মন্দারমনী’ পিক্ নিক্ ......... ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী / ১.১.২০১৩
মঙ্গলবার
চকোথাউ যে একটু পিক্ নিকে যাব তার উপায় নেই । সব কথতেই বাধা । গিন্নী গজ গজ করে উঠলেন । বাডী তো কেনা হয়েছে ৪ বছর হল । বাডী কেনার ঋনের কিস্তি চোলছে বলে বেডাতে যাব না? এ আবার কি কথা! আলু পেঁআজ কেনার সময়তেও ওই এক কথা ! আয় বুঝে ব্যায় কর !
ঘেন্না ধরে গেল তোমার সঙ্গে থাকতে থাকতে । এক ঘেয়ে জীবন আর ভাল লাগে না।...গিন্নি গজ্ গজ্ করে উঠলেন ।
ধুম্রায়িত চায়ের পেয়ালা হাতে সকালের আনন্দবাজার পডতে পডতে বলি ...তবে কোথায় যাবে বল ?
আমি কি বলব ? আমাদের বাডীর সবাই ত বলে, তোর সংসারে তোর কর্ত্তাই সব !
তা তোমার কি মনে হয়?
শোন না ‘মন্দারমনি’ যাবে? ওখানে গিয়ে একটু হাঁফ্ ছেডে বাঁচবো। এই প্রদুশন থেকে নিস্তার পাব। ম্যাগো সকাল থেকে খালি খেটে মর আর রান্না করো । কাজের লোক না এলে বাসুন মাজো , ঘর ঝাঁট্ পোঁছ কর । আর পারিনা। আমারো ত বয়েস হচ্ছে , না কি?
হ্যাঁ তা তো হচ্ছে । তা কি করব বল ! ব্যাঙ্কের কিস্তী গুলো শোধ হোগ তারপর ও সব হবে ।
মানে ? কোথাউ যাবে না ?
চল ‘বেলুডে যাই’। টাকা মাটি.. মাটি টাকা মনে হবে । তোমার ভাল লাগবে । সুন্দর পরিবেশ । প্রদুসন নেই , চারি দিকে ফুলের বাগান আর ফুল । গঙ্গার হাওয়া। খারাপ কি?
আমি যাই সকালে অনেক কাজ আছে ।
শুভ্র এলো সঙ্গে সম্পা কে নিয়ে। আমার ছেলে , বৌ । দুজনেই ইঞ্জীনিয়ার , একজন সফট্ ওয়ার ইঞ্জীনিয়ার আরেকজন ভেল্ এর ই-২ ইঞ্জীনিয়ার । ওরা খুব বন্ধু । সর্বদা হাঁসি হাঁসি মুখ। শুভ্র সম্পা দুজনেই ঢিপ্ করে প্রনাম করে বলল , সকালের ফ্লাইট্ এ চলে এলাম। আপনি কেমন আছেন বাবা ?
ভাল । তোমরা ?
খুব ভাল। মা কোথায় ? এটা আপনার জন্যে এনেছি । একটা শাল ।
এ সবের কি প্রয়োজন ছিল ? মা রান্না ঘরে । তোমরা আসবে তাই ।
মায়ের জন্যে অন্য একটা প্যাকেট্ মোড়া কি যেন ! বুঝতে পারলাম না।
ওরা ভেতরে চোলে গেল । গিন্নি গলার আওয়াজ পেয়েই বেরিয়ে এসে বললেন, তোরা এসেগেলি । নিশচিন্ত হলাম বাবা। হ্যাঁরে বেয়াই বেয়ান কেমন আছেন? দ্যাখা হয় তোদের সঙ্গে ? তুমি কেমন আছো মা? সম্পা কে জোডিয়ে ধোরে গিন্নি বলেন। আসলে বৌমাকে খুব ভাল বাসেন । বৌমা আমার হীরের টুক্রো । এমন শ্বাশুডী বৌমার জুটি কম দেখা জায় ।
ভাল। আপনি এত খাটা খাটনি করবেন না মা ।
কি আর খাটুনি? মঞ্জু তো আছে । ওই সব করে । আমি শুধু রান্না করি । সেটা কি আর করতাম না!
আমি একটু রান্নায় সাহাজ্য করি , বৌমা বলে ।
মাথা খারাপ । তুমি এই জার্নি করে এসে রান্না করবে ? রক্ষে কর । আমার হাথ পা এখনো ঠিক আছে মা!
মাইক্রো তে পিজা গুল গরম করবো ?
হ্যাঁ তা করতে পার । তবে সকাল সকাল ওই ইটালিয়ান পিজা না খেলেই নয় !
বাবা খেতে ভাল বাসেন আর শুভ্র ও খায় ।
আমার ছেলে বৌ , দুজনে দুজন কে নাম ধরেই ডাকে । আমার গিন্নী র কিন্তু এসবে কোন আপত্তি নেই আমার ও নেই। ওদের মধ্যে অ্যান্ডরস্ট্যান্ডিঁ টা খুব ভাল। একদিগদিয়ে আমি নিশচিন্ত শ্বাশুডী বৌমার রিলেসনশিপে কোন খামতি নেই । দুজনেই দুজন কে খুব ভালবাসে। বৌমা ভাল লেমন টি বানাতে পারে। আরেক কাপ্ চা জলখাবার নিয়ে বৌমা হাজির । আমি চায়ের কাপ্ টা নিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম , কোথায় বেডাতে যাবে ?
দেখি শুভ্র কোথায় নিয়েযায় !
কেন তোমরা কিছু প্লেনিং করনি?
না সেরকম কিছু না তবে ‘মন্দারমনি’ র কথা বলছিল ।
এখন বুঝলাম আমার গিন্নী কেন ওখানকার কথা বলছিল । তা ঠিক আছে যাওনা ঘুরে এস ।
শুভ্র এসে বললো, বাবা তোমার ড্রাইভার ‘প্রশান্ত’ কে দেখতে পাচ্ছিনা । ওকি কাজ ছেডে দিল?
না না ওকে আমি ছাডিয়ে দিয়েছি তবে ওকে ডাকলে আসে । ডেকে দব ?
গাডীর ইঞ্জিন্ অয়েল , কুলান্ট্ সব ঠিক আছে ত । বেটারীতে চার্জ আছে ? না আমি নিজেই ড্রাইভ্ করে নিয়েযাব । প্রশান্ত কে ডাকতে হবে না।
সেকিরে ! অতোখানি রাস্তা একা যাবি ? না না তা হয় না । আমি এখুনি ডেকে পাঠাচ্ছি । ধৈর্য্য ধর আমি সব ব্যাবস্থা করে দিচ্ছি । প্রশান্ত র মোবাইল্ নম্বরটা সেভ্ করা ছিল ভাগ্যিস্ নাহলে কি হত ।
প্রশান্তর দীঘা,মন্দারমনি সব ঘোরা। ও ত ট্রেভেলস্ এ কাজ করে । কোন অসুবিধে হবে বোলে মনে হয়না।
বাবা , আমি ‘রোজভেলি’ তে দুটো এসি রুম বুক করে রেখেছি । তোমার কোন অসুবিধে হবেনা তুমিও চল।
নারে তোরা ছেলেছোক্রা যাবি তাতে আমরা বুডোরা গেলে কি ভাল দেখায় বাবা। তাছাডা বাডীতে তো একজন থাকা প্রয়োজন না কি? আমার এমনিতেই এ সি ভাল লাগেনা। নতুন বছরে বরং বাডীতে বসে নতুন গল্প,কবিতা,গান লিখব। এখন ওটাই আমার সময় কাটানোর পরম বন্ধু । তাছাডা ফাল্গুনিদা বলেছেন লিখে যেতে । লেখাতো হয় না ‘অভ্র’ র দয়ায় বাংলা ডি টি পি টা শিখতে পেরেছি । দেখি যদি কিছু লিখে ছাপাতে পারি !
তা তুমি যা ভাল বোঝ তাই কর । মা’তো যাবে না কি ?
হ্যাঁ নিশ্চই । তোরা তাডা তাডি সব কাজ সেরে নে । খেয়ে দেয়ে বেরিয়ে পড দুগগা দুগগা করে । যা দিনকাল পোডলো ।
বেলা এগারোটা নাগাদ সকলে বেরিয়ে পোডলো । প্রশান্ত আছে আমার কোন চিন্তা নেই।ও রাস্তা ঘাট চেনে সব ব্যাবস্থা ওই করে দেবে।
গিন্নী গজ গজ শুরু করলেন ,ওই এক কম্পুটার কেনার পর থেকে কাগজ আর কম্পুটার ! খাওয়া নেই কোথাউ বেডাতে যাওয়া নেই ঘরের এক কোনে লাইট্ জালিয়ে ঠক্ ঠক্ করে টাইপ্ করা। মাঝে মাঝে হয় চা নয় কফী ।
আমি রশিকতা করে বলি,কম্পুটারটা তোর মায়ের সতিন । যতো রাগ ওর ওপোর। কি করি বল ওই মন্দীরে গিয়ে হরিকীর্তন করা আমার পোসায় না। যত মুখোস পরা লোকের সমাগম । যা প্রবচন শুনবে ঠিক তার উল্টো কাজ করবে । ঠাকুর কে স্বার্থপরের মতন নিজের আর নিজের সংসারের জন্য হ্যাংলার মতন সব চাইবে আর মাথা ঠুকবে । ওটা তো আমি পারি নারে। তাই নিজের সময় কাটানোর এই রাস্তাটা বেছে নিয়েছি।
ঠিক করেছ বাবা। তুমি নিজে কাজের মধ্যে আচারের মতন মজে থাক ওটাই ঠিক । শুন্য মগজ শয়তানের কর্মশালা । মগজ কে শুন্য হোতে দিওনা। তাহলেই বিপদ।
গিন্নী , ছেলে আর বৌমা । সঙ্গে হট্ কেসে জল খাবার,কমলা লেবু, আপেল , মিনারেল ওয়াটার আরো ওনেক কিছু । আমি বলি, উলুবেডীয়াতে আমার মামা থাকেন । বয়েস হয়েছে যাবার সময় দেখা করে যেও। খুশি হবেন। আমি দোর ওব্ধি এগিয়ে দিয়ে এলাম। ঘর ফাঁকা । ভালোই লাগবে তবে চা টা নিজে বানাতে হবে এই যা!
উলুবেডীয়াতে পউঁছে শুভ্র রিং করলো ঃ বাবা, আমরা ঠিক ঠাক পৌঁছেছি। রাস্তায় কিছু অসুবিধে হয় নি। তুমি সাবধানে থেক । ঠিক সময় খেয়ে নিও। মা চিন্তা করবে নাহলে । দাদু ভাল আছেন। এক গাল হেঁসে আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করলেন। সম্পাকে দেখে খুব খুশি । দাদুর প্রিয় নরম পাকের খেঁজুর গুডের সন্দেশ নিয়েছিলাম সেন মহাশয়ের দোকান থেকে ।দাদু ত্রিপ্তি ভরে খেয়ে সম্পাকে আর আমাকে , দাদুভাই বলে খাওয়ালেন। এগুল আমরা মিস্ করি বিদেশে । কত আন্তরিকতা ! কত আপ্পায়ন ! এগুল আমাদের দেশেই বেশি আছে বিদেশে উবে গেছে । .. এক নিঃশ্বাসে কথাগুল বলে গেল শুভ ।
আমার জন্য চিন্তা করিস না। আমি ভাল আছি। মঞ্জু রান্না করে গিয়েছে। আমার খাওয়া হয়ে গিয়েছে। কি আর খাই সবইত ডাক্তারের বারন। দুটো রুটি একটু ছেঁচকি, শীতকাল বোলে ভেজিটেব্ল সুপ্ । রাত্তিরে ছানা , দুটো রুটি আর গরম দুধ এক কাপ। সকাল সন্ধ্যে ৪ কাপ চা । মধ্যেখানে একবার কফী ব্যাশ্ ।
বাবা আমরা ছাডছি উলুবেডিয়া । তখন বেলা ১ টা বাজে। এরপর ওরা কোলাঘাট থেকে বাঁ দিকে দীঘা হাই ওয়ে ধোরে কন্টাই(কাঁথী) বাইপাস্ রাস্তা ধোরবে । কন্টাই তে পৌঁছে বিকেলের জলখাবার খাওয়ার কথা কিন্তু কোন ফোন এলোনা ! বোধহয় রাস্তাতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমচ্ছে । প্রশান্ত টা ঠিক চালাচ্ছে তো ! শুভ্র ভালই ড্রাইভিং জানে কিন্তু ও আমেরিকা তে রাইট্ হ্যান্ড্ ড্রাইভিং এ অভ্যস্ত তাই ওকে মানা কোরেছি যেন এখানে স্টিয়ারিং না ধরে । মোবাইল্ আউট্ অফ রিচ্ দেখাচ্ছে ! গাডি যা স্পীড্ এ চোলছে বোধহয় ঘন্টায় ৮০ -১০০ কি.মি হবে। কারন উলুবেডীয়া খুব তাডা তাডি পৌঁছেছে। কোন দুর্ঘটনা হোল না তো ? মনে অনেক প্রশ্ন আর শঙ্কা ।
এখন বাজে ৬ টা এতোক্ষনে পৌঁছনর কথা মন্দারমনী ।রাস্তা কন্টাই থেকে খারাপ ছিল এখন কি জানিনা । সল্টলেক্ থেকে প্রায় ১৮০ কি.মি । এস্প্লানেড থেকে ৬৩ কি.মি কোলাঘাট ৩ কি.মি মেচেদা ৮০কি.মি. কন্টাই ১২.৫ কি.মি চোয়ালখোলা ৪কি.মি. কালিন্দী ৪কি.মি. দাদনপাত্রবার ৬ কি.মি মন্দারমনী মোট ১৭২.৫ কি.মি.. , যা মোট চার ঘন্টা নেওয়ার কথা । উলুবেডিয়া থেকে বেলা ২.০০ টোর সময় বেরুলে সন্ধ্যে ৬.০০ টার মধ্যে পৌঁছনো উচিৎ তবে রাস্তাতে কোন অসুবিধে হলে , মানে ট্রেফিক জ্যাম্ হলে হয়তো দেরি হতেও পারে। ট্রাক্ গুলো যাচ্ছেতাই ভাবে যায়। অনেক প্রশ্ন মনে আসছে আবার ভাবছি দূর কিস্সু হবেনা । হবে আবার কি? নিজে একটু কফী বানালাম সঙ্গে ওট্ এর বিস্কুট্ দুখানা। কাগজ টা পোডেছি আবার পডলাম। হঠাৎ রিং এলো বাবা কন্টাই তে পৌঁছেছি তোমার গাডীর রেডীয়েটারের পাখা আটকে গিয়েছে , ইঞ্জীন্ গরম হয়ে কুলান্ট্ টগ বগ করে ফুটছিল । বনেট্ দিয়ে ধোঁয়া বেরুচ্ছিল । আমি নিজে ডিটেক্ট্ করলাম রেডিয়েটার এর ফ্যান কাজ দিচ্ছেনা। কন্টাই এর মেকানিক্ রেডীয়টার এর ফ্যানটা বদলালো । একটা রিলে সুইচ্ বদলালাম । কথাগুলো একটানা বলে গেল ।
ঠিক আছে । হ্যাঁ গাডীটা ত আমার মত পুরন হল । ২০০৬ সালের গাডী স্যা্নট্রো বলে চলছে । ছ বছর একটানা সার্ভিস দিয়েছে । আমি অফিস আর বাডী ছাডা ত কোথাউ যেতাম না। শোন সন্ধ্যে বেলায় সমুদ্র তটে ঘুরবিনা । হোটেল এ থাকবি। মা’তো সমুদ্র দেখলে জলের দিকেই দৌডয় । রিপ্ কারেন্ট থাকে যা টেনে নিয়ে যায়। সাবধানে থাকিস । মা’কে একা ছাডবিনা ।
ঠিক আছে । ফোন ছাডছি ?
আচ্ছা ।
দাদনপাত্রবারে ছোট ছোট বালি স্তুপ আছে।গাডী নিয়ে যাওয়া যায় ১৩ কি.মি।
মন্দারমনীতে রোজ্ ভ্যালি সবচেয়ে দামী হোটেল ।এসি ডবল বেড টা ৫,০০০কা এক রাত ।পুর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রধান আকর্সন মন্দারমনী আর দীঘা । তবে মন্দারমনী র ১৩ কি.মি সুদীর্ঘ সমুদ্র সৈকত আর সেই সমুদ্র সৈকতেই গাডী চালান যায়। ভারতবর্ষে নাকি অন্য কোন সমুদ্র সৈকতে এতো সুন্দর গাডী চালান যায় না । তাই বেশির ভাগ লোক গাডী নিয়ে যায় ওখানে । কিছু ফিল্ম সুটিং ও হয়েছে ওখানে। এর আরেক বিশেষ আকর্সন , লাল ক্যাঁকডা। ভারি সুন্দর এখানকার পরিবেশ । এই সমুদ্র র ঢেউ ছোট , দাদনপাত্রবারে ছোট ছোট বালি স্তুপ আছে। খুব সুন্দর দেখায় ।
ছোট্ট ছোট্ট ঢেউ প্লাবিত করে সমুদ্র তট ।
রোজভেলি হোটেল , মন্দারমনী ।
অনেকে বলে পুরীর চেয়ে নাকি ওখানকার পরিবেশ আরো সুন্দর । কিন্তু পুরীর নুলিয়া,জগন্নাথ আর আছডে পডা ঢেউ বিশেষ করে পুর্নিমা আমাবশ্যাতে সমুদ্রের গর্জন আরেক উন্মাদনা দেয়। ওর সৌন্দয্য আর আকর্সন আলাদা ।
তবে মন্দারমনী র ১৩ কি.মি সুদীর্ঘ সমুদ্র সৈকত আর সেই সমুদ্র সৈকতেই গাডী চালান যায়। ভারতবর্ষে নাকি অন্য কোন সমুদ্র সৈকতে এতো সুন্দর গাডী চালান যায় না।
মন্দারমনী তে ওরা হোটেলে চেক্ ইন করে আবার ফোন করে ।
বাবা, শুভ্র বলছি । আমরা পৌঁছেগিয়েছি। গাডী ঠিক আছে । চিন্তা কর না। রাস্তাতে কোন অসুবিধে হয় নি। রেডিয়েটর এর ফ্যানটা ৫ বছর পর এম্নিতেই বদলাতে হয়। রিলে সুইচ এর ওপোর প্রেসার পডেছে তাই ওটাও বদলালাম। এগুলো মাইনর কাজ প্রশান্তর দেখা উচিৎ ছিল। আসলে এরা ড্রাইভিং ছাডা অন্ন কিছু বিশেষ যানেনা। তুমি ডিনার সেরে শুয়ে পোড । রাত জেগে লেখা লেখি কোর না। গুড নাইট্। টেক্ কেয়ার ।
ঠিক আছে তোরাও ডিনার সেরে শুয়ে পডিস । সকালে উঠে সি বিচে যাবি । তোর,মায়ের এবং সম্পার খেয়াল রাখিস। শুভ্র রাত্রি ।
সকালে , বিজে ব্লক এর পার্ক এ প্রাতঃ ভ্রমনে যথা রিতি বেরুলাম । খুব ভাল লাগছে আজ সকাল টা । পার্ক এর চারপাসের রাস্তা দিয়ে বুড বুডী , ছেলে মেয়ে সকলে প্রতঃ ভ্রমনে বেরিয়েছে।মাদার ডেয়ারীর দুধ নিয়ে ঘরে ফিরলাম। অনেক দিন পর রোদ উঠছে । খুব মিষ্টি রোদ । ঘরে ঢুকছি মঞ্জু বলল , দাদার ফুন এয়েছিল । বলে মাসীমা কে সকাল থেকে দেখতে পাওয়া জাচ্ছেনাকো । তোমার ফুন বন্দ বোলে এই ফুনে বলেছে । তুমি এলে ফুন করতে বলেছে। দাদারা খুঁজছে সকলে । মাসীমা র কি হয়েছে গো মেসো ?
তুই আমাকে পার্ক এ গিয়ে বললিনা কেন ?আমার মোবাইল তো চার্জ এ রেখেছি । সুইচ্ অফ আছে ।আমি তাডাহুডো করে মোবাইল টা নিয়ে ডায়াল কোরতে লাগলাম ।
ওদিক থেকে আউট্ অফ রিচ বোলছে। কি করি ! প্রশান্ত র মোবাইল ও তাই। সম্পা র নম্বর আমি যানিনা। ওকে বারে বারে বোললাম বয়েস হয়েছে ও সব যায়গায় যেও না । ওসব কি আমাদের জন্য ! বাচ্চারা দেখুগ ওদের ভাল লাগবে । ওদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার কি প্রয়োজন । কে কার কথা শোনে? এখন কোথায় গেল মানুষ টা কে যানে! হয়তো সমুদ্র দেখতে দেখতে আত্মহারা হয়ে গিয়েছে । নয় কোথাউ বসে গান গাইছে । অচেনা যায়গাতে ত ও যাবেনা ওরকম ! কি হল ? নানা প্রশ্ন যাগে মনে ।
ফোন এল । দৌডে ধরতে যাব পা টা মুচকে গেল । খুব ব্যাথা লাগছিল । কি হল বলে মঞ্জু দৌডে এল রান্না ঘর থেকে ।
একটু ভোলিনিটা(Volini ointment) নিয়ে আয় তো , আমি বলি , আর ফোন রিসিভ করি। প্রশান্ত র ফোন।
স্যার , দাদারা গিয়েছেন ম্যাডাম কে খুঁজতে । ম্যাডাম সকাল সকাল মর্নিং ও্যাকে বেরিয়েছেন । ফিরে আসেননি । আমাকে দাদা বলেছেন আপনাকে ফোন কোরতে চিন্তা না করার জন্য।
তুই কোথায় ছিলিস ? তোকে কেন পাঠিয়েছি ওদের সঙ্গে ? খেয়াল রাখতে পারিস না।! যত্ত সব গাঞ্জা খোরের দল। দাদা কোথায় খুঁজবে ওকে। বেয়াক্কেলে সব। সকাল সকাল আমার মাথা খারাপ করিসনা। সুখে থাকতে ভূতে কিলল । আমি এখন কি করি ? দেখি বসু বাবু কে বলে । ওনার পুলিশ মহলে চেনা আছে । পূর্ব মেদিনীপুর ওনার এলাকা ছিল। আমরা এক ই সঙ্গে চাকরি থেকে অবসর নি।
বসু বাবু কে ফোন করতে যাব আবার আমার মোবাইল বেজে উঠলো । শুভ্র র ফোন। বাবা , চিন্তার কোন কারন নেই। মার এক বান্ধবির সঙ্গে দেখা হয়েছিল । উনি মাকে ওনার হোটেলের রুমে নিয়ে জান । মায়ের স্কুলের বান্ধবি মালবিকা মাসী । ওরা গল্প করতে এত মসগুল যে সব ভুলে গিয়েছেন । আমাকে দেখে মা আর মালা মাসী বলল , বাবাকে বলিস না কুরুক্ষেত্র করবে । আমি গেলে বুঝিয়ে বলে দেব। চল এখন সমুদ্র দেখি। লাল ক্যাঁকডা (red crab) .মা খুব এঞ্জয় করছে এখানে। বকা বকি কর না ।
যত্ত সব আদিখ্যেতা ! এবার আজকের মধ্যে ফিরে এস দয়াকরে । স্বিচ্ অফ্ করেদিলাম।
ওরা রাত ১০.৩০ সময় বাডী ফিরল। হই হট্টগল করতে করতে । সকলেই খুব ক্লান্ত ছিল । মঞ্জু রান্না করে গিয়েছিল। ওই খেয়েই সব শুয়ে পডল । আমার পায়ের ব্যাথা টা কমেনি । ওদের পিকনিকের দৌলতে আমার পাটা মচকাল । আঃ ব্যাথাটা কমছে না!
No comments:
Post a Comment