[কিছুদিন আগে খবরের কাগজে একটি নারী নির্যাতনের খবর পডে বিস্মিত হলাম । আর বেশি অবাক হলাম এটা জেনে যে , যিনি কিনা আইনের রক্ষাকর্তা , ন্যায়দাতা, মহামান্য বিচারপতি তিনিই কিনা সুপারি কিলার কে দিয়ে এক অবলা নারীর প্রাণনাশের ছক এঁটেছিলেন । কিন্তু ওই যে বলে, ‘রাখে হরি মারে কে?’ ঘটনাটা সম্পুর্ন সত্যি কেবল নাম এবং ঘটনার স্থান কাল পাত্র বদলান হয়েছে । ]
মিলি এবং জলি দুই বোন । বাবা মা’র আদরের মেয়ে । মিলি +২ পাস করেছে জলি ক্লাস ১০ এ পডে। মিলি পডাশুনোর চেয়ে টিভি দেখা, আড্ডা দেওয়া , বন্ধুদের সঙ্গে বেডান, এই সবই বেশি করে। বাবা একটা কেরানির চাকরি করতেন । হঠাৎ হার্ট ফেল্ হওয়াতে মারা যান । প্রথম স্ট্রোকেই মারা যান । ঘরে আর কেউ রোজগারক্ষম ছিলেন না । মিলি,জলি কে নিয়ে সহরে মামার কাছে এসে ওঠেন ওদের মা । মামার ইলেক্ট্রিকের সরঞ্জামের দোকান । ভালই চলে । এরা আসাতে মামি বিরক্ত হলেও মামা ওদের ঠাইঁদেন। ছোট বোনের এই দুর্দিনে ঠাঁই না দিলে ভগবানের কাছে অপরাধী থেকে যাবে যে! বাবার পেনসনের কাগজ, প্রভিডেন্ট ফান্ড, এল আই সি র পলিসি এসবের জন্য মামার প্রয়োজন । তাই মা এবং মামা অফিস্ কাচারি ঘুরে ঘুরে অনেক কষ্টে এক উকিলের পরামর্শে কিছু কাজ এগুতে থাকে। এরমধ্যে মামা জানতে পারেন এক উকিল বাবুর নাকি অনেক জানা শোনা আছে । আজকাল অফিসে একটু জানা শোনা না থাকলে কিছুই কাজ হয়না । তার ওপর ফাইল এগুতে ছোট গান্ধীর প্রয়োজন । উকিল বাবু অনেক সাহায্য করলেন । মামা টাকা পয়সা দিয়ে সামলালেন । আস্তে আস্তে মা সব পাওনা পেলেন । মায়ের পেনসন এর কাগজ ঠিক করতে সময় লাগলো । বাবার ডেথ্ সার্টিফিকেট , লিগাল হায়ার , রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট ইত্যাদি সব উকিল বাবু করেদেন । এই সুবাদে মা এত মুগ্ধ হয়ে যান যে ওনাকে ছেলে বানিয়ে ফেলেন । উকিল বাবুর নাম জয়ন্ত মিশ্র ।
মিলি, পডা ছেডে কাজ খুঁজতে লাগলো । ও কম্পুটার এর কোর্স করেছিল এবং ওকে দেখতে শুনতে ভাল ই ছিল । তাই একটা কাজ ও জোগাড় হয়ে গেল। ভারত গ্যাসের দোকানে এল পি জি বুকিং এর কাজ পেল । সকাল নটা থেকে বিকেল পাঁচটা । জয়ন্ত বাবু ওই কাজটা করিয়ে দেন । মামা অবিশ্যি ওদের দোকানে সব ইলেকট্রিকাল ফিটিং সাপ্লাই করেছিলেন । সেই সুত্রেও মামার চেনা শোনা ছিল । মিলি কাজে জয়েন করল । মাস গেলে চার হাজার মাইনে । বাবার গ্রেচুইটি কম্যুটমেন্ট্ এবং জিপিএফ্ এর সব টাকা ফিক্সড্ ডিপোসিট্ করে দেন মামা; মার নামে । তা ছাডা মা পেনসেন্ পান । পরে এল আই সি দু লক্ষ টাকা পান , সেটা বড মেয়ের বিয়ের জন্য রেখেদেন তার নামে । বাবার কিছু ফিক্সড ডিপসিট ছিল সেটা উঠিয়ে ছোট মেয়ের নামে ফিক্স করে দেন । সমস্ত পাওনা গন্ডা টাকা পেয়ে মামাকে সব টাকা পাই পাই শোধ করে দেন মা । এখন আর কোন অসুবিধে নেই । কিন্তু যে মানুষটার জন্য সব হল সেই থাকলোনা। মামির মুখে কুলুপ আঁটা রইল। আর গজ গজ করতেন না মামি। খাওয়া থাকার সব খরচ মা, মাস গেলে তুলে দিতেন মামার হাতে । যদিও মামা কিন্তু কিন্তু করতেন । আমরা এখানে থাকতাম কারণ জায়গাটা নিরাপদ এবং শহরের মধ্যখানে কাজেই সব জায়গাতে যাওয়ার সুবিধে । তাছাডা জলির স্কুল ও কাছে ।
যাই হোক, ভালই চলছিল । কথায় বলে, বলে সুখে থাকতে ভূতে কিলোয়।ঠিক তাই আরম্ভ হল । মিলি র সঙ্গে জয়ন্ত র প্রেম শুরু হল। মা কিছুই টের পেলেন না । কাজ সেরে শপিং মল, সিনেমা,আড্ডা,ঘোরা সব চলল। রাত করে বাডী ফেরা । দামি প্রসাধন ব্যাবহার , দামি ড্রেস সব জয়ন্ত কিনে দিত । মা পুজো আচ্ছা নিয়ে থাকতেন । এরকম ই কিছুদিন চলছিল হঠাৎ মিলি একদিন সিঁদুর পরে ঘরে হাজির জয়ন্ত কে নিয়ে । মাকে ধডাস্ করে দুজনের সাষ্টাঙ্গ প্নণাম ।
কিছু বলার আগেই , মিলি বললো .. বিয়েটা মন্দিরে সেরে ফেললাম ।
মা , মামি সবাই হতবাক্ মেয়ের কান্ড দেখে ।
মামি বলেন,আমি বলেছিলাম এই রকম ই একটা কিছু ঘটতে যাচ্ছে । তখন গা করনি । এখন নাও ঠ্যালা সামলাও ! মুখে কালি মেখে রাস্তায় ধী ধী করে নাচগে । আমাদের আর মুখটা পুডিও না । উনি এলেই পত্রপাঠ বিদেয় করব । আমার হয়েছে যত্ত জ্বালা । তা তুমি কেমন ভদ্র লোক হে ? আমাদের মেয়েটাকে ভুলিয়ে বিয়ে করেছ ! তোমার বাবা মা জানেন এ কথা ?
জয়ন্ত বলে , আমার বাবা জেলা জজ্ আমি নিজে ওকালতি করি । আপনাদের মেয়ের বয়েস ২০ ও এখন সাবালিকা । আপনাদের মত থাকবেনা জেনেই ও আর আমি আর্য্যসমাজ মন্দিরে বিয়ে সেরে ফেলেছি । আপনাদের আশীর্বাদ নিতে এসেছি ।
মা নিথর হয়ে বসেছিলেন । ওদের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে । দুচোখ দিয়ে অশ্রুধারা মানতে চাইছিলনা । চোখ মুছে শুধু বললেন, মিলি তুই ছোট বোনটার কথা একবারও ভাবলিনা মা ? বাবার বাৎসরিক কাজ শেষ না হতেই বিয়ে করে ফেললি ! মামা,মামি,মাকে জানানোর কোন প্রয়োজন বোধ করলিনা মা ! আমি কি তোর বিয়ে দিতাম না ? এতো তাডা! মা’র দুঃখ বুঝলিনা ? মুখে চুন কালি দিলি।
জয়ন্ত বলল, অপরাধ নেবেন না মা !
মা’ কথা থামিয়ে, আমি হাত জোড করে তোমাকে বলছি তুমি আমাদের কথায় থেকনা। তোমার পেটে এই ছিল বাবা ? মিলি তখন ঘোরে আছে । প্রেমে হাবুডুবু। তার এসব শোনার অবকাশ ছিলনা। সে বলে , ঠিক্ আছে , তোমাদের যখন অপছন্দ আমি আর কি বলব? আমি তাহলে আজ এই ঘর ছেডে চলে যাচ্ছি !
তাই যাও মহারানি কে তোমাকে আটকাচ্ছে ? মামি চেঁচিয়ে বলেন।
এই সময় মামা ঘরে ঢোকেন । কি হল এতো চেঁচামিচি কিসের ? ঘরে কি ডাকাৎ ঢুকেছে ? জয়ন্ত কে দেখে মামা ঘাবডে যান । একি আপনি ? তারপর ব্যাপার টা আঁচ করেন মিলি র কপাল দেখে । ও ! তাহলে সব সেরেই এসেছো তোমরা । আর কি বাকি রাখলি মা ? একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে। সব ই আমার বোনটার কপাল ? অসময়ে স্বামী হারাল দুটো মেয়ের মুখ চেয়ে ছিল তাও তোরা দুঃখ দিলি ।
আমি কি করলাম ? জলি ফোড়ন কাটে ।
এক ধমক দেয় মামি । চুপ্ ! আমি কি করলাম !! যা ওঘরে যা ।
মা চোখ মুছতে মুছতে বলেন, দাদা আমার বালা দুটো আর হার টা দিয়ে দাও। ওদের যেতে বল । আমি আর পারছিনা ! আমার অদৃষ্ট ! আঁচলে মুখ ঢেকে ঘর থেকে চলে যান।
মামা মায়ের কথামত ঘর থেকে মামির আলমারি খুলে বোনের গয়না গুলো মিলিকে দিয়ে পরতে বলেন । নিজে ৫ হাজার টাকা হাতে দিয়ে বলেন শাডি কিনে পরেনিবি। আমাদের একটু সময় দিলিনা মা ? মিলি কিছু না বলে মামাকে নমস্কার করে জয়ন্তর সঙ্গে চলেযায় । ওরা ঘরে না ফিরে একটা বাসা নিয়ে থাকে । মিলিকে বাসা তে রাখার কারণ জয়ন্তর মা বাবা জানেন না ছেলের গুণ কীর্তির কথা। বাডিতে সবাই যানে জয়ন্ত বেডাতে গিয়েছে । আবশ্য জয়ন্ত মিলি কে নিয়ে তারপর দিন কারে কলকাতা তারপর মুম্বাই হয়ে ফ্লাইটে ‘গোয়া’ হনিমুনে যায় কলকাতা র নেতাজী সুভাষ বিমান বন্দর থেকে । নাম পরিবর্তন করে জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স সো করে জয়ন্ত মিলি কে নিয়ে ফ্লাইট্ এ যায় । মিলির নাম পরিবর্তন করে ‘মিতালি’ নামে । গোয়াতে খুব ফুর্তি করে । কোলবা,কালাঙ্গুট্,ডোনাপাওলা,এরকম প্রায় সব সী বিচ্ দেখে উত্তর গোয়া দক্ষীন গোয়া ঘুরে হোটেল এ দু রাত তিন দিন থেকে ফিরে আসে ।
এরমধ্যে জজ্ সাহেবের কানে মিলি র মামার ইলেকট্রিক্ দোকানের মিস্ত্রি মুনা সব বলে দেয় । মুনা, জজ্ সাহেবের নতুন বাডীর সব কন্সিল্ড্ ও্যারিং করেছিল তাই ওদের বাডীতে যাতায়াত আছে ।
জজ্ সাহেব তাঁর অপদার্থ ছেলেকে জানেন তাই তডিঘডি ছেলের বিয়ের আয়োজন করে ফেল্লেন । ওনারই সহ পাঠির মেয়ের সঙ্গে । মেয়েটি এম এ সাইকোলজি নিয়ে এই বছর পাস করেছে । দেখতে মন্দ না । সব ঠিক্ ঠাক্ । জয়ন্ত এলেই পাকা দ্যাখা। আশীর্বাদ সেরে বিয়ের দিন ঠিক করে ফেলবেন ।
জয়ন্ত আসার পর কেউ কিছু না জানার ভান করে । সহজ ভাবেই জয়ন্তর মা জয়শ্রী দেবি বলেন হ্যাঁরে কোথায় কোথায় বেডালি ? জয়ন্ত সব বর্ণনা করল । তারপর মাকে মিলি র বিষয় বলল । মা শুনে আকাশ থেকে পডলেন । তোর বাবা শুনলে আমাকে রক্ষা রাখবেন না । তুই কি তোর বাবাকে চিনিসনা? কি করে সাহস করলি রে ? একেবারে গোয়া ঘুরিয়ে আনলি? প্লেন এর টিকিট ?
আমি জানি বাবা রাগারাগি করবেন তাই ফলস্ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখিয়ে কলকাতা থেকে যাই । আসলে এখান থেকে গেলে এয়ারপোর্ট এ ধরাপডার ভয় থাকতো । কলকাতা অবধি বন্ধুর গাড়িতে যাই ওখান থেকে মুম্বাই হয়ে গোয়া ।
আর মেয়েটা ? ওর কথা ভেবনা । ওকে ভাডা ঘরে রেখে দিয়েছি।
মা বলেন আর ওর কাছে যেতে হবেনা ।আমার দিব্বি রইল । বাবা তোর বিয়ের ঠিক করেছেন । ভাল মেয়ে । অনেক পণ দেবে । ভাল ছেলের মতন চুপটি করে যা বলব তাই করবি ।
হ্যাঁ মা তোমার কখনো অবাধ্য হয়েছি ? বল ?
না হও নি ! এটা কি করে এলি খেয়াল রাখিস ?
ভুল হয়ে গেছে । ক্ষমা করে দাও ।
মা ছেলের মাথার চুল ঠিক করতে করতে বলেন , আর কত জ্বালাবি বুডো বাপ্ টাকে ? রিটায়ারমেন্ট ত মাত্র এক মাস । তার পর কি হবে খেয়াল রাখিস ?
সব ঠিক হয়ে যাবে কিচ্ছু চিন্তা করনা।
তাই যেন হয়।
মিলির কাছে আর যেতনা জয়ন্ত । মিলি কে ফোনে বলতো একটু এদিকটা সামলে নিয়ে পরে তোমার কাছে যাব ।
মিলি র সন্দেহ হয় । জয়ন্ত অন্য নামে তাকে ফ্ল্যাট কেন নিল ? নিজের নাম কেন পালটাল ? এখন হঠাৎ মাতৄভক্ত ছেলের ভুমিকা ! কি ব্যাপার ! ১০-১৫ দিন পর মিলি জয়ন্ত র বাডীর ঠিকানায় যায় কারণ ওদের বাডীর গ্যাসের সিলিন্ডার , মিলিদের ডিস্ট্রিব্যুটার ই পাঠায় তাই জয়ন্ত র ঠিকানা পেতে অসুবিধে ছিলনা । মিলিকে ওর মা দেখেই বুঝতে পারেন । বাডিতে ও আসাতে যাতে সিন ক্রিয়েট না হয় তাই ভেতরে ডাকেন। মিলি প্রণাম করে । ওকে ডেকে একটা ঘরে বসতে বলেন। মিলি ওখানেই জয়ন্ত দের বাডিতে কিছুক্ষণ থাকে । জয়ন্তর মা কিন্তু কোন কথা না বলে চাকরকে দিয়ে চা জলখাবার সব পরিবেশন করান । চাকর বলে মা বসতে বলেছেন । মা এখন পুজো করবেন । মিলি কিছু খায় না। ও বাসাতে ফিরে যায়। মনে মনে ভাবে কাল কোর্ট বন্ধ , কালকে যা করার করবে । মিলি যাওয়ার পর মা, বাড়ির কাজের লোক রবিকে বলেন ফোন করে জয়ন্তকে ডাকতে ।
কিছুক্ষনের মধ্যেই জয়ন্ত বাডি ফিরে আসে । তার ঘন্টাখানেকের ব্যাবধানে জজ্ সাহেব চলে আসেন।
এর মধ্যে বলে রাখি মুনা এসে জয়ন্তর মাকে বলে, আমাকে কিছু টাকা দিলে আমি মিলি কে চিরদিনের জন্য সরিয়ে ফেলব । কিন্তু জয়ন্তর মা ওতে রাজি হলেন না। পরে মুনা বলে মা এখানে সুপারি কিলার এমন ভাবে কাজ করে কেউ টুঁ শব্দপাবেনা খালাশ হয়ে যাবে । এ সব কথা তিন তলার একতা অসম্পূর্ণ ঘরে হচ্ছিল ।
মা দু লক্ষ লাগবে । প্রথমে ওরা ১ নেবে কাজ শেষ হলে বাকি টাকা। মা গররাজি হলেন ।
এর মধ্যে জয়ন্ত বলল তোমাদের কিছু ভাবতে হবেনা আমি ব্যাবস্থা করছি। এই বলে জয়ন্ত একটা ব্যাগে কিছু টাকা নিয়ে বেরিয়ে পডে । এক বন্ধু র বাডি যায় । মা পই পই করে মানা করেন এ বিষয় নিয়ে মাথা না ঘামাতে। বন্ধু বান্ধব্দের এ বিষয় জানান উচিৎ কি ? কে কার কথা শোনে ? জয়ন্ত সোজা ওই বন্ধুকে নিয়ে একটা বলেরো গাডি নিয় সোজা মুনাকে কি সব বলেদেয় । মুনার হাতে টাকার বান্ডিল গুঁজে দেয় । তারপর ওখান থেকে বন্ধুকে নিয়ে চলে যায়। মুনা যখন যায় তখন রাত ১১টা হবে ।
মুনা, মিলির ঘরে নক্ করে । মিলি ভেতর থেকে বলে, কে?
আমি আর জয়ন্ত বাবু এসেছি ।
‘আমি’ কে?
আমি গো বৌদি, মুনা । গলার স্বর শুনে চিনতে পারছোনা ?
তোমাকে মা ডাকছেন । আমরা দুজনে এসেছি তাই ।
মিলি বিশ্বাস করে দরজা খুলতেই দুজন অজানা লোক মিলি কে মুখে হাত চাপা দিয়ে কাবু করে ফ্যালে । মুখে গোঁ গোঁ শব্দ হলেও বিশেষ কেউ জানতে পারেনা। সটান ওকে তুলে ফেলে গাডিতে বসিয়ে দেয় । মুখে ল্যুকো প্লাস্ট দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয় । চোখ রুমাল দিয়ে বাঁধা হয় । কোন শব্দ বেরুনর উপায় নেই । কোথায় যাচ্ছে রাতের অন্ধকারে কিছুই বোঝারউপায় নেই । গাডী চলে নন্দন কানন এর রাস্তা দিয়ে বারং হয়ে আঠগড এর রাস্তা। তারপর খুন্টুণি । ওখানে কিছু সুবিধে হলনা কারন মোবাইল পেট্রলিং চলছিল । গাডী ঘুরিয়ে আবার ফিরে আসে মহানদীর ওপর । মহানদীর ওপর জোব্রা আনিকট্ । ব্রিজের ওপর থেকে মিলি র পেছনে হাত বেঁধে দেয় এবং পা দুটো বেঁধে ওপর থেকেই ফেলে দেয় । একটা শব্দ হয় ঝপাং । ব্যাস্ ওটা শুনেই ওরা চম্পট্ দেয় গাডী নিয়ে ।
ভোর তখন প্রায় ৫ টা । জোব্রা ব্যারেজের ওপর প্রায় সকলেই মর্নিং ওয়াকে বেরন । হঠাৎ দুজন লোক , একটা গোঁ গোঁ শব্দ শুনে থমকে দাঁড়ায় ! নিচে লক্ষ করেন একটা নারীর দেহ পেছন করা অবস্থায় পড়ে আছে । সঙ্গে সঙ্গে পুলিস কে ফোন করা হয় । মোবাইল পেট্রলিং ভ্যান চলে আসে । বডি কে অনেক কষ্টে ওঠান হয় । ভগবানের দয়া তখন নিঃশ্বাস প্রশ্বাস চলছে । মানে বেঁচে আছে । যন্ত্রণাতে মহিলাটি কাৎরাচ্ছে আর বয়ান লিখতে বলছে ইশারায় । মিলি বয়ান দেয় জয়ন্ত বাবা গুন্ডা লাগিয়েছিল লাগিয়ে মেরে ফেলার জন্য, ওরাই এখানে ফেলে দিয়ে গেছে । ওকে সঙ্গে সঙ্গে কটক মেডিকাল এ ভর্তি করা হয় । ততক্ষণে সব মিডিয়া, নারী জাগরণ স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা , চলে আসে । মিলি র প্রায় মৄত্যুকালিন বয়ান রেকর্ড করা হয়। ওই পরিপ্রেক্ষিতে জয়ন্ত কে গ্রেফতার করা হয় । মিলি এও বলে তার শ্বাশুডি এবং শ্বশুর তাকে সুপারি কিলার দিয়ে খুন করার জন্য মন্টুকে বলে । মন্টু ফেরার হলেও পরে ধরা পডে পুলিসের হাতে । জজ্ সাহেব, তাঁর স্ত্রী এবং জয়ন্ত সকলকে পুলিস এক ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে । জজ্ সাহেবের বেল পিটিশন অগ্রাহ্য হয়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন এবং পুলিশ কমিশনার কে বলেন চার্জ সীট্ ফ্রেম করতে যাতে দোষি উচিৎ শাস্তি পায়। কেউ জামিন পায় না। পরে সুপারি কিলার দুটো ধরা পডে । ওরা বিহার থেকে এসেছিল এই জন্যে । মামলা এখনও চলছে । ।
No comments:
Post a Comment