উত্সবের
শহর কলকাতা আরও সুন্দরী হয়ে ওঠে শারোদোত্সবে...।
১৯৫৭-৫৮ সাল।
আজ থেকে বহু বছর আগের কথা .
তখন কলকাতা বলতে টালা থেকে টালিগঞ্জ বোঝাত . আমরা তখন বেলঘরিয়া তে থাকতাম
ভাড়া ঘরে. ১৯৫৭-৫৮ সালের কথা.তখন
স্টিম ইঞ্জিন চলত. পুজোর জামা বলতে স্কুল ড্রেস. তাই পেয়েই খুশি .ষষ্ঠী র দিন
মা কপালে চন্দনের টিপ দিয়ে
আশির্বাদ করতেন দীর্ঘজীবি হও. সপ্তমী থেকে পাড়ার পুজো দেখে আর ভোগ খেয়ে প্রতিমা
দর্শন.
তারপর পায়ে হেঁটে বেলঘরিয়া, মোহিনী
মিল,পুকপাড়া,নিমতা
র পুজো.
পরে র দিন অর্থাৎ অষ্টমীর
দিন হাঁট তে হাঁট তে রথ তলা সিঁথি
ঘুরে পায়ের ব্যথা নিয়ে কখন
অঘোরে ঘুমিয়ে পড়তাম.মা হয়ত পুজো র খরচের জন্য ১ আনা দিতেন তাতে রাস্তায় হয় চানাচুর
নয় ঝুডিভাজা কিনে খেয়ে মহা আনন্দে ঘরে ফিরতাম। কত অল্পে আমরা সন্তুস্টো ছিলাম? এত আলোর রোস্নাই ছিল না কিম্বা প্যান্ডেলের
জাঁক জমক ছিল না। সাবেকি পুজো । বিরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র র মহিশমর্দিনি র রেকর্ড
বাজতো।সবাই বিভোর হয়ে শুনতো। আমার
সঙ্গে একটা বেলুন. মাইকে এ
শ্যামল মিত্রর গান ,"আমার স্বপ্নে দেখা রাজ কন্যা.." সেই
গানের কলি র অর্থ বুঝতামনা তাও গাইতাম.
আবার কখনো মিন্টু দাস গুপ্তর
প্যারডি,"আমি
তো পকেট কাটিনি কেন মোরে দাও শুধু প্যাঁদানি". লতা মঙ্গেশকর এর," না যেও না এখনো রজনী
বাকি বলে রাত জাগা পাখি " সলিল চৌধুরী র সাড়া জাগানো গান. কি বাচ্চা কি বুডো সকলের মুখে ওই এক গান.সুপার হিট.
গান শুনলেই
মন ভরে যেত . দূর্গা প্রতিমা দর্শন . কুমোরটুলির ঠাকুর ,,বাগবাজার
সার্বজনীন পূজা,শোভা
বাজার এর ঠাকুর,আহিডিতলা ,
পরে ফিরে দেশবন্ধু পার্ক ,শ্যাম
বাজার এর পুজো।
নবমির পুজো র সময় ঢ়াকের
বাদ্যির তালে ধুনুচির নাচ । ছাগ বলি প্রথা তখন হোত কথাউ কথাউ। নবমির দিন পাডার
পুজো বেশি উপভোগ্য ছিল।বন্ধু
দের সঙ্গে হোই হুল্লোড । নাগর দোলনায় চডা । ফুচকা খাওয়া । খুব হৈ চৈ ।
দশমি যেন দেবির বিদায়ের সঙ্গে
পুজো শেষ ।মহিলাদের পুজো প্যান্ডেলে সিঁদুর খেলা। তারপর প্রতিমা বিসর্জন । বিজয়ার প্রনাম সারতে সারতে ব্যাস্ ফুরলো
পুজো। (২৯০ শব্দ)
ত্রিভুবনজিৎ মুখার্জ্জী, ৭৭
রামকান্ত বোস স্ট্রিট
বাগবাজার , কলকাতা ৭০০ ০০৩
No comments:
Post a Comment