Tuesday, October 20, 2020

আমার মাসি ১,২,৩,৪,৫,৬,৭ পর্ব লেখক ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী ২০.১০.২০২০ দুপুর ০২.০০


 
  • আমার মাসি প্রথম পর্ব 
    ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী ✍️🙏🌹
      06.10.2020. মঙ্গলবার

    ছোটবেলা থেকে মেয়েটা মায়ের ভালোবাসা পায়নি l  মায়ের ভালোবাসা হয়তো পায়নি কিন্তু 
    মা মরা মেয়েটা মাসির কাছে মানুষ হয়েছে তাই সে মায়ের অভাব কোনোদিন বুঝতে পারেনি l তার মাসি ই  তার মা l মায়ের ফটোতে মালা দেয় আর বলে মা আমাকে তুমি ছেড়ে কোথায় চলে গেলে l আমি তোমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হলাম l খুবই দুঃখ হয় আমার সবাই মায়ের আদোর পায় আমি তোমার ফটো দেখি আর কাঁদি l মাসি বলে তোর মা নেইতো কি হয়েছে আমি তো তোর মা l 
    আমি ভাবি, বাবা সেই সুদূর দুবাই তে  l বাবার মুখটাও দেখতে পাইনা l আমি কেনো এতো দুর্ভাগা হলাম  বলতে 
     পারো সবাই ?
    স্কুলে যাই বান্ধবীরা তাদের মা বাবার কথা বলে কতো মজা করে আর আমি সেই সময় তোমাকে মনে করে লুকিয়ে লুকিয়ে  কাঁদি l ভগবান আমাকে কেন এই দুঃখ যাতনা দিলেন মা বলতে পারো ?
    মাসি কিন্তু সত্যি আমাকে খুবই ভালো বাসেন  l আমার জন্য কেডবেরী এনে দেন,  অফিস থেকে ফিরে ফ্রেস হয়ে  আমার হোম ওয়ার্কের খাতা নিয়ে সন্ধ্যা বেলায় আমাকে পড়ান l মাসি আমার অংক, ইংরিজি, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের সব হোম ওয়ার্কগুলো দেখে আমাকে বুঝিয়ে দেন l আমি না পারলে নিজে সব অন্য রাফ খাতায় লিখে দেন  l আমাকে বারে বারে বোঝান  l  আমি তাই স্কুলে ভালো রেজাল্ট করি l প্রথম দশ জনের  মধ্যে বরাবর থাকি l

    আমাদের বাড়িটা খুবই ছোট l দাদু দিদার তৈরি বাড়ি l এখন দাদু দিদা কেউ বেঁচে নেই তাই মাসি আর আমি থাকি l বাড়িতে তৃতীয় ব্যক্তি কেউ নেই l মাসি ব্যাংকে চাকরি করেন  l আমার জন্য মাসি বিয়ে করেননি l আমি বলি মাসি আমি বড় হলে তোমার মতন চাকরি করবো l 
    তা করবি l আমার চেয়ে ভালো চাকরি করবি l তোর বাবা তোকে ডাক্তারি পড়াতে চায় আমি কিন্তু তোকে প্রশাসনিক অধিকারী করতে চাই l
    আমি বলি,সেটা কি মাসি ?
    মাসি বলেন, আই. এ. এস. অফিসার  কালেক্টর, জেলা শাসক বুঝলি l তাই তোকে দিল্লীর লেডি শ্রী রাম কলেজে পড়াবো l ওখান থেকে পাস করলে ইউ. পি. এস. সি. তে  আই. এ. এস অফিসার এর প্রতিযোগিতায় ভালো ফল করতে পারবি l কিন্তু লেডি শ্রী রাম কলেজ, দিল্লিতে এডমিশন পাওয়া অতো সোজা নয় l খুব ভালো রেসাল্ট করতে হবে l ওখানে পলিটিকাল সাইন্স, সোসিওলজি, ইকোনোমিক্স নিয়ে বি. এ. অনার্স পড়বি l  পলিটিকাল সাইন্স অনার্স পেতে হলে 98% মার্কস সি. বি. এস. সি  তে রাখা  প্রয়োজন কারণ কাট অফ মার্ক 98% ছিলো গতবছর l তুইও পারবি, পারতেই হবে l আমি তোকে মানুষ করবোই l আমার দৃঢ প্রতিজ্ঞা আমার দিদি শেষ নিঃস্বাস ফেলার আগে তোকে আমার হাতে দিয়ে বলেন ছুটকি আমার মেয়েটাকে দেখিস ও যেন তোকেই ওর মা মনে করে তা নাহলে আমি মরেও শান্তি পাবনা l আমায় কথা দে ছুটকি তুই ওকে তোর মেয়ের মতন দেখবি l আমি চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি সেদিন l দিদির হাত ধরে কথা দিলাম আমি তোর মেয়েকে মানুষ করার দায়িত্ব নিলাম l তুই আমার ওপর ভরষা কর l আমি কথার খেলাপ করবোনা l 
    সেই দিন থেকে আমি প্রতিজ্ঞা করি তোর জন্য আমি বিয়ে করবোনা কারণ তাহলে তোকে কে দেখবে ? আমি যে তোর মাকে কথা দিয়েছি l কথাগুলো  বলার সময়  মাসির চোখে জল দেখি l 
    আমি মাসিকে জোড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলি l মাসি তুমি আমার জন্য যেমন সমস্ত ত্যাগ করলে আমিও কথা দিচ্ছি বড় হয়ে  ভালো চাকরি করে তোমার বৃদ্ধা বয়েসে তোমার যত্ন করবো l তোমার কোন অসুবিধে রাখবোনা l   আমিও বিয়ে করবোনা l তুমি যা স্বার্থ ত্যাগ করলে আমার জন্য আমাকে মানুষ করতে সেটা এই যুগে বিরল মাসি l তুমি আমার কাছে দেবী মা দুর্গা l 
    -দূর পাগলী l তুই কেন বিয়ে করবিনা? আমি তোকে এক রাজকুমারের সংগে বিয়ে দেব l আমাকে দেখতে হবেনা l তুই নিজে মানুষ হলে আমার দিদিকে দেওয়া কথা রাখতে পারবো l তাই তোকে অনেক ভালো করে পড়াশুনো করতে হবে মা l সেইটুকু আমি তোর কাছ থেকে আশা করবো l 
    -না, আমার মাসিকে ছেড়ে  আমি কোথাউ যাবো না l তুমি পরখ করে নিও l 
    -আচ্ছা বাবা আচ্ছা এখন পড়তে বোস l আমি দুজনের রান্না করি l রাতে কি খাবি ? 
    -কেন তুমি যা খাও আমিও তাই খাবো l 
    -ঠিক আছে পালক পনির , ডাল মাখনী আর রুটি l খবিতো ? রাতে খাওয়ার পর দুধ খাবি l 
    -কেন খাবোনা l ওগুলো তো স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভালো l 
    ..................
    রাতে মা স্বপ্নে এলেন l মা আমায়  বলছিলেন, মা আমার মন দিয়ে পড়াশুনো করে মাসির মুখে হাঁসি ফোটাবি মা l আমি তাহলে শান্তি পাবো l তোকে ছেড়ে আমি বড় দুশ্চিন্তায় আছি l কিন্তু এখন নেই l তোর মাসি আমার কথার দাম রেখেছে l তুই মাসির কথার অবাধ্য হবি না কখনো l 
    - না মা তুমি দেখে নিও আমি ঠিক মানুষ হব আর মাসির মুখে হাঁসি ফোটাবো l মাসি না থাকলে আমি অনাথ হয়ে যেতাম l 
    - ছিঃ মা ওকথা বলে না l আমার আশীর্বাদ সব সময় তোর মাথার ওপর থাকবে l এখন ঘুমিয়ে পড় l 
    স্বপ্ন দেখে উঠে পড়লাম l পাসে মাসি ঘুমোচ্ছে l সারাদিনের খাটা খাটুনির পর মাসি ধুমোচ্ছেন l  ঠিক বাচ্চা মেয়ের মতন বালিশ কোলে করে ঘুমোচ্ছেন  l কি সুন্দর দেখতে আমার মাসিকে l আমি মাসির দিকে অবাক হয়ে তাকাচ্ছিলাম l ভগবান আমার কাছ থেকে মা'কে কেড়ে নিয়েছেন কিন্তু আমার মাসি? তিনি তো আমার মায়ের চেয়েও অনেক বেশি আপন করে নিয়েছেন আমায় l আমি কেন বন্ধুদের কথায় কষ্ট পাই ? আছে কি ওদের আমার মাসির মতন এতো ভালো একজন মাসি যিনি সারা জীবন আমার জন্য স্বার্থ ত্যাগ করে আমাকে মানুষ করার প্রতিঙ্গা নিয়েছেন আমার স্বর্গীয়া মায়ের কাছে ! এটাকি আমার কম পাওনা ! ভগবান আমায় শক্তি দাও,বুদ্ধি দাও, সাহস দাও মাসির মুখে যেন আমি হাঁসি ফোটাতে পারি তবেই আমার মায়ের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হবে l 
    আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম l
    চলবে:-

    ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🙏🌹
    06.10.2020 মঙ্গলবার l
        
    আমার মাসি  দ্বিতীয় পর্ব 
    ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🙏
    09.10.2020. শুক্রবার l 

    সকালে ঘুম থেকে উঠে নিত্যকর্ম সেরে জলখাবারের টেবিলে বসেছি এমন সময় মাসি গরম গরম রুটি, বেগুন ভাজা আর ডিমের পোচ নিয়ে হাজির l মাসি জিজ্ঞাসা করলেন হ্যাঁরে দুধ খবিতো ? 
    -না মাসি সকালে দুধ খেলে বমি পায় রাস্তায়
    - সেকি রে ! বাড়ন্ত মেয়ে এই বয়েসে দুধ না খেলে রোগা হয়ে যাবি l আমি তোর জন্য বিহারী গয়লার কাছ থেকে দুধ রাখছি, তুই খাবিনা? একটু খেয়ে নে মা নইলে গায়ে লাগবে না l 
    -না মাসি এখন দুধ খেতে বলনা l 
    - ঠিক আছে তবে রাতে খাস কেমন! কিন্তু সকালে দুধ খাওয়াটা বিশেষ প্রয়োজন l 
    ব্রেকফাস্ট সেরে মাসি বোনঝি দুজনেই বেরিয়ে পড়লো l মাসি রোজ টুম্পাইকে নিয়ে স্কুলে ছাড়েন কারণ পুল কার কিম্বা স্কুল বাস কে উনি বিশ্বাস করেননা l ওরা বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে অনেক এক্সিডেন্ট করে l টুম্পাই মাসির সবে ধন নীলমণি l তাকে যার তার হাতে পাঠানো যায়না তাই মাসি নিজেই তাকে স্কুলে ছেড়ে তবে ব্যাংকে যান l 
    তনিমা ব্যানার্জী( টুম্পাইয়ের মাসি) ব্যাংকের দায়িত্ব পূর্ণ কাজে আছেন l উনি ষ্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, মিন্টো পার্ক এর ক্যাশিয়ার তাই সময় মতন পৌঁছতে হয় l এই বছর উনি প্রোমোশন পাবেন l হয়তো ট্রান্সফার হবে তাই উনি চিন্তিত কোথায় পোস্টিং হবে কে জানে ! হেড অফিসে ওনার কথা সবাই জানেন l তবুও উনি রিজিওনাল ম্যানেজারকে সব কথা বলেছেন l তন্ময় মুখার্জী এখন রিজিওনাল ম্যানেজার আছেন l উনি অবিবাহিত কারণ ওনার মা পার্কিনসন ডিজিজে ভুগছেন l মাকে দেখার জন্য ভদ্রলোক
    বিয়ে করেন নি l উনি ব্যাংকে এলে বাড়িতে 24 ঘণ্টার লোক আছে মঞ্জু মাসি l মঞ্জু মাসি আছে বলে মাকে ওনার জিম্মায় ছেড়ে আসেন l মায়ের যখন যন্ত্রণা হয় তন্ময় বাবু খুব কষ্ট পান যদিও ওষুধ এবং ডাক্তার সব ই চলছে ঠিক মতন l 
    লক্ষণ:- রিউমাটিক মাস্কিউলার পেন, হাঁটা চলায় কষ্ট, দাঁড়াতে কষ্ট অনুভব করা l শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাজ করেনা l সব সময় হাত পা কাঁপে l
    ঘুম হয়না বা অনিদ্রা l দুঃস্বপ্ন,ক্লান্তি অনুভব করা ইত্যাদি l
    সারা শরীর ক্লান্তি অনুভব করা, আচ্ছন্ন ভাব, হাত পা কাঁপে l অসহ্য যন্ত্রণা হয় l 
    স্মৃতিশক্তি বিলুপ্ত এবং স্মৃতিভ্রংশ, উন্মত্ততা ইত্যাদি l 
    কথা বলতে কষ্ট পাওয়া l 
    এ এক স্নায়ু জনিত বিষম ব্যাধি যা মানুষকে পর নির্ভরশীল করে দেয় l সেই কারনে তন্ময় বাবু তাঁর মায়ের প্রকৃত যত্ন করার জন্য মঞ্জু মাসিকে সারা দিনের জন্য রেখেছেন l
    মঞ্জু মাসির ও কেউ নেই l সুন্দর বোন এলাকায় গোসাবায় মঞ্জু মাসির ছোট্ট একটা কুঁড়ে ঘর ছিল l আয়লা তে সে ঘর ও ভেঙে পড়ে l মঞ্জু মাসি অর্ধেক দিন অভুক্ত অবস্থায় থাকতো l মঞ্জু মাসির কেউ নেই স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা l বর অন্য মহিলাকে নিয়ে সুরট চলে গিয়েছে মঞ্জু মাসিকে ফেলে l সেইথেকে মঞ্জু মাসি খুব কষ্টে দিন কাটাত l আয়লা র সময় ব্যাংক থেকে আয়লায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাসে দাঁড়াতে তন্ময় মুখার্জীর মতন মানুষেরা সুন্দরবন অঞ্চলে যান l সেই সময় গ্রামবাসীদের অনুরোধ ক্রমে তন্ময় বাবু গ্রাম সভা করে ওদের লিখিত অনুরোধে মঞ্জু মাসিকে নিয়ে আসেন তাঁর মাকে দেখা শোনা করার জন্য l ঐ কাগজে সই করতে গ্রাম প্রধান এবং ওয়ার্ড মেম্বার রা আপত্তি করছিলেন কিন্তু গ্রাম বাসিদের সমূহ প্রস্তাবের কাছে তারা মাথা নোয়ান এবং তন্ময় মুখার্জী তাদের লিখিত শর্ত অনুযায়ী মাসিক 5 হাজার টাকা এবং খাওয়া পরা থাকার সমস্ত দায়িত্ব নেন l সকলে কাগজে সই করে l সেইথেকে মঞ্জু মাসি একটা ভদ্র পরিবেশের সন্ধান পান l তাই বলি, রাখে হরি মারে কে ? সেই দিন থেকে মঞ্জু মাসি তন্ময় বাবুর বাড়ির সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে আছেন l প্রায় ছয় বছর হোল l ঠিক তন্ময় বাবুর মা তারপর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মানে সুন্দর বোন থেকে মঞ্জু মাসি আসার পর থেকে l মঞ্জু মাসি তন্ময় বাবুর বাড়ির রান্না, বাজার করা, তন্ময় বাবুর মা কে স্নান করিয়ে দেওয়া, খাইয়ে দেওয়া জামা কাপড় ওয়াসিং মেশিনে কাচা, ইস্ত্রি করা সব করেন l একটি ছোট মেয়েকে যেমন সব করে দিতে হয় পার্কিনসন রোগীদের ও ঠিক সেই রকম করে যত্ন নিতে হয় l তাই তন্ময় বাবু অবিবাহিত থাকার সিদ্ধান্ত নেন l কারণ মঞ্জু মাসির ওপর সব দায়িত্ব ছেড়েও উনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন না l 
    তনিমা দেবীকে তন্ময় বাবু খুব পছন্দ করেন l তনিমা দেবী তাঁর বোনঝিকে মানুষ করছেন এবং সব দায়িত্ব নিয়েছেন শুনে খুব খুশি l উনি তনিমা দেবীকে আস্বাশনা দিয়েছিলেন কোন অসুবিধে হলে জানাতে l তাই তনিমা দেবী প্রোমোশনের ব্যাপারে তন্ময় বাবুকে বলে রেখেছিলেন এই কলকাতার ভেতরে কোথাউ পোস্টিং করতে নাহলে ওনাকে প্রোমোশন ফোর গো করতে হবে l তন্ময় বাবু আস্বাশনা দিয়েছিলেন তিনি সাধ্য মতন সাহায্য করবেন তবে কথা দিতে পারছেন না কারণ ব্যাংকের নিয়ম কানুন একটু কড়া l তবুও ইউনিয়ন এর পাণ্ডারা কিছুটা সাহায্য করে l কিন্তু এখন সেসব প্রায় হয়না l 
    টুম্পাইয়ের স্কুলের শেষে তনিমা দেবী ওকে স্কুল থেকে নিয়ে আসেন অফিসে l ওখানে টুম্পাই মাসির ব্যাংকে ভিজিটার্স  ওয়েটিং লাউঞ্জে অপেক্ষা করে l মাসির কাজ শেষ হলে দুজনে বাড়ি ফেরে l
    প্রত্যেক দিন এই রুটিন বাঁধা l টুম্পার শনি এবং অন্য ছুটিতে স্কুল বন্ধ থাকলে তনিমা দেবী ওনার এক কলেজের বান্ধবীর বাড়িতে রেখে আসেন l প্রণতি মাসিকে টুম্পা খুব ভালোবাসে l প্রণতি মাসিও ওকে তনিমা দেবীর মতন যত্ন করেন l প্রণতি মাসির বাড়িতে কেউ নেই l ওনার স্বামী ডিফেন্স এ কাজ করেন l আম্বালা তে থাকেন l উনি 4-6মাসে একবার আসেন l ওনাদের কোন পুত্র কন্যা নেই তাই টুম্পাকে প্রণতি মাসি খুব আদর যত্ন করেন l আসলে টুম্পার ভাগ্যটাই সকলের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য হয়েছে l ও মেয়েটাও এতো ভালো সকলে ওকে আদর করে ভালোবাসে l

    চলবে:-
    ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🙏

    ****এই গল্পের কয়েকটি চরিত্র****
    টুম্পা     স্ট্যান্ডার্ড VI অশোক হল স্কুল, মিন্টো পার্ক, কোলকাতা l 
    তনিমা ব্যানার্জী(টুম্পার মাসি) ক্যাশিয়ার,স্টেট্ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, মিন্টো পার্ক, কোলকাতা 
    তন্ময় মুখার্জী ,রিজিওনাল ম্যানেজার, স্টেট্ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ,ভি. আই. পি. রোড, কাঁকুড়গাছি, কোলকাতা l  
    মঞ্জু মাসি    তন্ময় বাবুর বাড়ির পরিচারিকা
    প্রণতি মাসি   তনিমা র বান্ধবী মিন্টো পার্কে বাড়ি l

  • Tribhubanjit Mukherjee <jitmukherjee53@yahoo.com>
    To:Phalguni Mukherjee
    Mon, 12 Oct at 8:51 pm
    আমার মাসি  তৃতীয় পর্ব  
      
      ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী ✍️🙏🌹

    টুম্পাইয়ের জন্য তনিমা দেবী একটু বেশি চিন্তা করেন l মা মরা মেয়েটার জন্য ওনার বুকের ভেতরে একটা সুপ্ত যন্ত্রনা অনুভব করেন l দিদির কাছে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন তাঁর অবর্তমানে টুম্পাইয়ের সমস্ত দায়িত্ব তিনি বহন করবেন তাকে মানুষ করবেন l তাকে কখনোই তার মায়ের অভাব বুঝতে দেবেন না  l তার জন্য যা স্বার্থত্যাগ করতে হয় তা তিনি করতে প্রস্তুত l তবুও কেন জানি মাঝে মাঝে মনটা খাঁ খাঁ করে l
    গত শনিবার ব্যাংকের কাজ সেরে তন্ময় বাবুর সংগে দেখা করেন তনিমা দেবী l ব্যাপারটা খুব ই প্রসঙ্গত তাঁর নতুন ব্যাংকে পোস্টিং নিয়ে কথা হচ্ছিলো l তনিমাকে তাঁর ব্রাঞ্চে পোস্টিং এর জন্য চেষ্টা করছেন তন্ময় বাবু  l

    তনিমা বলে না না আমার মেয়েকে কে নিয়ে যাবে নিয়ে আসবে তাহলে ? 
    আমি প্রোমোশন ফোর গো করবো l আমার অন্য উপায় নেই l মা মরা মেয়েটাকে কে দেখার আছে বলুন? ওতো অনেক দূর হয়ে যাবে l

    তন্ময়:- চিন্তা কোরোনা আমার কারে ওকে আমার ড্রাইভার নিয়ে যাবে নিয়ে আসবে l

    তনিমা:- তা কি করে হয় l আপনার ড্রাইভার আমার মেয়েকে কেন নিয়ে যাবে নিয়ে আসবে? তা ছাড়া আমি আপনার ব্র্যাঞ্চেই বা আসবো কেন ?

    - এ ছাড়া অন্য উপায় দেখছি না l 

    - কেন?

    - দেখো অনেক দিন তোমাকে একটা কথা বলবো বলবো করেও বলা হয়নি l আমার মার অসুখের পর থেকে ঐ মঞ্জু মাসি সব দায়িত্ব নিয়েছে l তা ছাড়া আমি একজন নার্স রেখেছি আমার মা কে প্রত্যেকদিন তিনি ওষুধ পত্র খাইয়ে দেন রেগুলার চেক আপ করেন l ডাক্তারের প্রয়োজন হলে উনি ডাক্তার বাবুকে খবর দেন l কিন্তু তবুও আমি অফিসে স্থির থাকতে পারিনা l মায়ের জন্য মনটা ছট ফট করে l এই সব বলার একটাই কারণ আমি তোমাকে প্রপোজ করছি আমার জীবন সঙ্গিনী হওয়ার জন্য l আর কতো দিন আমরা বসে থাকবো? সংসারটাতো  একদিন করতেই  হবে l নিজেদের পার্সোনাল লাইফ ও তো একটা আছে না কি ? ভেবে দেখো আমার কথাটা l আমি টুম্পাইয়ের কোন অযত্ন করবোনা কিম্বা তোমাকে ওর ব্যাপারে বিব্রত করবোনা l আমার বড় একা লাগে l নিঃসঙ্গ জীবন বাড়ি আর অফিস ছাড়া আমার কেউ নেই মনের কথা শেয়ার করার মতন l ব্যাপারটা ভেবে দেখ l I love you. Sincerely I must say I admire you . You are dedicated and dutiful women which I like. আমি কথাগুলো বললাম অনেক আশা নিয়ে....
    তন্ময়ের চোখে যেন তনিমা তার সর্বনাশ দেখছিলো l কেমন এক অদৃশ্য হাত তাকে ইশারা করছিলো... ওর দিদির মুখটা ভেসে উঠলো.....হ্যাঁ বলে দে তনিমা.... হ্যাঁ বলেদে..... দিদি বলছে নেপথ্যে !!
    তনিমা লজ্যায় মুখ নিচু করে বলে আমি কি বলবো আমার জন্য আমি কোনোদিন ভাবিনি l দিদির মুখটা খালি ভাসে l মনে মনে ভাবি আমি কিছু ভুল করছি নাতো..!!!
    রাতে ঘুম এলোনা l তনিমা , টুম্পাই আর তন্ময়ের মধ্যেখানে দোটানায় পড়ে গিয়েছে l ভদ্রলোক খুব সাধারণ সরল ভাবে কথাগুলো বলে ফেললেন l  দেখতেগেলে উনি তনিমার  বস l কেন উনি তনিমাকেই  প্রপোজ করলেন ? অন্য মেয়ে কি নেই l মেট্রিমোনি সাইটে হাজার একটা প্রপোসাল পেতেন l তবে হ্যাঁ আজকাল ভালো সৎ চরিত্রের মেয়ে পাওয়া মেট্রিমোনি সাইটেও বিরল ঠিক  সেইরকম পুরুষ ও বিরল l কার ভেতরে কি আছে কে জানে ! তাই হয়তো ওনার আমাকে ভালো লেগেছে l হতেও পারে তবে এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন নাতো ভদ্রলোক ! কি জানি নর মায়া স্বয়ং নারায়ণ ই জানেন l রবিবার একবার প্রণতির বাড়ি যেতে হবে এই বিষয়টা ওকে জিজ্ঞাসা করলে কেমন হয় l ও সাজেস্ট করবে প্রপোসাল টা ঠিক না ভুল l ওকেই একমাত্র ভরষা করে বলা যায় l 
    সেদিন টুম্পাই কি ভাবলো কে জানে ? মেয়েটা বড় হচ্ছে... ওর জন্য খুব চিন্তা হয় l তনিমা ঘুমিয়ে পড়ে l
    ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🙏🌹
    চলবে:-
    ##আমার মাসি##চতুর্থ পর্ব

     ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🙏🌹12.10.2020. সোমবার বেলা 02.36.
    সকাল সকাল টুম্পাইকে স্কুলের ড্রেস পরানোর সময় তনিমা জিজ্ঞাসা করে হ্যাঁরে মা সেদিন যে মেসোর বাড়ি গিয়েছিলি তা কেমন লাগলো ঐ মেসোকে ? 
    টুম্পাই একটু হাঁ করে মাসির মুখের দিকে তাকায় তারপর ফিক করে হেঁসে বলে, তুমিতো বলেই দিয়েছ যা বলার আমি আর কি বলবো !
    - মানে?
    - তুমিতো এক্ষুনি বললে মেসোর বাড়ি....

    তনিমার মুখটা লাল হয়ে গেল লজ্জায় l তাইতো 'মেসো' বলা উচিত হয়নি তার l মেয়েটা যে বড় হচ্ছে সব বুঝতে শিখছে ওর সেটা বোঝা উচিত ছিলো l 

    -আরে না না মা  এমনি আমরা বলিনা আঙ্কেল বলে অপরিচিত কোন লোককে সম্বোধন করার জন্য সেইরকম আমি বলেছি তোকে l  এতে হাঁসার কি হোল ! নে তাড়া তাড়ি জুতোটা পরে নে মা l বলে টিফিন আনতে যায় l 

    টুম্পাই মনে মনে খুশি, মাসি ঐ মেসোর বাড়ি ওকে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে l মেসো খুব ভালো l ও যখন ঐ বাড়িতে দিদার কাছে ছিলো, মেসো কি যেন মাসিকে বলছিলেন l ওর কানে একটা কথাই এসেছে... না না সেটা বলা যাবেনা... মাসি খুব রাগ করবে তাহলে l 

    তনিমা ফিরে আসে টিফিন গোছাতে গোছাতে l ওর স্কুল ব্যাগে স্কুলের ডাইরিতে সই করে দেয় কোন একটা জরুরী নোটিস ছিলো পেরেন্ট টিচার্স মিটিং শনিবার l ঐদিন মিটিং সেরে প্রণতির সংগে দেখা করবে l ওকে সব খুলে বলবে কিন্তু টুম্পাইকে দূরে রাখতে হবে l ওর কথা খেয়াল ই ছিলোনা তনিমার l খুব ভুল হয়েছে তার l তবে ও তন্ময়কে সাবধান করা উচিত ছিলো l আসলে ব্যাপারটা ঐরকম হবে বলে অনুমান করতে পারেনি l মেয়েটার কথা খেয়াল করেনি l 
    সেই দিন থেকে তনিমা একটু অন্যমনস্ক আছে l 
    দুজনে স্কুলে চলে যায় l তনিমা ব্যাংকে ফিরে আসে l ম্যানেজার ডেকে পাঠান তনিমাকে l তখন ও ক্যাশ কাউন্টার খুলতে যাচ্ছিলো...
    ম্যানেজার এর রুমে পৌঁছে বলে, গুড মর্নিং সার ডাকছিলেন l 
    গুড মর্নিং তনিমা দেবী l আরে আপনিতো lucky madam . এখন অফিসার হয়ে জয়েন করবেন হেড অফিসে l এই নিন আপনার অর্ডার .... Congratulation. 
     Thank you Sir. কিন্তু আমিতো ঐ ব্রাঞ্চ চাইনি l 
    আপনার চাওয়া না চাওয়া তে তো ব্যাংক চলেনা, নিজে রিজিওনাল ম্যানেজার  তন্ময় মুখার্জী আপনার জন্য recommended করেছেন হেড অফিসে l তন্ময় মুখার্জীর রেপুটেশন ভালো l ব্যাংক ওনার কথা শুনবেনা ? 
    পার্টি কিন্তু দিতে হবে l ব্যাংকের কিছু মহিলা স্টাফ চলে আসেন ম্যানেজার এর কাছে l সবাই একসঙ্গে বলে গুড মর্নিং সার.. তনিমা কে পার্টি দিতেই হবে l একটা হোই হুল্লোড়ের পরিস্থিতি দাঁড়ায় l ম্যানেজার সকলকে যে যার সিটে ফিরে যেতে বলেন l 
    তনিমা ব্যাপারটা স্বপ্ন দেখার মতন দেখে ভাবে সব কাজ সেরেই তন্ময় স্যার ওকে প্রপোজ করেন l ওকে ভাবার ও সময় দিলেন না l এটাতো একরকমের ইচ্ছে চাপিয়ে দেওয়া l 
    - কিছু বলবেন,তনিমার দিকে তাকিয়ে ম্যানেজার বলেন l আপনাকে অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে l 
    - না স্যার আমি আসছি l ক্যাশ কাউন্টারে লোক এসেগিয়েছে .. বলে চলে যায় l
    দৈনন্দিন কাজে তনিমা এতোই ব্যাস্ত নিজের কথা কোনদিন চিন্তা করেনি l নিজেকে অনেকটা স্বার্থপর মনে হচ্ছে l দিদির মৃত্যু শয্যার ছবিটা বারে বারে চোখের সামনে আসে l আমার মেয়েটাকে দেখিস ছুটকি (তনিমার ডাক নাম) আমি তোর হাতে দিয়ে নিশ্চিন্তে মরতে পারবো l তনিমার চোখ দুটো ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে l খুব অসময়ে দিদি চলে গেলেন l জামাইবাবু দুবাই ফিরে গেলেন মেয়েকে তনিমার কাছে রেখে l মাস মাস মোটা টাকা পাঠান তনিমার একাউন্টে l তনিমা টুম্পাইয়ের বিয়ের জন্য সব টাকা ফিক্স করে রেখেছে l ও নিজের টাকায় টুম্পাইকে মানুষ করছে ... ওর পড়াশুনোর খরচ স্কুলের এডমিশন ফিস সব নিজের মাইনে থেকে দেয় .. জামাইবাবুর টাকায় হাত দেয়না l
    ম্যাডাম চেকটা নিন.... এক কাস্টমারের ডাকে চমকে ওঠে !
    হ্যাঁ হ্যাঁ দিন দিন l 
    - কম্পিউটারে একাউন্ট নাম্বার টাইপ করার পর বলে....একি আপনার সিগনেচার টেলি করছেনা l আমার সামনে আবার করুন l
    - এটাতো বিয়ারারস চেক l আমার নয় l - ঠিক আছে ওনার কাছথেকে আবার সই করিয়ে আনুন l
    - তা কি করে সম্ভব!
    - তাহলে টাকা দেওয়া যাবে না l next .
    সরুন  মশাই পেছনের লোক বলেন l
    ব্যাংকের কাজ সেরে টুম্পাইকে আনতে ওঠেন l 
    আজ তনিমা একটু অন্যমনস্ক থাকছে l  টুম্পাইকে আনতে গেল l ওদের স্কুলের এন্যুয়াল ডে আগামী 25 তারিখ l টুম্পাই সেই বিষয় মাসিকে বলে l মাসি বলে ঠিক আছে এখন চল l বাড়ি পৌঁছে তনিমা প্রণতিকে ফোন করে l হঠাৎ দরজায় কলিং বেলের আওয়াজ ....
    ফোনটা রেখে বলে কে?
    আমিরে l আমি প্রণতি l
    - ওমা তুই l আমিতো তোকেই ফোন করছিলাম l এ যেন মেঘ না চাইতেই জল l হঠাৎ আমাকে কিছু না জানিয়েই চলে এলো যে ! আমি যদি না থাকতাম?
    - ফিরে যেতাম! কিন্তু আজ তোকে একটা সারপ্রাইজ দেবো ভাবলাম l কেমন দিলাম বল?
    এতে সারপ্রাইজ এর কি আছে? 
    টুম্পাই মাসিকে প্রণাম করে ওর ঘরে যেতে যাচ্ছিল... এই দাঁড়া তোর ক্যাডবেরি টা নিবিনা l 
    - ও মা তুমি আবার কেন ক্যাডবেরি আনলে মাসি? আমি কি বাচ্চা?
    - না মা তুমি পাকা বুড়ি l তুমি চৌবাচ্চা বলে হেঁসে ওঠে l তুমি তো আমার ছোট্ট সোনা l তুমিকি আমার কাছে বড় হয়েছ মা ?... প্রণতি আদোর করে বলে l
    - আমাকে পাকা বুড়ি বোলোনা মাসি আর চৌবাচ্চায় নয়  l আমার মা কষ্ট পাবে আমায় ঐ সব কথা বললে l তুমি কি চাও আমার মা কষ্ট পাক ?
    - ওরে আমার মা'রে তোর এতো বুদ্ধি l আচ্ছা মা তোকে কিচ্ছু বলবোনা l তুই ক্যাডবেরিটা নিয়ে যা l 
    তনিমা, টুম্পাইকে কে বলে... মাসি একদিনের জন্য বাড়ি এসেছেন মাসির কথা কি কেউ ধরে মা l মাসিতো তোমার মায়ের মতন l তুমিতো আগে এইরকম কোন দিন বলতে না l মাসি আদোর করে ক্যাডবেরি এনেছেন নিয়ে যাও l 
    টুম্পাই বলে সরি মাসি l
    - ওকে মাই চাইল্ড . ইটস ওকে.
    টুম্পাই ভেতরে ওর পড়ার ঘরে চলে যায় ......
    চলবে:-
    © ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জি✍️🙏🌹
       12.10.2020, দুপুর 02.35

  • Tribhubanjit Mukherjee <jitmukherjee53@yahoo.com>
    To:Phalguni Mukherjee
    Tue, 13 Oct at 12:37 pm


    আমার মাসি   5ম পর্ব 
    ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী ✍️🙏🌹
    মঙ্গলবার সকাল 08.43

    অনেকদিন পর প্রণতিকে পেয়ে তনিমা বলে শোন আজ আমার এখানে লাঞ্চ খাবি কিন্তু l অবশ্য বেশি কিছু করবোনা  চিকেন দো পিঁআজা,ডাল মাখনী, পালক পনির, বাসমতি রাইস সংগে মিষ্টি দই আর আনারসের চাটনি l খবিতো?
    প্রণতি বলে তুই তো এলাহী কাণ্ড করবি দেখছি l আজ না l আজ আমার পেটের অবস্থা ভালো নেই l আজকে আমি একদম ঝোল ভাত করে এসেছি তাই খাবো l তুই যা ফিরিস্তি দিলি আমাকে আর বাড়ি ফিরতে হবে না l 
    -ফিরবিনা একদিন না হয় বান্ধবীর বাড়িতে থাকলি l
    -না রে, ও রাতে ল্যাণ্ড ফোনে ফোন করে l আমাকে না পেলে ভীষণ চিন্তা করবে l বলবে রাত দুপুরে কোথায় ছিলে? জানিসতো মিলিটারীর লোক রক্ষে রাখবেনা আমায় l হয়তো ওখান থেকেই গুলি করে দেবে l আমার বেঘোরে প্রাণটা যাবে l
    দুজনে হেঁসে ফেলে l 
    -তুই বরকে খুব ভয় করিসনা না?
    -ভয় পাই নয় ভালোবাসি l ঐ বিদেশে অতো দূরে দেশের জন্য পড়ে আছে l আমিতো একটা সন্তান ও দিতে পারিনি ওনাকে l রাত দিন গোলা গুলি ছাড়া আর কিছু নেই l কখনো সন্ত্রাসবাদী কখনো শত্রু পক্ষর অনুপ্রবেশ l ওদের জীবনে শান্তি নেই সেখানে আমি কি করে ওর কথা না শুনি বল ! ওরা যে দেশের জন্য জীবনকে বাজি লাগিয়ে শত্রুর  মোকাবিলা করে তার কি কোন মূল্য পায় রাজনেতা, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে? যুদ্ধে প্রাণ গেলে একটা মরণোত্তর সম্মান বাবদ মেডেল আর বিধবা স্ত্রীকে কিছু টাকা l অমুক বীরগতি প্রাপ্ত হুয়ে দেশ কে লিয়ে আপনি যান লড়া কে l কিছু হাত তালি আর প্রধান মন্ত্রী কিম্বা রক্ষা মন্ত্রীর পিট চাপড়ানি l ব্যাস তারপর সবাই ভুলেযাবে তাদের l এই হচ্ছে আমাদের দেশের জবানদের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান l 
    আমি খুব দুঃশ্চিন্তায় থাকি l রোজ একবার কথা বললে মনটা শান্তি হয় তবুও মানুষটা বেঁচে আছে l প্রণতির চোখ থেকে দু ফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়ে l 
    - চিন্তা করিসনা না l উনি তো আর সাধারণ সোলজার নন কর্নেল l কর্নেল কি যুদ্ধ করতে যাবেন ? 
    -তুই জানিসনা কর্নেল ব্রিগেডিয়ার সকলকেই যুদ্ধে যেতে হয় সময় পড়লে l
    -তোকে তো আসল কথাটাই বলা  হয়নি রে l আমার প্রোমোশন হয়েছে l স্কেল 1 অফিসার l হেড অফিসে পোস্টিংl  আরেকটা কথা .....দাঁড়া দেখে আসি টুম্পাই কি করছে......
    একটু পরে ফিরে এসে বলে শোন তোর সংগে একটা গোপন কথা আছে l
    - কি কথা বলো l  তন্ময় মুখার্জী, আমাদের রিজিওনাল ম্যানেজার এখনো ও অবিবাহিত l ওনার মা'র পার্কিনসন রোগ আছে প্রায় শয্যাশায়ী l বাড়িতে 24 ঘন্টার লোক আছে দেখা শোনা করার l ভদ্রলোক নার্স ও রেখেছেন মায়ের জন্য l খুব যত্নে রেখেছেন মাকে l 
    - আসল কথাটা বলবিতো l 
    - বলছিরে  বাবা l একটু তর সয় না l হ্যাঁ ভালো কথা একদিন ওনার বাড়িতে গিয়েছিলাম আমার প্রোমোশন এবং পোস্টিং  সংক্রান্তে , কারণ উনি টুম্পাইয়ের কথা জানেন l উনি আমাকে অস্বাসনা দিয়ে ছিলেন আমার প্রোমোশন হলে বদলি নিশ্চিৎ সেই সময় উনি আমাকে সাহায্য করবেন l সেই সূত্রে ওনার কাছে যাওয়া l উনি বলেন হেড অফিসে পোস্টিং এর জন্য উনি বলবেন তারপর কি হয় বলা শক্ত l  কিন্তু আমি ঐ প্রস্তাবে গর রাজি ছিলাম কারণ টুম্পাইয়ের স্কুল অনেক দূরে হয়ে যাবে l আমি বলেই ফেলি আমি প্রোমোশন ফোর গো করবো বলে l উনি কি বললেন জানিস?
    - কি?
    - উনি বলেন ওনার কারে ড্রাইভার টুম্পাইকে স্কুলে নেওয়া আনা করবে l
    - সেটা কি করে সম্ভব?
    - শোন না বলছি তো l পরে উনি আমাকে প্রপোজ করেন এবং বলেন আমাকে বিয়ে করতে চান যদি আমার কোন  আপত্তি না থাকে তো l এরপর আজ এক অবাক কাণ্ড ঘটেছে l অফিসে গিয়ে দেখি আমার প্রোমোশন এবং ট্রান্সফার এর অর্ডার এসেছে l আমাদের ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার আমাকে অর্ডার ধরিয়ে উইশ্ করলেন l কি ফ্যাসাদে পড়লাম বলতো?
    - ডবল কংগ্রাচুলেশন l আরে তোর তো সপ্তমে বৃহস্পতি l তাই তুই খাওয়াবি বলছিলিস ! খাবো তো নিশ্চই l কব্জি ডুবিয়ে খাবো l তবে বরকে জানাতে হবে আজ l 
    -  তুই এই বুঝলি? আমার সর্বনাশ হতে চলেছে তুই এখন কব্জি ডুবিয়ে খাওয়ার কথা বলছিস কি করে?
    - কেন? তুই কি ওনাকে মানা করে দিয়েছিস ? তোকে এতো বড় একজন রিজিওনাল ম্যানেজার প্রপোজ করেছেন তুই তো ভাগ্যবান রে l 
    - তুই তাহলে ঐ প্রপোজাল টা একসেপ্ট করছিস ?
    - এটাকি তোকে গলা ছেড়ে বলতে হবে ? আর একসেপ্ট করে নে l উনি ভালো লোক তাই  তোকে এতো বড় পোষ্টে থেকেও তোর জন্য চিন্তা করে কলকাতার মধ্যেই পোস্টিং করিয়ে দিয়েছেন আবার তোকে বিয়ে করার জন্য প্রপোজ করেছেন এটাতো ভালোই রে l তুই কি সব সময় অবিবাহিত থাকবি? তোর কি একটা অবলম্বনের প্রয়োজন নেই ? রিটায়ারমেন্টের পর বয়েস বাড়লে তখন বুঝবি একটা শক্ত খুঁটির প্রয়োজন l সেটা হোল তোর স্বামী l উনি তখন তোকে দেখাশোনা করবেন l 
    - উনি আমার চেয়ে 12 বছরের বড় l আমাকে উনি কি দেখবেন? বরং উল্টো ওনাকে আমায় দেখতে হবে l
    - তাও একটা অবলম্বনের দরকার l নারীর জীবনে  একটা পুরুষ মানুষের প্রয়োজন l সেটা তুই অস্বীকার করতে পারিস না l সব সময় কি তুই এই রকম ভাবে থাকবি ?
    - আমি একটা মেয়ের দায়িত্ব নিয়েছি   তারপ্রতি আমার অনেক বেশি নজর দেওয়া উচিত l একটু এদিক ওদিক হলে আমাকে পস্তাতে হবে তখন কি তুই আমায় রক্ষা করবি ?
    - সব সময় নাস্তিবাচক কথা বার্তা বলা উচিত নয় ইতি বাচক কথা বললে সব সময় মানুষ মানসিক দিক থেকে সুস্থ থাকে l Think positive my dear. অতো negetive চিন্তা কেন করছিস?
    - নারে আমি আমার জন্যে ভাবিনা l আমার দিদিকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি তার আমার ওপর বিশ্বাস কে জলাঞ্জলি দিয়ে আমি স্বার্থপরের মতন শুধু নিজের সুখ সুবিধের কথা ভাববো? তা হয়নারে l আমার একটু ভুল নিষ্পত্তিতে এক অবলা শিশুর ক্ষতি হতে পারে l সেটাতো আমি বেঁচে থাকতে হতে দেবো না l উনি আমায় বিয়ে করার পর কি রূপ নেবেন এবং আমার মেয়ের প্রতি কি ব্যবহার করবেন সে কি করে অনুমান করবো? আমি ওনাকে শুধু রিজিওনাল ম্যানেজার হিসেবে জানি আমাদের বস l বস কে কেউ বিয়ে করে? তা ছাড়া আমার বিয়ে করার কি প্রয়োজন আছে ? উটকো ঝামেলা বাড়বে l ওনার মা কে দেখাশুনো করতে বলবেন l হয়তো নার্স কে ছাড়িয়ে দেবেন l এখানে আমি আমার মতন স্বাধীন ভাবে সব করি বিয়ের পর তো পরাধীন হয়ে যাবো তার ওপর উনি আমার সুপ্রিম বস l অনুমান করতে পারছিস ! আমি আমার জামাইবাবু কে জিজ্ঞাসা করবো l ওনার মতা মতের প্রয়োজন আছে  l জামাইবাবু আমার ভরসা তে ওনার মেয়েকে আমার কাছে রেখেছেন l আমার কাছে ওনার মেয়ে সুরক্ষিত ভেবে l তাঁকে জিজ্ঞাসা না করে তার মতা মত না নিয়ে আমি কিছুই করতে পারিনা  l তিনি মাসগেলে মেয়ের জন্য মোটা টাকা পাঠান আমার একাউন্টে l যদিও আমি ঐ টাকায় এখনো হাত দি নি l তবুও আমার একটা কর্তব্য আছে l আমি আমার উত্তর দায়িত্ব কে অস্বীকার করতে পারবোনা l 
    - তবে তুই তোর জামাইবাবু কে জিজ্ঞাসা কর l আমি চলি রে l 
    -সে কি! তুই কি আমার ওপর রাগ করলি?
    - না না রাগের কি আছে! এটা তোর জীবনের একটা শক্ত সিদ্ধান্ত l সেটা তোকেই নিতে হবে l তা ছাড়া তোর মেয়ে সেটা মেনে নেবে কিনা সেটাও দেখতে হবে জানতে হবে l তোর জামাইবাবুর কথাও তোকে শুনতে হবে l তাঁর মতা মত এর প্রাধান্য দিতে হবে l তোর বস  প্রপোজ করলেই যে সেটা একসেপ্ট করতে হবে তার কোন মানে নেই l 
    -তবে যে বললি মেনে নে বলে l এখন বুঝছিস  তো ব্যাপারটা অতো সোজা নয় l এই বলছিলিস আমি.....
    -আচ্ছা হয়েছে বাবা ঘাট হয়েছে l আমি তোর বিয়ে আর প্রোমোশনের আনন্দে বলেছি...
    - আরে তুই চললি কোথায়? রাগ করিসনা l আমার দিকটা একটু বুঝে দেখ l 
    - আমি তো যা বলার বলেই দিলাম l চলিরে l আমার অনেক কাজ আছে l ওষুধ কিনবো l একটু মার্কেটিং করবো l প্রণতি ওর ড্রাইভার কে ডাকলো আসার জন্য l 

       চলবে:-
    ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🙏🌹
  • Tribhubanjit Mukherjee <jitmukherjee53@yahoo.com>
    To:Phalguni Mukherjee
    Wed, 14 Oct at 7:53 pm
    :##আমার মাসি## 6ষ্ঠ পর্ব 🌹🌹ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🌹🙏14.10.2020.বুধবার বেলা  01.47

    অনেক দিন পর প্রণতি এসেছিলো তনিমার বাড়ি কিন্তু কিছু না মুখে দিয়েই চলেগেলো l তনিমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল l এমন কথা বললো কিছু বলার উপায় নেই l
    আজ কেন জানিনা তনিমা একটু উদাসীন হয়ে পড়েছে l তার  জীবনের একটা টার্নিং পয়েন্ট এ এসে কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটার ওপর নির্ভর করছে তার এবং টুম্পাইয়ের ভবিষ্যৎ l একটু ভুল হলে সারা জীবন পস্তাতে হবে l কাল ছুটি আছে l
    আজকে রাতে জিজুকে ফোন করবে l ল্যাণ্ড ফোনটা হঠাৎ বেজে ওঠে l লং রিং মানে জিজুর ফোন l তনিমা দৌড়ে যায় ফোন ধরতে l টুম্পাই তার বাবার সংগে কথা বলবে তাই আগে টুম্পাইকে বলে ফোন রিসিভ করতে l
    টুম্পাইয়ের  প্রথম কথা,বাবা তুমি কেমন আছো? কি খাচ্ছ? শরীর কেমন? নিজের যত্ন নিও l তুমি কবে আসবে আমার কাছে ? আমিতো কাছে নেই নাহলে মাথা টিপে দিতাম l
    ওর বাবা বলে, হ্যাঁ রে মা তুই তো আমার মা l আমি ফিরে যাচ্ছি ইন্ডিয়াতে l এবার আর তোকে ছেড়ে থাকবো নারে মা l আমার ছোট্ট মা l তুই মাসির কাছে ভালোই আছিস l মাসির কথা শুনবি ভালো করে পড়াশুনো করবি l তোর জন্য একটা সারপ্রাইস আছে l এখন মাসিকে দে l বাই বাবা l তুমি ভালো থেকো l
    বাই মা l তুমিও ভালো থেকো l
    টুম্পাই মাসিকে ফোন দিয়ে নিজের ঘরে চলে যায় l
    তনিমা বলে জিজু কেমন আছো ? কবে আসছো ইন্ডিয়াতে?
    জিজু বলেন ফাইটের টিকিট কাটা হয়ে গিয়েছে l দুবাই থেকে নেতাজী ইন্টারনেশনাল এয়ারপোর্ট  এরিয়াল ডিস্টেন্স 3363 কি. মি.
    এমিরেটস এর বোয়িং বিমান 5 ঘন্টা 35 মিনিট সময় নেয় l দিল্লি হয়ে যায় তাই একটু বেশি সময় লাগে l আগামী সপ্তাহে পৌঁছে যাবো l
    এমিরেটস এর ফ্লাইট 13.15 তে  ছাড়বে দুবাই 18.50 এ নেতাজী ইন্টারনেশনাল এয়ারপোর্ট পৌঁছবে l
    - খুব ভালো তুমি ফিরে এসো অনেক কথা আছে l আমার প্রমোশন হয়েছে স্কেল 1 অফিসার হেড অফিসে পোস্টিং l টুম্পাইয়ের স্কুল দূরে হয়ে যাবে l তাই ভাবছি একটা মারুতি অল্টো কিনবো l নিজেকে ড্রাইভিং শিখতে হবে l কোলকাতা শহরে ছোট গাড়ি ভালো বলো ? তুমি এলে আমি একটু নিশ্চিন্ত  হবো l তুমি কি চাকরি ছেড়ে আসছো?
    - তুইতো সব গড় গড় করে বলেগেলি l আমায় কিছু বলতে দে.... প্রথমেই জানাই কনগ্রাচুলেশন 🌹 আমার ছোট শালী এতোবড় অফিসার হয়েগেলো এবারতো আমাকে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ওর অফিসে ঢুকতে হবে l
    - দূর কিযে বোলোনা আমার অনেক দায়িত্ব বেড়ে গেল l তুমি এলে টুম্পাইকে স্কুলে নিয়ে ছেড়ে আসবে আর নিয়ে আসবে l তোমারতো ড্রাইভিং ভালোই জানা আছে l দুবাইতে যে কারটা কিনেছিলে ওটা কি বিক্রি করে দিলে?
    - আমি এখানকার পাট চুকিয়ে যাচ্ছি l আমাদের কোম্পানির একটা ব্র্যাঞ্চ অফিস দুবাইতে আছে l ওখানেও  ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার দরকার l আমিতো এমিরেটস এর পাওয়ার সেক্টারে কাজ করেছি l এখানকার পাওয়ার সাপ্লাই, ডিস্ট্রিবিউশন কতো উন্নত ধরণের l 120 মেগা ওয়াটের পাওয়ার প্ল্যান্ট 100 মিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট l এইসব জায়গায় কাজ করে ওখানে গেলে খুব খারাপ লাগবে l এরা পেট্রোলিয়াম বিক্রি করছে কিন্তু নিজেরা হাইব্রিড কার ব্যবহার করছে l কার্বন এমিশন সম্পূর্ণ বন্ধ করতে ইলেকট্রিক কার ব্যবহার করছে l যাইহোক তোর খবর বল l
    - আমার আবার খবর কি? ঐ চলেযাচ্ছে l তুমি এলে সব বলবো l
    .............................

    গভীর জলে একটা পুতুল তলিয়ে যাচ্ছে তনিমা  যত চেষ্টা করলেও পুতুলটা জল থেকে তুলতে পারলোনা l পুতুলটা চিৎকার করছে আমায় বাঁচাও বাঁচাও, তনিমা কিছুতেই পারছেনা বাঁচাতে l তলিয়ে যাচ্ছে পুতুলটা l শেষে এক মাঝি পুতুলটাকে উদ্ধার করে ওর হাতে দেয় l ও পুতুলটাকে জোড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কাঁদছে আর বলছে আমি তোকে বাঁচাতে পারলামনা.... এ আমি কি করলাম.....
    তনিমা বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসে l পাসে টুম্পাইকে ঘুম চোখেই জোড়িয়ে ধরে l টুম্পাই ভয়ে মাসিকে জোড়িয়ে ধরে বলে কি হয়েছে মাসি... অমন কেন করছো? আস্বস্ত হয়ে বলে কিছু না মা জল খাবি? নিজে আস্তে করে জলের জাগ্ টা থেকে এক গেলাস  জল গড়িয়ে খায় ও টুম্পাইকে দেয় l  টুম্পাই জল খেয়ে বলে মাসি তুমি কি কিছু স্বপ্ন দেখলে না কি? অমন করছো কেন ?
    - কিছু হয়নি l তুই ঠিক আছিসতো? -আমি ঠিক থাকবোনা কেন?
    - ঘুমিয়ে পড় l
    ............................
    আজ টুম্পাইয়ের খুব আনন্দের দিন l ওর বাবা আসছে দুবাই থেকে l বাবাকে এয়ারপোর্ট থেকে মাসি আর টুম্পাই দুজনেই যায় l মাসি আজ ছুটি নিয়েছে জিজু আসবে বলে l টুম্পাই স্কুল যায়নি l টুম্পাইয়ের খুব আনন্দ তার বাবা আসছেন l অনেক কথা জমে আছে ছোট মেয়েটার মনে l মাকে ছোটবেলায় হারিয়ে ও সর্বদা  মনে কষ্ট পেত l .......
    চলবে:-
    ©ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জী✍️🙏🌹
    14.10.2020 সময় বেলা 1.47 

No comments:

Post a Comment