=নেতাজীর স্মৃতির খোঁজে=
-লেখক ডঃ সৈকত চক্রবর্তী
(প্রথম পর্ব)
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের মৃ্ত্যু আজও আমাদের কাছে রহস্যের মোড়কে আবৃত।
ছোটবেলা থেকেই জানতাম,নেতাজীর চিতাভস্ম রক্ষিত আছে "রেনকোজি"নামক
জাপানের এক বৌদ্ধমন্দিরে। অধিকাংশ দেশপ্রেমিক ভারতবাসীর মতো আমিও নেতাজীর একজন পরম ভক্ত। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদান আমরা
কোন দিনই ভুলতে পরবো না। গভীর দেশপ্রেম,অনমনীয় সংকল্প আর কঠোর
আত্মত্যাগের প্রতীক নেতাজী যেভাবে দেশের ভিতরে ও পরবর্তীকালে দেশের বাইরে
গিয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্ব দিয়ে বন্দিনী ভারতমাতার শৃংখলমোচনের জন্য
প্রবল প্রতাপশালী ইংরেজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন,সেই রোমহর্ষক কাহিনী
স্মরণ করলে আজও আমরা অবাক হয়ে যাই,পরম শ্রদ্ধায় আপনা থেকেই মাথা নুয়ে
আসে সেই মহানায়কের পায়ে।
নেতাজীর জীবনকাহিনী সব সময়েই আমাকে অনুপ্রাণিত করে,জীবনের পথে
চলার দিশা দেখায়। এই মহান বিপ্লবী দেশপ্রেমিককে আমাদের দেশ আজও তাঁর
প্রাপ্য মর্য্যাদা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। দেশকে স্বাধীন করার সংকল্প নিয়ে দেশের
বাইরে থেকে তিনি যে সংগ্রাম করে ইংগ্রেজদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়ে তাদের শক্তির ভিতে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন এবং অবশেষে তাদের এ দেশ থেকে পালাতে
বাধ্য করেছিলেন,তাঁর শৌর্যের সেই অবিস্মরণীয় কাহিনী পড়তে পড়তে শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে উঠে। নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সুখ-সুবিধার প্রতি চির-উদাসীন
নেতাজী কিন্তু তাঁর সংগ্রামী সহকর্মীদের সম্পর্কে সব সময়েই সচেতন থাকতেন, তাঁদের সুখ দুঃখের শরিক হয়ে সত্যিকারের অভিভাবকের আসন নিতেন। তাই তো
আজাদ হিন্দ বাহিনীর ৬০,০০০ সংগ্রামী ভারতবাসী এই বিপ্লবী নায়ককে তঁদের
হৃদয়ের সিংহাসনে বসিয়েছিলেন এবং তাঁরই সুযোগ্য নেতৃত্বে জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য
করে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। নেতাজীর উদাত্ত আহ্বান-
"তোমরা আমায় রক্ত দাও,আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো"অথবা "দিল্লী চলো,
চলো দিল্লী"বাহিনীর সবার রক্তে আগুন ধরিয়েছিল সেদিন,তাঁরা ও সম্মোহিত হয়েই
কদম কদম বাড়ায়ে গিয়েছিলেন,দেশকে মুক্ত করার কঠিন সংগ্রামে। শিবাজীর শৌর্য্য স্বামীজীর ত্যাগের মিশ্রনে তৈরী নেতাজীর কর্মবহুল জীবন নিয়ে ভাবতে
গেলে মনটা আজ কেমন উদাস হয়ে যায়। .........
=নেতাজীর স্মৃতির খোঁজে
-সৈকত চক্রবর্তী
পূর্ব প্রকাশিতের পর
-------------------
(২য় পর্ব)
--------
"......... কোনদিন আমি স্বপ্নেও ভাবিনি আমার জাপানে আসা হবে। জাপান সরকারের আমন্ত্রণে হঠাৎ জাপানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ যেদিন পেলাম সবকিছুর মাঝে জাপানে রেনকোজি মন্দির দর্শণ করার কথাই সর্বাগ্রে ভেবেছিলাম।
জাপানে এসে তাই নেতাজীর বিতর্কিত চিতাভস্ম রাখার যে স্থান,সেই রেনকোজি
মন্দির দর্শণ করার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। হঠাৎ করে একদিন টোকিও
যাওয়ার ডাক পেলাম,একটা সেমিনারে যোগ দেওয়ার জন্য-আমার পি এইচ ডির
গাইড প্রোফেসার কাজোও সাক্কার সঙ্গী হয়ে।
সেদিন ১২ই অক্টোবর,২০০৭ইং। আমার কর্মস্থান Tsu City থেকে
বেরিয়ে গেলাম সকাল ৮ টায়,চেপে বসলাম বুলেট ট্রেনে। ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার
বেগে চলে বুলেট আমাদের পৌঁছে দিল টোকিওতে,১ঘণ্টা ২০ মিনিটে-৩৮০ কিলোমিটার দূরত্বে। জাপানের সর্বোচ্চ গতিবেগসম্পন্ন বুলেট ট্রেনের কথা দেশে থাকতে অনেক শুনেছিলাম,এবার ঐ ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতায় কেমন যেন একটা
রোমাঞ্চ অনুভব করলাম। ঐ দিন সেমিনার সারার পর প্রোফেসারের অনুমতি নিয়ে
আমি থেকে গেলাম একটা হোটেলে,আমার স্বপ্নের রেনকোজি মন্দির পরিদর্শন
করবো বলে।
পরদিন,১৩ই অক্টোবর। সকালেই হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম সোজা
রেনকোজির উদ্দেশে। মন্দিরটি জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের পশ্চিমে অবস্থিত।
টোকিও ছবির মতো সুন্দর শহর,সাজানো গোছানো,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন-কিন্তু শহর
হিসাবে খুব একটা বড় নয়। তাই লক্ষ লোকের দৈনন্দিন যাতায়াতের সুবিধার জন্য তৈরী হয় টোকিও সেন্ট্রাল রেলষ্টেশন,যেখানে মাটির নীচে সমস্ত শহর জুড়ে বিভিন্ন
স্তরে মাকরসার জালের মতো ছড়িয়ে আছে সাব-ওয়ে লাইন। বিভিন্ন
সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার মেট্রো সার্ভিস বিভিন্ন স্তরের সাবওয়েতে তাদের মেট্রো রেল চালিয়ে যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের বন্দোবস্ত করে থাকে। সাব ওয়েতে
সরকারী সংস্থার রেলকে বলা হয় "টোকিও মেট্রো"। .........
-চ ল বে
------------------------------ ---------
=নেতাজীর স্মৃতির খোঁজে
-সৈকত চক্রবর্তী
পূর্ব প্রকাশিতের পর
-------------------
(২য় পর্ব)
--------
"......... কোনদিন আমি স্বপ্নেও ভাবিনি আমার জাপানে আসা হবে। জাপান সরকারের আমন্ত্রণে হঠাৎ জাপানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ যেদিন পেলাম সবকিছুর মাঝে জাপানে রেনকোজি মন্দির দর্শণ করার কথাই সর্বাগ্রে ভেবেছিলাম।
জাপানে এসে তাই নেতাজীর বিতর্কিত চিতাভস্ম রাখার যে স্থান,সেই রেনকোজি
মন্দির দর্শণ করার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। হঠাৎ করে একদিন টোকিও
যাওয়ার ডাক পেলাম,একটা সেমিনারে যোগ দেওয়ার জন্য-আমার পি এইচ ডির
গাইড প্রোফেসার কাজোও সাক্কার সঙ্গী হয়ে।
সেদিন ১২ই অক্টোবর,২০০৭ইং। আমার কর্মস্থান Tsu City থেকে
বেরিয়ে গেলাম সকাল ৮ টায়,চেপে বসলাম বুলেট ট্রেনে। ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার
বেগে চলে বুলেট আমাদের পৌঁছে দিল টোকিওতে,১ঘণ্টা ২০ মিনিটে-৩৮০ কিলোমিটার দূরত্বে। জাপানের সর্বোচ্চ গতিবেগসম্পন্ন বুলেট ট্রেনের কথা দেশে থাকতে অনেক শুনেছিলাম,এবার ঐ ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতায় কেমন যেন একটা
রোমাঞ্চ অনুভব করলাম। ঐ দিন সেমিনার সারার পর প্রোফেসারের অনুমতি নিয়ে
আমি থেকে গেলাম একটা হোটেলে,আমার স্বপ্নের রেনকোজি মন্দির পরিদর্শন
করবো বলে।
পরদিন,১৩ই অক্টোবর। সকালেই হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম সোজা
রেনকোজির উদ্দেশে। মন্দিরটি জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের পশ্চিমে অবস্থিত।
টোকিও ছবির মতো সুন্দর শহর,সাজানো গোছানো,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন-কিন্তু শহর
হিসাবে খুব একটা বড় নয়। তাই লক্ষ লোকের দৈনন্দিন যাতায়াতের সুবিধার জন্য তৈরী হয় টোকিও সেন্ট্রাল রেলষ্টেশন,যেখানে মাটির নীচে সমস্ত শহর জুড়ে বিভিন্ন
স্তরে মাকরসার জালের মতো ছড়িয়ে আছে সাব-ওয়ে লাইন। বিভিন্ন
সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার মেট্রো সার্ভিস বিভিন্ন স্তরের সাবওয়েতে তাদের মেট্রো রেল চালিয়ে যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের বন্দোবস্ত করে থাকে। সাব ওয়েতে
সরকারী সংস্থার রেলকে বলা হয় "টোকিও মেট্রো"। .........
-চ ল বে
------------------------------ ---------
-সৈকত চক্রবর্তী
পূর্ব প্রকাশিতের পর
-------------------
(২য় পর্ব)
--------
"......... কোনদিন আমি স্বপ্নেও ভাবিনি আমার জাপানে আসা হবে। জাপান সরকারের আমন্ত্রণে হঠাৎ জাপানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ যেদিন পেলাম সবকিছুর মাঝে জাপানে রেনকোজি মন্দির দর্শণ করার কথাই সর্বাগ্রে ভেবেছিলাম।
জাপানে এসে তাই নেতাজীর বিতর্কিত চিতাভস্ম রাখার যে স্থান,সেই রেনকোজি
মন্দির দর্শণ করার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। হঠাৎ করে একদিন টোকিও
যাওয়ার ডাক পেলাম,একটা সেমিনারে যোগ দেওয়ার জন্য-আমার পি এইচ ডির
গাইড প্রোফেসার কাজোও সাক্কার সঙ্গী হয়ে।
সেদিন ১২ই অক্টোবর,২০০৭ইং। আমার কর্মস্থান Tsu City থেকে
বেরিয়ে গেলাম সকাল ৮ টায়,চেপে বসলাম বুলেট ট্রেনে। ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার
বেগে চলে বুলেট আমাদের পৌঁছে দিল টোকিওতে,১ঘণ্টা ২০ মিনিটে-৩৮০ কিলোমিটার দূরত্বে। জাপানের সর্বোচ্চ গতিবেগসম্পন্ন বুলেট ট্রেনের কথা দেশে থাকতে অনেক শুনেছিলাম,এবার ঐ ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতায় কেমন যেন একটা
রোমাঞ্চ অনুভব করলাম। ঐ দিন সেমিনার সারার পর প্রোফেসারের অনুমতি নিয়ে
আমি থেকে গেলাম একটা হোটেলে,আমার স্বপ্নের রেনকোজি মন্দির পরিদর্শন
করবো বলে।
পরদিন,১৩ই অক্টোবর। সকালেই হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম সোজা
রেনকোজির উদ্দেশে। মন্দিরটি জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের পশ্চিমে অবস্থিত।
টোকিও ছবির মতো সুন্দর শহর,সাজানো গোছানো,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন-কিন্তু শহর
হিসাবে খুব একটা বড় নয়। তাই লক্ষ লোকের দৈনন্দিন যাতায়াতের সুবিধার জন্য তৈরী হয় টোকিও সেন্ট্রাল রেলষ্টেশন,যেখানে মাটির নীচে সমস্ত শহর জুড়ে বিভিন্ন
স্তরে মাকরসার জালের মতো ছড়িয়ে আছে সাব-ওয়ে লাইন। বিভিন্ন
সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার মেট্রো সার্ভিস বিভিন্ন স্তরের সাবওয়েতে তাদের মেট্রো রেল চালিয়ে যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের বন্দোবস্ত করে থাকে। সাব ওয়েতে
সরকারী সংস্থার রেলকে বলা হয় "টোকিও মেট্রো"। .........
-চ ল বে
------------------------------
=নেতাজীর স্মৃতির খোঁজে=
-সৈকত চক্রবর্তী
(তৃতীয় পর্ব)
পূর্ব প্রকাশিতের পর
---------
"..........ফিরে আসি পূর্বপ্রসঙ্গে,রেনকোজি যাত্রায়। টোকিও শহর ছেড়ে প্রথমে এলাম টোকিও সেন্ট্রাল ষ্টেশনে,দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।
সেখানে গিয়ে মাটির নীচে সাব-ওয়ে মেট্রো সার্ভিসে দেখলাম বিভিন্ন গন্তব্যে
চলা মেট্রো রেলের তালিকা। রেনকোজি যেতে হলে আমাকে উঠতে হবে
"টোকিও মেট্রো সার্ভিসে"। মেট্রো ট্রেনের নাম"টোকিও সেন্ট্রাল -সিনজুকু-
হিগাসি কোয়েনজি"। আমাকে যেতে হবে শেষ ষ্টেশন "হিগাসি কোয়েনজি"।
ট্রেন মিলিয়ে বসে পড়লাম,আর নামলাম এসে হিগাসি কোয়েনজি ষ্টেশনে।
সময় লাগলো ১৮ মিনিট। ষ্টেশন থেকে একটু এগিয়ে গেলেই একটা পার্ক,
আর সেই পার্কের পিছনেই মন্দিরে যখন পৌঁছলাম,তখন
বেলা প্রায় ১০ টা।
ছোট্ট এই বৌদ্ধমন্দিরটি জনবহুল শহরের মাঝে,জাপানীদের কাছে খুব একটা পরিচিত নয়। ১৫৯৪ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ধনসম্পত্তি ও সুখের প্রতীক এই
মন্দির সাধারণ জাপানী নাগরিকদের কাছে এতটা পরিচিত না হলেও অধিকাংশ
ভারতবাসী,বিশেষ করে প্রতিটি বাঙ্গালী এই নামের সঙ্গে খুব ভালোভাবেই
পরিচিত। বর্তমান প্রধান পুরোহিতের পিতা মোচিযুকি ছিলেন তৎকালীন মন্দিরের
প্রধান। ১৮ ই আগস্ট,১৯৪৫ ইং তাঁর অনুমতি নিয়েই মন্দিরে রাখা হয়েছিল
একপাত্র চিতাভস্ম আর কিছু সামগ্রী,যা বলা হয়ে থাকে নেতাজীর।
নেতাজী জাপানে"চন্দ্র বোস"নামে খুবই পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে
জাপান যখন পুরো সামরিক শক্তি নিয়ে ইংরেজদের ও আমেরিকানদের মোকাবিলায়
ব্যস্ত,তখন বিপ্লবী রাসবিহারী বোসের হাতে গড়া আজাদ হিন্দ ফৌজ ও তার নায়ক
নেতাজী সুভাষ জাপানীদের কাছে খুবই প্রিয়। সেই নেতা চন্দ্র বোসের স্মৃতিরক্ষার্থে
এবং অন্তেষ্ঠির কাজে সাহায্যের অর্থে তৎকালীন প্রধান পুরোহিত মোচিযুকি রাজী
হন এবং অনুমতি দেন চিতাভস্ম এবং তার সঙ্গে আরো কিছু সামগ্রী রেনকোজি
মন্দিরে রাখার। শোনা যায়,ব্যক্তিগতভাবে তাঁর জানা ছিল না এই চিতাভস্ম
আসলে কার।
এই সময় জাপানের পরিস্থিতিও অনেকটা বদলে যায়।পর পর দু'টি পরমাণু
বোমার আক্রমন,আমেরিকার কাছে জাপানের পরাজয়,আত্মসমর্পণ-অনেক কিছুই
ঘটে কয়েক মাসের মধ্যে। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও সুরক্ষিত রয়ে যায় রেনকোজি মন্দির এবং মন্দিরের একটা ছোট্ট কৌটায় রক্ষিত তথাকথিত নেতাজীর চিতাভস্ম
তৎসহ কিছু সামগ্রী।.........."
=নেতাজীর স্মৃতির খোঁজে=
-সৈকত চক্রবর্তী
(তৃতীয় পর্ব)
পূর্ব প্রকাশিতের পর
---------
"..........ফিরে আসি পূর্বপ্রসঙ্গে,রেনকোজি যাত্রায়। টোকিও শহর ছেড়ে প্রথমে এলাম টোকিও সেন্ট্রাল ষ্টেশনে,দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।
সেখানে গিয়ে মাটির নীচে সাব-ওয়ে মেট্রো সার্ভিসে দেখলাম বিভিন্ন গন্তব্যে
চলা মেট্রো রেলের তালিকা। রেনকোজি যেতে হলে আমাকে উঠতে হবে
"টোকিও মেট্রো সার্ভিসে"। মেট্রো ট্রেনের নাম"টোকিও সেন্ট্রাল -সিনজুকু-
হিগাসি কোয়েনজি"। আমাকে যেতে হবে শেষ ষ্টেশন "হিগাসি কোয়েনজি"।
ট্রেন মিলিয়ে বসে পড়লাম,আর নামলাম এসে হিগাসি কোয়েনজি ষ্টেশনে।
সময় লাগলো ১৮ মিনিট। ষ্টেশন থেকে একটু এগিয়ে গেলেই একটা পার্ক,
আর সেই পার্কের পিছনেই মন্দিরে যখন পৌঁছলাম,তখন
বেলা প্রায় ১০ টা।
ছোট্ট এই বৌদ্ধমন্দিরটি জনবহুল শহরের মাঝে,জাপানীদের কাছে খুব একটা পরিচিত নয়। ১৫৯৪ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ধনসম্পত্তি ও সুখের প্রতীক এই
মন্দির সাধারণ জাপানী নাগরিকদের কাছে এতটা পরিচিত না হলেও অধিকাংশ
ভারতবাসী,বিশেষ করে প্রতিটি বাঙ্গালী এই নামের সঙ্গে খুব ভালোভাবেই
পরিচিত। বর্তমান প্রধান পুরোহিতের পিতা মোচিযুকি ছিলেন তৎকালীন মন্দিরের
প্রধান। ১৮ ই আগস্ট,১৯৪৫ ইং তাঁর অনুমতি নিয়েই মন্দিরে রাখা হয়েছিল
একপাত্র চিতাভস্ম আর কিছু সামগ্রী,যা বলা হয়ে থাকে নেতাজীর।
নেতাজী জাপানে"চন্দ্র বোস"নামে খুবই পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে
জাপান যখন পুরো সামরিক শক্তি নিয়ে ইংরেজদের ও আমেরিকানদের মোকাবিলায়
ব্যস্ত,তখন বিপ্লবী রাসবিহারী বোসের হাতে গড়া আজাদ হিন্দ ফৌজ ও তার নায়ক
নেতাজী সুভাষ জাপানীদের কাছে খুবই প্রিয়। সেই নেতা চন্দ্র বোসের স্মৃতিরক্ষার্থে
এবং অন্তেষ্ঠির কাজে সাহায্যের অর্থে তৎকালীন প্রধান পুরোহিত মোচিযুকি রাজী
হন এবং অনুমতি দেন চিতাভস্ম এবং তার সঙ্গে আরো কিছু সামগ্রী রেনকোজি
মন্দিরে রাখার। শোনা যায়,ব্যক্তিগতভাবে তাঁর জানা ছিল না এই চিতাভস্ম
আসলে কার।
এই সময় জাপানের পরিস্থিতিও অনেকটা বদলে যায়।পর পর দু'টি পরমাণু
বোমার আক্রমন,আমেরিকার কাছে জাপানের পরাজয়,আত্মসমর্পণ-অনেক কিছুই
ঘটে কয়েক মাসের মধ্যে। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও সুরক্ষিত রয়ে যায় রেনকোজি মন্দির এবং মন্দিরের একটা ছোট্ট কৌটায় রক্ষিত তথাকথিত নেতাজীর চিতাভস্ম
তৎসহ কিছু সামগ্রী।.........."
-সৈকত চক্রবর্তী
(তৃতীয় পর্ব)
পূর্ব প্রকাশিতের পর
---------
"..........ফিরে আসি পূর্বপ্রসঙ্গে,রেনকোজি যাত্রায়। টোকিও শহর ছেড়ে প্রথমে এলাম টোকিও সেন্ট্রাল ষ্টেশনে,দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।
সেখানে গিয়ে মাটির নীচে সাব-ওয়ে মেট্রো সার্ভিসে দেখলাম বিভিন্ন গন্তব্যে
চলা মেট্রো রেলের তালিকা। রেনকোজি যেতে হলে আমাকে উঠতে হবে
"টোকিও মেট্রো সার্ভিসে"। মেট্রো ট্রেনের নাম"টোকিও সেন্ট্রাল -সিনজুকু-
হিগাসি কোয়েনজি"। আমাকে যেতে হবে শেষ ষ্টেশন "হিগাসি কোয়েনজি"।
ট্রেন মিলিয়ে বসে পড়লাম,আর নামলাম এসে হিগাসি কোয়েনজি ষ্টেশনে।
সময় লাগলো ১৮ মিনিট। ষ্টেশন থেকে একটু এগিয়ে গেলেই একটা পার্ক,
আর সেই পার্কের পিছনেই মন্দিরে যখন পৌঁছলাম,তখন
বেলা প্রায় ১০ টা।
ছোট্ট এই বৌদ্ধমন্দিরটি জনবহুল শহরের মাঝে,জাপানীদের কাছে খুব একটা পরিচিত নয়। ১৫৯৪ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত ধনসম্পত্তি ও সুখের প্রতীক এই
মন্দির সাধারণ জাপানী নাগরিকদের কাছে এতটা পরিচিত না হলেও অধিকাংশ
ভারতবাসী,বিশেষ করে প্রতিটি বাঙ্গালী এই নামের সঙ্গে খুব ভালোভাবেই
পরিচিত। বর্তমান প্রধান পুরোহিতের পিতা মোচিযুকি ছিলেন তৎকালীন মন্দিরের
প্রধান। ১৮ ই আগস্ট,১৯৪৫ ইং তাঁর অনুমতি নিয়েই মন্দিরে রাখা হয়েছিল
একপাত্র চিতাভস্ম আর কিছু সামগ্রী,যা বলা হয়ে থাকে নেতাজীর।
নেতাজী জাপানে"চন্দ্র বোস"নামে খুবই পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে
জাপান যখন পুরো সামরিক শক্তি নিয়ে ইংরেজদের ও আমেরিকানদের মোকাবিলায়
ব্যস্ত,তখন বিপ্লবী রাসবিহারী বোসের হাতে গড়া আজাদ হিন্দ ফৌজ ও তার নায়ক
নেতাজী সুভাষ জাপানীদের কাছে খুবই প্রিয়। সেই নেতা চন্দ্র বোসের স্মৃতিরক্ষার্থে
এবং অন্তেষ্ঠির কাজে সাহায্যের অর্থে তৎকালীন প্রধান পুরোহিত মোচিযুকি রাজী
হন এবং অনুমতি দেন চিতাভস্ম এবং তার সঙ্গে আরো কিছু সামগ্রী রেনকোজি
মন্দিরে রাখার। শোনা যায়,ব্যক্তিগতভাবে তাঁর জানা ছিল না এই চিতাভস্ম
আসলে কার।
এই সময় জাপানের পরিস্থিতিও অনেকটা বদলে যায়।পর পর দু'টি পরমাণু
বোমার আক্রমন,আমেরিকার কাছে জাপানের পরাজয়,আত্মসমর্পণ-অনেক কিছুই
ঘটে কয়েক মাসের মধ্যে। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও সুরক্ষিত রয়ে যায় রেনকোজি মন্দির এবং মন্দিরের একটা ছোট্ট কৌটায় রক্ষিত তথাকথিত নেতাজীর চিতাভস্ম
তৎসহ কিছু সামগ্রী।.........."