Wednesday, May 29, 2013

কেমন চোলছে পডাশুন কলকাতার কলেজে ঃ- বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়



আবে স্যার, আপনি নতুন এসেচেন না কলেজে, আমি তাই ভাবচি, মালটাকে আগে তো নজর করিনি, ঠিকাচে, বিন্দাস ক্লাস লিয়ে যান, আর কোনও ঝুট-ঝামেলা হলে জাস্ট মেসেজ পাস করে দিবেন, আমার তোতা-ময়নারা সব হাজির হয়ে যাবে, নো প্রবলেম। আমরা এমনিতে স্যার-ম্যাডামদের সঙ্গে কিচাইনে যাই না কিন্তু মাঝেসাঝে এমন বাওয়াল হয় যে... আমি জানি আপনি কী বলবেন, বাট পহেলে আপুন কা বাত শুনে লিন, ওই কালি করে ম্যাডামটা বহুত বদতমিজ আছে। আমার ছেলেগুলো হলে ঢুকেছে, সঙ্গে-সঙ্গে ওদের বলে কি না, 'হাউ ডেয়ার ইউ'? আরে এক্সাম-ফেক্সাম তো পরের কথা আছে, আগের কথা হল গিয়ে আমাদের রাইট। যেখানে সেখানে যখন-তখন ঢুকে পড়ার রাইট, মৌজ-মস্তি করার রাইট, স্টুডেন্টদের সমস্ত ব্যাপার লিয়ে হাঙ্গামা করবার রাইট। এইবার এই রাইটে যদি কেউ দখলান্দাজি করতে আসে তো তাকে ছেড়ে কথা বলব না সে কিন্তু আগে থেকে বলে দিচ্ছি। আরে প্রিন্সিপাল ভি আমাদের দেখলে প্যান্টের চেন লাগাতে ভুলে যায় সময়-সময় আর তুই সালি, মুখে মুখে বাত করছিস? সরি ফর দা ল্যাংগুয়েজ, ডোন্ট মাইন্ড, আমাদের দিল পুরা সাফ আছে, দিমাগ ভি... আরে না না আপনি ডরাচ্ছেন কেন, ওই ম্যাডামটা হল থেকে বেরিয়ে যেতে বলল বলে, ছেলেগুলো বারস্ট করল! হাঁ, আমি মেনে লিচ্ছি কি ওই ম্যাডামকে, ‘তোর সারি খুলে নিয়ে নাঙ্গা করে যখন রাস্তায় ঘুরাব তখন বুঝবি’ বলাটা উচিত হয়নি কিন্তু আপ ভি সোচিয়ে আমাদের যদি পরীক্ষার সময় হল থেকে বেরিয়ে যেতে বলে, তাহলে আমাদের ইজ্জত কোথায় থাকে?
এই কলেজে ছেলে-মেয়েরা আমাদের মানে কেন? আপনি বোলেন, কেন মানে? মানে এই জন্য যে আমরা এটেনডান্স কম হওয়ার জন্য কাউকে কভি ভি সাফার করতে দিইনি। আরে একটা ছেলে ইয়া মেয়ে ফাইভ ডেজ এসেছে না ফিফটি তাই নিয়ে অফিসের কী মাথাব্যথা? তোরা বলবি কত মাল্লু ছাড়তে হবে, আমরা দিয়ে দেব। এলাও এভরিওয়ান টু এপিয়ার। এক্সাম-এর সময় ঠিক তেমনি। ছেলে-মেয়েরা যাবে, খাতায় লিডারের নাম লিখবে, তারপর আধাঘণ্টা কি চালিস মিনিট বাতচিত করে হল থেকে বেরিয়ে আসবে। এখন তো এটাই চলছে। আবে, ইউপিতে যদি চলে, এমপিতে যদি চলে, বিহার, ঝাড়খন্ডে যদি চলে, ওয়েস্ট বাঙ্গাল কৌন সা জন্নত যে এখানে চলবে না? চলতেই হবে। স্টুডেন্টরা লিডারের নাম লিখবে খাতায় আর লিডারের নাম দেখে সালে মাস্টারলোগোঁকো পাস করিয়ে দিতে হবে। টেস্ট, কলেজে এইভাবেই হবে। ফাইনালে কী হবে সে লিয়ে আপনার ভাবার দরকার নাই, আমারও না। কলেজে রাজ চললেই হল। তো এবার যে লিডারের নাম যত জাদা স্টুডেন্ট লিখবে তার তত পাওয়ার, বুঝতে পারছেন তো?
আমার ছেলেরা তাই প্রত্যেকটা ঘরে গিয়ে বলছিল, যাতে আমার নামটাই সবাই লেখে। ইস মে গলতি ক্যা? তো ওই ম্যাডামকে সে কথা কে সমঝাবে? খালি বলে যে এক্সাম টাইমে উইদাউট পারমিসান, নট এলাওড। সালা, ইচ্ছা হলে পরে আমরা কেওড়াতলার ওই ইলেকট্রিক চুল্লি থামিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখে আসতে পারি, মড়া ঠিকঠাক পুড়ছে কি পুড়ছে না, আর আমাদের বলে কি না ... সো ছোড়িয়ে। আমি সুনলাম ওই ম্যাডাম নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছে, কলেজে আসছে না, কিন্তু কিঁউ? ওর গায়ে তো হাত দেয়নি কেউ, সিরফ বুঝিয়ে বলেছে। হাঁ এবার যদি মিডিয়া-ফিডিয়ায় যায় তো আমি কোনও গ্যারান্টি দিতে পারব না। তখন বিচ সড়ক পর যা খুসি হয়ে যেতে পারে, ইয়াং ছেলেদের মাথা সবসময় কীরকম গরম থাকে, জানেন তো?
আর হাঁ, আপনি সুনলাম ওই তিনটে মেয়েকে ক্লাস না করার জন্য বকেছেন, অ্যায়সা মত কিজিয়ে। ওরা আমাদের কলেজের ক্যারাম কমপিটিশনের চিয়ার-লিডার। আরে চিয়ার-লিডার বুঝেন না, বুরবক কাহিঁকা! আইপিএল-এ যেরকম গেল ছক্কা মারলে বিকিনি পরা মেয়েগুলো নেচে ওঠে, কলেজেও তেমনি কেউ রেড ফেললে কিম্বা নিল-এ গেম দিলে আমরা নাচবার জন্য মেয়ে রেখেছি। লেকিন ওদের বিকিনি-ফিকিনি পরাই না, আফটার অল কলেজের একটা রুলস, একটা ট্র্যাডিশন অউর ডিসিপ্লিন তো আছে, উও হরবখত আমাদের মাথায় থাকে... এই যে হর সাল আমরা জাস্ট অল্প একটু কমিশন নিয়ে পঞ্চাশজনের অনার্স ক্লাসে দেড়শোজনকে ভরতি করিয়ে দিই তাই নিয়ে কোনও ঝঞ্ঝাট হয়, বোলেন? হবে কী করে? ভরতি করানোর পর একশো বিশজনকে আমরাই বলে দিই ক্লাস না করতে। মানে কী বুঝলেন, বুফেতে ঢোকাই কিন্তু খানা খেতে দিই না। সো ক্যাটারার ফেল করার কোনও চান্স নেই। আপনি ওই তিরিশজনকে রাতদিন পড়িয়ে যান, লেকিন এটেন্ডান্স সবার, এটা মনে রাখবেন।
আর হাঁ ছেলেগুলো আসে-যায়, কলেজের সামনের ফুটপাতে বসে থাকে, লড়কি পটাবার তাল করে কিন্তু সে তো একরকম ভাল বোলেন? ক্লাসেও ঢুকবে না, বাড়িতেও থাকবে না, নোকরি-ওকরি পাবে না ফিউচারে, তো ওরা করবে কী? তাই ওদের আমার সঙ্গে নিয়ে নিয়েছি। হামি আপনার কলেজের স্টুডেন্ট ইউনিয়ান লিডার স্যার, আমাকে ভাল করে দেখুন। আর একবার ভাবুন, আমি কলেজটা চালাই বলে এই এতগুলো লফঙ্গা এডুকেশন-এর চারপাশে মাছির মতো ঘুরঘুর করছে। আমি ওদের এখানে না নিয়ে এলে ওরা তো চুল্লুর ঠেকে নয়তো সোনাগাছিতে পড়ে থাকত। শুধু আমার জন্যই, এই এতগুলো ছেলেকে আপনি কলেজ ক্যাম্পাসে দেখে লিচ্ছেন। হামি, আপনাদের ওই বিদ্যাসাগরের থেকে কোথায় কমতি আছি, আমাকে বলবেন?  


No comments:

Post a Comment