। এখন অবশ্য আমি একা। তাই লোক দেখলেই তাকে আপন করার সূত্র খুঁজি।
 ভদ্রলোক :- সূত্র খোঁজেন মানে !
 *তৃতীয় দৃশ্য*
 ( ভূত তার জীবন কাহিনী শুরু করলো )
 *ভূত একটু অন্যমনস্ক ছিল। ভাবুক হয়ে শুরু করলো*
 সময় বেলা ১২ টা ( এই দৃশ্য flash back ) 
  স্থান ( location) একটা ভালো সাজানো ঘর। ডাইনিং টেবিল। লাঞ্চ দেওয়া হয়েছে টেবিলে। 
  পাত্র, পাত্রী :- পাত্র :- এক ভদ্রলোক( ভূত ) বেঁচে থাকতে দিনের বেলা খেতে বসেছেন।
পাত্রী :-গিন্নী খাবার দিতে দিতে কিছু কথা বলছেন।
 ভূত :- (খাবার টেবিলে বসে ) এইসব ছাই পাঁশ খাওয়া যায়!
 গিন্নী :- কেন ছাই পাঁসের কি হল? একবার স্ট্রোকের পর লোকে কি কালিয়া পোলাও খাবে? যা দিয়েছি লক্ষ্মী ছেলেটির মতন খেয়ে নাও।
ভূত :- ছেলেটা কবে আসবে কে জানে? বড় অসহায় লাগে ওর অবর্তমানে। ও এলে ভালো রান্না হবে তখন ঠিক পাতে পড়বে।
গিন্নী :- বলি তোমার কি মতিভ্রম হল না কি? ডাক্তার যা খাওয়ার জন্য বলেছেন তাই দিচ্ছি। খেয়ে নাও।
ভূত :- ডাক্তার রা মানুষ নয়। ওরা আমাদের গরু ছাগল ভাবে। ব্যাটারা মোটা টাকা নেয় আর বলে কিনা বিনা তেল মসলার রান্না খান। এইসব খেয়ে মানুষ কত দিন বাঁচবে?
 গিন্নী :- তোমার কি মতলব বোলো তো ! কি খাবে তুমি? রোগ বাঁধিয়েছ। একটা স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। আমি একা হাতে সব করছি। তাও তুমি শান্তি দেবেনা বলে চোখ পুঁছলেন আঁচল দিয়ে।
 ভূত :- আহা রাগ করছো কেন?
 গিন্নী :- থাক আর আদিখ্যেতা করতে হবেনা।
 ভূত :- লক্ষ্মী ছেলেটির মতন খেয়ে নিল।
 *চতুর্থ দৃশ্য*
 সময় :- ভর সন্ধ্যা বেলা।
পাত্র 
 ( ভদ্রলোকের প্রশ্ন -সূত্র খোঁজেন মানে.....শুনে ভূত উত্তর দেন ) 
ভূত :- এই দেখ সব কথা ওরকম টেড়া বেঁকা করে দেখলে চলে। মানুষকে বিশ্বাস করতে হয়.।
 ভদ্রলোক :- তাই! তা কি বিশ্বাস করবো? 
ভূত :- শুনুন আমার সংসারে আমি আর আমার স্ত্রী। আমাদের এক পুত্র সন্তান। সে ত থাকে সুদুর আমেরিকায় থাকে।
ভদ্রলোক :- সেতো আজকাল অনেকেরি থাকে।
ভূত :- শুনুন না মোশাই। আমি আর আমার স্ত্রী মাত্র দুজনে থাকি। আমাদের মধ্যে দিনের মধ্যে দু একটা কথা ছাড়া কথা বলার লোকের অভাব। ওই খেতে দেওয়ার সময় আর ওষুধ খাওয়ানোর সময় ছাড়া আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বড় একটা কথা বার্তা হয়না।
 (নেপথ্যে )
ভূত :- এর মধ্যে আমার একটা স্ট্রোক হয়ে গেল. মরে যেতাম তবে বেঁচে গেলাম. ডাক্তার বাবু এঞ্জিওগ্রাফি করে বাঁচালেন. এ যাত্রায় জম নিতে পারলোনা. তবে চিত্রগুপ্তর খাতা দেখে জম বলেন তোর মৃত্যু অনিবার্জ.
*শেষ দৃশ্য* 
 ভূত :- ঠিক তাই হল । পরের স্ট্রোকে খতম । এখন দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছি লোকের সংগে কথা বলছি । ও চ্যাটার্জী বাবু আপনার কি হল? 
 *নিচের কথাগুলো নেপথ্যে কেউ বলতে পারেন কিম্বা স্ক্রিনে লেখা হতে পারে* *সঙ্গে ভৌতিক আবাহ সংগীত* রঞ্জন পাত্রর লেখা গানটা নেপথ্যে হলে ভালো হয়। 
আর চ্যটার্জি বাবু !!!! ভূত ভূত বলে ওইখানেই জ্ঞান হারালেন ভদ্রলোক। তাঁর আর অজানা রইলোনা যার সঙ্গে কথা বলছিলেন সে নিজেই একটা ভূত। 
 ভূত :- কি মুস্কিল ! আমি কি ভূত নাকি?

Sunday, March 17, 2024



 

গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক :-

*** চন্ডিতলা *** 

ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জি

 প্রায় সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত হতে চললো । মফঃস্বল অঞ্চলে সন্ধ্যার পর অন্ধকার নেমে আসে । রাস্তায় তো স্ট্রিট লাইট নেই ।

ঘড়িতে রাত সাড়ে আটটা বাজে । দূর থেকে বাস স্ট্যান্ড টা খাঁ খাঁ করছে । কেউ নেই ।

 কিন্তু কাছে আসতেই দেখি এক মহিলা কংক্রিটের বেঞ্চে একা একা বসে আছেন ।

 পরনে একটা সুতির শাড়ি । খুব ই গরিব ঘরের বৌ মনে হচ্ছে । মুখটা ঘোমটায় ঢাকা ।....

 

আমার এই মফঃস্বল শহরে কিছু কাজ ছিলো । সেই সূত্রে এখানে আসা । বাস স্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস নেই ।

 ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাবে । অনেকটা পথ বাসে যেতে হবে ।

 

মহিলাটিকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কি কোথাও যাবেন?

- হ্যাঁ ।

- কোথায়?

-  চন্ডিতলা।

- সেকি এই রাতে অতো দূরে যাবেন?

- হ্যাঁ যেতেই হবে ।

- কিছু মনে করবেন না, এতো রাতে বাসে যাবেন? আপনার সঙ্গে ত কেউ নেই দেখছি ।

- না নেই । আমার কেউ নেই বলে কাঁদতে লাগলেন ।

মহিলাটি খুব অন্যমনস্ক মনে হচ্ছিলো...

 

(নেপথ্যে )

 

 বৌমা তোর রান্না হোল?

- হ্যাঁ মা হয়ে গিয়েছে।

- তবে আমায় খেতে দিতে দেরি করছিস কেন?

 

- দিচ্ছি মা.. এখুনি দিচ্ছি এই বলে হাঁড়ি থেকে ভাত একটা কাঁসায় ঢেলে তাতে কিছু জল ঢেলে দিল

 এবং সঙ্গে কাঁচা লঙ্কা আর একটা গোটা পিঁয়াজ।পাশে কুমড়ো শাক ভাজা।

 

- আজ গরম ভাত করিসনি?

- গরম ভাত কি দিয়ে খাবেন মা, ঘরে ত কিছু নেই ডাল কিম্বা তরকারি করার মতন।

- কি করে থাকবে মা । একটা ছেলের ওপর পুরো সংসার সে ত সকাল থেকে রাত অবধি খেটে মরছে....

 তুই তোর বাড়ি থেকে তো কিছুই আনিসনি.. ছেলেটা কতো রোজগার করে তোকে আমাকে পুষবে বল।

 

- আমিও কাজ করতে চাই মা । কিন্তু আপনি,আপনার ব্যাটা তো বারুন করেন । মেয়েছেলে বাইরে কাজে যাবেনা ।

 -আমার কি দোষ মা ! বলুন !!

- না সব দোষ আমাদের মা.. তোর কেন হবে.. তোর বাপের বাড়ি থেকে তো কিছুই দেয়নি!

 

- প্রতিদিন এই বাপের বাড়ির খোঁটা খেয়ে দুটো ভাত আর রাত্তিরে স্বামীর অকথ্য শারীরিক অত্যাচারের কথা ভেবে

 ঠিক করলাম ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যাবো।তাই একলাই আজ বেরিয়ে পড়লাম ।

 উনি আসতে সেই রাত ১০ টা তার আগে আমি পৌঁছে যাবো ।  

 

- আপনি কাউকে কিছু না বলে এইরকম রাত দুপুরে ঘর ছেড়ে চলে গেলে আপনাকে আপনার স্বামী খোঁজা খুঁজি করবেনা?

 আমার কথায় মহিলাটি যেন কি ভাবছিলেন সেই ভাবনায় পূর্ণচ্ছেদ পড়লো ! একটু যেন চমকে উঠলেন.....

 

 ( মনেহল ভদ্রলোকের প্রশ্ন শুনে অন্যমনস্ক ছিলেন মহিলাটি ) 

 

- হ্যাঁ হ্যাঁ.. না না.. কেউ খুঁজবেনা বরং ওদের হাড় জুড়বে । ওরা চায় আমি ওদের ঘর থেকে চলে যাই ।

  তাহলে উনি আবার বিয়ে করবেন ।

 

- সেকি !

 

-হ্যাঁ ওরা আমার বাপের বাড়ির থেকে অনেক টাকা আশা করে যাতে আমার স্বামী নিজে একটা ব্যবসা করতে পারেন ।

 কিন্তু আমার ছোট ভাই সে মাকে দেখছে তার ওপর কতো টাকা রোজগার করবে যে আমাকে পুষবে আবার আমার মাকে

 তার বুড়ো বয়েসে দেখবে ।  আমার বাবা তো কিছুই রেখে যাননি । তবুও আমার ছোট ভাই অনেক দেখা সোনা করে আমার ।

 আর পারছেনা সে ।  এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে হাঁফ ছাড়লো মহিলাটি ।

 

- আপনি যদি কিছু মনে না করেন আপনি কি আমার সঙ্গে আমাদের বাড়ি অবধি যাবেন?

 

- কেন বলুন তো?

 

- আমার স্ত্রী শয্যাশায়ী । তাঁকে দেখা সোনা করার কেউ নেই । আমার টুরিং সার্ভিস ।

 আমাকে প্রায় বাইরে থাকতে হয় । স্ত্রী কে দেখার জন্য দুজোন আয়া এবং একজন নার্স আছেন ।

 তাঁরা সকাল বিকেল এবং রাতে থাকেন কিন্তু ২৪ ঘণ্টার লোক নেই ।

পাওয়া যাচ্ছেনা তাই আমিও বলি আপনি যদি সম্মতি জানান তবে আমার বাড়িতে আমার স্ত্রীর দেখা

শোনা করার জন্য থাকতে পারেন কিন্তু তার জন্য আমিও মাসহারা দেব এবং আপনার বাড়ির লোকের অনুমতি নেব ।

 

- কে আপনাকে অনুমতি দেবে? আমার স্বামী জানলে পুলিশে খবর দিয়ে আপনাকে হেনস্তা করবে ।  

- হ্যাঁ তা ঠিক । তবে থাক ।

- শুনুন আপনি কি সত্যি বলছেন না অবলা মহিলা দেখে টোপ ফেলছেন ।

- আমায় দেখে কি মনে হয় আপনার? আমিও কি খুব বাজে লোক?

- কি করে জানবো বলুন ! অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি এখন আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না ।

- ক্ষমা করবেন আমার বলাটাই ভুল বলে পিছন ফিরে সিগারেট ধরাতে চেষ্টা করলাম ।

  অন্ধকারে দেশলাইয়ের আগুনে পেছন ঘুরতেই দেখি মহিলাটা গায়েব ।

 কি হল? কোথায় গেলেন উনি? আমার কথায় কি ভয় পেয়ে চলে গেলেন !

 খটকা লাগলো মনে !! অনেক ক্ষণ একটা সিগারেটে খাওয়া হয়নি ।

ঠিক সিগারেট টা টানছি সেই সময় একটা বাস এলো । আমি হাত দেখাতে থামল।

 

- কন্ডাক্টর বললেন এখানে কেন দাঁড়িয়ে ছিলেন?

- কেন বলুন তো !

- না এখানে কেউ দাঁড়ায় না. আপনি নিশ্চই বাইরে থেকে এসেছেন !

- হ্যাঁ ।

- এক মহিলা আপনার সঙ্গে কথা বলছিলেন ।

- হ্যাঁ ।

- কোথায় যাবেন?

-  ঘাটাল ।

- টাকাটা দিন।  

 -হ্যা এই নিন টাকা এবার টিকিট টা দিন। 

 -এই নিন টিকিট।

- আপনার কিছু মনে হয়নি?

- নাতো, কি আবার মনে হবে?

 

- ওই মহিলাটি এক বছর আগে আত্মহত্যা করেছিলেন ।

 ওই যে একটা  শ্যাওড়া গাছ আছে বাস স্টপের পেছনে ওই গাছে !

 উনি সন্ধ্যা হলেই বেঞ্চে বসেন আর কাঁদেন । কেউ ওই সময় ওখানে থাকেনা ।

 ভাগ্য ভালো আপনার কিছু হয়নি ।  

 

- কিন্তু উনি তো আমার সঙ্গে দিব্বি কত কথা বলছিলেন ।

- হ্যাঁ আপনি ভালো লোক তাই কিছু হয়নি । একটু বেগতিক দেখলে টুঁটি টিপে দিতেন !

- কি বলেন দাদা, আমি স্পষ্ট দেখলাম জ্যান্ত মানুষ ।

- ওনার মুখ দেখেছেন?

- না

- এ যাত্রায় খুব বেঁচে গিয়েছেন । আমি দুর থেকেই বাসের হেড লাইটে আপনাকে দেখে গাড়ি দাঁড় করিয়েছি । আর কখনো ওখানে দাঁড়াবেন না ।

- আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছিনা কারণ আমি ভূতে বিশ্বাস করিনা ।

- দেখুন আমার বলার কথা আমি বলে দিলাম । এবার আপনি কি করবেন সেটা আপনার কথা ।

- একটা সিট ফাঁকা হওয়াতে সিটে গিয়ে বসলাম । খুব ক্লান্ত লাগছিলো । চোখ বুজিয়ে ঘটনাটা ভাবতে লাগলাম ।

  বাড়িতে গিন্নিকে বলবো । এখন একটু ঘুমোই । সারাদিন খাটা খাটুনিতে খুব ক্লন্ত লাগছে ।

 

  তবে কি সত্যি ভূত কি সত্যি আছে.......? আপনারা কি বলেন ! প্রস্ন রাখলাম আপনাদের কাছে ।

 

©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জি